আশপাশেই বাস করছে জঙ্গি?

সাধারণ বেশে হয়তো আশপাশেই বাস করছে ভয়ানক জঙ্গি, সপরিবারে বা জোট বেধে; নাশকতার পরিকল্পনা করছে। জঙ্গি অবস্থান বোঝার জন্য কিছু বিষয়ের প্রতি দৃষ্টি দেয়ার অনুরোধ জানিয়েছে পুলিশ।

ডিএমপি পুলিশের উপ কমিশনার মো. মাসুদুর রহমান রোববার বিকেলে বলেন, ‘জঙ্গিদের কিছু সাধারণ বৈশিষ্ট্য আছে। ভালো করে খেয়াল করলে যা বোঝা যাবে। এগুলো খেয়াল করার কারণে জঙ্গিরা ধরাও পড়ছে। বিষয়গুলো খেয়াল করার জন্য পুলিশ কিছু সুপারিশ করেছে এবং এ ব্যাপারে সাধারণ জনগণকে সচেতন থাকার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।’

যে ভাবে সাধারণত জঙ্গিদের চিনতে হবে :
জঙ্গিদের বয়স ১৫ থেকে ৩৫-এর মধ্যে হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। চেহারায় ও চোখে নির্লিপ্তভাব দেখা যায়। সাধারণত পোশাক থাকে টি-শার্ট ও জিন্স। সুনির্দিষ্ট পেশা থাকে না, যে পেশা উল্লেখ করে তা সাধারণত সঠিক থাকে না। এ জন্য বাসা ভাড়া দেয়ার আগে অবশ্যই পেশা সম্পর্কে নিশ্চিত হতে হবে। এরা ঘন ঘন বাসা পাল্টায় (২-৬ মাস)। আগের বাসায় কতদিন ছিল তা নিশ্চিত হতে হবে, জাতীয় পরিচয়পত্রের ছবি ও বাস্তবের ছবির মধ্যে মিল নাও থাকতে পারে। অনেক সময় জাল জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার করে বাসা ভাড়া নেয়। বাসা ভাড়া দেয়ার সময় জাতীয় পরিচয়পত্রের ছবি ও যে ব্যক্তি ভাড়া নিচ্ছে তার ছবি মিলিয়ে দেখতে হবে।

সন্দেহ হলে থানার সাহায্য নেয়া যেতে পারে। এ ধরণের ব্যক্তিরা বাসা ভাড়া নেয়ার সময় মোবাইল ফোন নম্বর দিতে অনিচ্ছুক থাকে। বাড়ির মালিক অবশ্যই ভাড়া দেয়ার সময় নিজের ফোন নম্বর থেকে ভাড়াটিয়ার ফোন নম্বরে ফোন করে মোবাইল ফোন নম্বর সম্পর্কে নিশ্চিত হবেন। জঙ্গিদের বাসায় খাট, আলমারি, সোফা, ডাইনিং টেবিল- এ ধরণের বড় আসবাবপত্র থাকার সম্ভাবনা কম। সাধারণত তোষক, জাজিম ও চাদর ব্যবহার করে, বড় টিভি কিংবা ডেস্কটপ কম্পিউটার থাকে না। ল্যাপটপ বা ট্যাব থাকে।

বাসার একতলা কিংবা উপরের দিকের ফ্লোরে অবস্থান করার প্রবণতা বেশি থাকে। কম ঘনবসতিপূর্ণ স্থানে সাধারণত বিল্ডিং-এর টপ ফ্লোরে থাকার চেষ্টা করে, যাতে তাদের কার্যক্রম বিল্ডিং-এর অন্য বাসিন্দাদের নজরে না পড়ে। বাসা বা ফ্ল্যাটের দরজা জানালা অধিকাংশ সময় বন্ধ থাকে বা এতে পর্দা দেয়া থাকে। জঙ্গিরা মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়ে না, প্রতিবেশীদের সঙ্গে মেলামেশা করে না বললেই চলে। কথাবার্তা খুব কম বলে। নিজেদের মধ্যে কথা বললেও নিচু স্বরে বলে।

এদের চেহারায় বন্ধুসুলভ মনোভাব বা আলাপচারিতার কোন লক্ষণই দেখা যায় না। জনসমাগম স্থল এড়িয়ে চলে, বাসায় নারী থাকলে তারা বাইরে আসে কম। আশপাশের বাসার মহিলাদের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক রাখার প্রবণতা পরিলক্ষিত হয় না। বাসায় গৃহকর্মী রাখতে দেখা যায় না। ভেজা কাপড় বাসার ভেতরেই শুকানোর প্রবণতা রয়েছে, সন্তানরা স্কুলে যায় না। সাধারণত বাসায় অবস্থান করে।

জঙ্গিরা স্থানীয় বা পাড়ার দোকান থেকে প্রয়োজনীয় কোন দ্রব্য কেনাকাটা করে না। কারণ, স্থানীয় দোকানদার মোটামুটি এলাকার প্রায় সব বাসিন্দা সম্পর্কে ধারণা রাখে। তাই দোকানদারদের এ সুযোগটি দিতে চায় না জঙ্গিরা। গোপনে ওই বাসায় সন্দেহজনক কিশোর, যুবক কিংবা মধ্যবয়সী পুরুষেরা যাতায়াত করে। পুরুষ জঙ্গিদের কাঁধে ঝোলা ব্যাগ ব্যবহারের প্রবণতা দেখা যায়।



মন্তব্য চালু নেই