মা যাচ্ছেন কবরে, শিশুটি যাবে কোথায়?

অসুস্থ মায়ের সঙ্গে হাসপাতালে এসেছিল তিন বছরের শিশুকন্যা মাইশা। হাসপাতালে আসার তিন ঘণ্টার মধ্যেই মা মারা যান। অভিভাবকহীন শিশুটি এখন কোথায় যাবে, সেটি জানে না কেউ।

দুজন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি গতকাল শনিবার সন্ধ্যা ছয়টার দিকে শিশুটির মাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এনে ভর্তি করেন। তখন মায়ের সঙ্গে ওই শিশুটি ছাড়া কেউ ছিল না। তাঁকে হাসপাতালের মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ডের ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। সেখানে রাত নয়টার দিকে মারা যান তিনি।

হাসপাতাল সূত্র জানায়, হাসপাতালের খাতায় শিশুটির মায়ের নাম সখিনা বেগম, বয়স ৩০, স্বামী এস এম সোহাগ, বন্দর থানা, জেলা নারায়ণগঞ্জ লিপিবদ্ধ করা রয়েছে। তবে কোনো ফোন নম্বর না থাকায় জানার উপায় নেই ওই ঠিকানা ঠিক কি না।

শিশু মাইশা এখন হাসপাতালের মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ডে কর্মরত জ্যেষ্ঠ স্টাফ নার্স সাজেদা বেগমের কাছে আছে। সাজেদা জানান, মাইশার মা এক মাস আগে এ হাসপাতালের সিসিইউ ইউনিটে চিকিৎসাধীন ছিলেন। তখন ওই মা জানিয়েছিলেন, তিনি স্বামী-স্বজন ছাড়া শুধু শিশুটিকে নিয়ে থাকেন। ফরিদপুর শহরের বিভিন্ন বাড়িতে কাজ করেন তিনি।

হাসপাতালের ওয়ার্ডমাস্টার সাখাওয়াত মোস্তফা জানান, ‘ওই রোগীর সঙ্গে কোনো পরিচর্যাকারী আসেননি। যে ঠিকানা দেওয়া হয়েছে, তা-ও দ্রুত যাচাই করে দেখা যাচ্ছে না। এই মা-হারা শিশুটি কোথায় যাবে, তা আমরা বুঝে উঠতে পারছি না।’

ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক আবুল কালাম আজাদ বলেন, শিশুটির মা হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন। তাঁর শরীরের ডান পাশ অবশ হয়ে গিয়েছিল। তিনি বলেন, ‘শিশুটির বিষয়ে আমি জেলা সমাজসেবা কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলেছি। কিন্তু ফরিদপুরে ১২ বছরের কম বয়সী শিশুদের রাখার কোনো সুযোগ নেই। আপাতত শিশুটিকে নার্স সাজেদা বেগমের কাছে রাখা হয়েছে।’

ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নাজিম উদ্দিন জানান, ওই নারীর লাশ এখন পুলিশের তত্ত্বাবধানে রয়েছে। তাঁর ঠিকানা জানার চেষ্টা চলছে। না পেলে কাল সোমবার আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলামের মাধ্যমে মরদেহ দাফন করা হবে।



মন্তব্য চালু নেই