দিল্লির চলন্ত বাসে ধর্ষকদের ফাঁসি বহাল

ভারতে চলন্ত বাসে মেডিক্যাল শিক্ষার্থী ‘নির্ভয়া’কে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত চার আসামির সাজা বহাল রেখেছে দেশটির সর্বোচ্চ আদালত। দিল্লি হাইকোর্টের মৃত্যুদণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে দোষীরা সুপ্রিমকোর্টে আর্জি জানিয়েছিল। শুক্রবার তা খারিজ করে সুপ্রিমকোর্ট হাইকোর্টের সাজা বহাল রাখে।

শুক্রবার (৫ মে) রায় ঘোষণার আগে সকাল থেকেই চলছিল জল্পনা। শেষপর্যন্ত নির্ভয়ার হত্যাকারীদের ফাঁসির সাজা বহাল থাকে কিনা তার দিকে তাকিয়ে ছিল সারা ভারত। রায়ের আগের প্রতিক্রিয়ায় নির্ভয়ার বাবা-মা বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমকে জানান, দোষীদের চরম সাজাই চান তারা। শেষ পর্যন্ত, হাইকোর্টের সাজা বহাল রাখেন বিচারপতি। অর্থাৎ মুকেশ সিং, পবন গুপ্ত, বিনয় শর্মা ও অক্ষয় ঠাকুর-এই চার আসামির ফাঁসিই হচ্ছে।

রায় ঘোষণা করতে গিয়ে আদালত জানান, ‘ধর্ষণের পর নির্ভয়াকে হত্যার ঘটনায় দায়ের করা এই মামলাটি সবথেকে নজিরবিহীন ঘটনাগুলোর একটি, যেখানে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে সর্বোচ্চ সাজার দণ্ড দিতে সমর্থ হয়েছি আমরা’।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানায়, আদালতের রায় শোনার পর উপস্থিত লোকজন হাত তালি দিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন। রায়ের পর নীরবে কেঁদে ওঠেন নির্ভয়ার মা।

রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে নির্ভয়ার বাবা বদরি সিং বলেন, ‘যদিও বিচার পেতে সময় লেগেছে, কিন্তু তারপরও ন্যায়বিচার পাওয়া গেছে; এখন আর আমাদের কোনও অভিযোগ নেই। এটি আমার পরিবারের জয়। এই বিচারে আমি খুশি।’

নির্ভয়ার মায়ের কণ্ঠেও একই আবেগ প্রতিধ্বনিত হয়। তিনি বলেন, ‘আমার মেয়ে ন্যায়বিচার পেয়েছে। বিচারবিভাগকে আমি ধন্যবাদ জানাই।’

২০১২ সালের ১৬ই ডিসেম্বর চলন্ত বাসে ধর্ষণের শিকার হন ওই মেডিকেল শিক্ষার্থী। মিডিয়া তাকে ‘নির্ভয়া’ নামে ডাকতে শুরু করে। ঘটনার ১৩ দিন পর সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে মারা যান তিনি। এ ঘটনার পর দেশ জুড়ে বিক্ষোভ-আন্দোলন-প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। মেয়ের মৃত্যুর তিন বছর পর সমস্ত কুন্ঠা ত্যাগ করে নির্ভয়ার আসল নাম জ্যোতি সিং বলে জানান মা আশা। রাম সিং নামে এই মামলার পঞ্চম অভিযুক্ত তিহার জেলে রহস্যজনকভাবে মারা যায়। এই মামলার ষষ্ঠ অভিযুক্ত যে অপরাধের সময় নাবালক ছিল, তাকে জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ড তিন বছরের জন্য সংশোধনাগারে পাঠায়। তবে ২০১৫-র নভেম্বরে সে ছাড়া পায়।



মন্তব্য চালু নেই