হাওরে মাছের মড়কে তিন কারণ শনাক্ত
উজান থেকে নেমে আসা পানিতে ডুবে যাওয়া হাওর অঞ্চলে মাছের মড়কের জন্য প্রাথমিকভাবে তিনটি কারণ শনাক্ত করেছে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা অধিদপ্তর। এর মধ্যে রয়েছে পানিতে অক্সিজেন কমে যাওয়া, অ্যামোনিয়া গ্যাস বেড়ে যাওয়া ও অ্যাসিডিটির প্রভাব।
শুক্রবার বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা অধিদপ্তরের একটি প্রতিনিধিদল সুনামগঞ্জের বিভিন্ন হাওরের পানি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে এসব কারণ চিহ্নিত করেন।
অকাল বন্যায় গত কয়েক দিনে দেড় লাখ হেক্টর কৃষিজমির ধান নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি ২৫ মেট্রিক টনের বেশি মাছ মারা গেছে। প্রতিদিনই মরে ভেসে উঠছে মাছ। ইতিমধ্যে প্রায় ৬০ লাখ টাকার মাছ মারা গেছে বলে মনে করছেন এ খাতের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
হাওরে মাছের মড়কের কারণ খুঁজে বের করতে মৎস্য অধিদপ্তরের তিন সদস্যের গবেষকদল শুক্রবার পানি পরীক্ষা করতে আসেন। তারা সুনামগঞ্জের খরচার হাওর, দেখার হাওর, মাটিয়ান হাওরসহ ছোটখাটো হাওরের বিভিন্ন জায়গা থেকে পানির নমুনা নিয়ে পরীক্ষা করেন। তাতে অক্সিজেনের উপস্থিতি কম দেখতে পান তারা। সেই সঙ্গে অ্যামোনিয়া গ্যাস বেড়ে যাওয়া ও অ্যাসিডিটির প্রভাবে মাছ ও জলজ প্রাণীর মৃত্যু হচ্ছে বলে তাদের ধারণা। তবে, ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষার পর প্রকৃত কারণ জানা যাবে বলে জানান গবেষকদল।
পরীক্ষার পর প্রাথমিকভাবে গবেষকরা জানান, হাওরের পানিতে ধানের পচনে অক্সিজেনের পরিমাণ কমে গেছে। যেখানে থাকার কথা ৪ থেকে ৫ পয়েন্ট অক্সিজেন, সেখানে আছে মাত্র ৩.৫ পয়েন্ট। এর প্রতিকার কীভাবে করা যাবে তা আরো গবেষণার পর বলা যাবে বলে জানান তারা।
বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা অধিদপ্তরের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মাসুদ হোসেন খান বলেন, পানিতে অক্সিজেনের ব্যাপক ঘাটতি আছে। মাছের শ্বাসকষ্ট হতে পারে এটা থেকে। ফলে মাছ মারা যাচ্ছে। এ ছাড়া পানিতে অ্যামোনিয়া গ্যাসের আধিক্য পাওয়া গেছে। এটাও মাছের মৃত্যুর একটা কারণ হতে পারে।
গবেষকদলের পরীক্ষায় পানিতে অ্যামোনিয়া গ্যাস শনাক্তের সঙ্গে সঙ্গে অ্যাসিডিটির উপস্থিতিও লক্ষ করা গেছে, যা মাছের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক।
যে তিন কারণের কথা বলেছে গবেষকদল সেটিই চূড়ান্ত নয়। আরো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেব তারা। মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা বলেন বলেন, ‘মাছের নমুনা ও পানি আমরা ল্যাবরেটরিতে নিয়ে যাচ্ছি। আরো বিষদভাবে পরীক্ষা করে দেখব। তখন আমরা চূড়ান্তভাবে বলতে পারব মাছ মরার সঠিক কারণটা কী।’
গবেষক প্রতিনিধিদলের অন্য দুই সদস্য হলেন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. ইশতিয়াক হায়দার রাসেল ও বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. আশিকুর রহমান।
মন্তব্য চালু নেই