প্যারিস মেয়রের প্রস্তাব পেলেন ড. ইউনূস

শান্তিতে নোবেলজয়ী প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে দেওয়া এক প্রস্তাবে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসকে সামাজিক ব্যবসার বৈশ্বিক রাজধানী হিসেবে গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন শহরটির মেয়র অ্যান হিদালগো।

মেয়রের আমন্ত্রণে (৩০ মার্চ) প্যারিসের টাউনহলে অনুষ্ঠিত ‘ইমপ্যাক্ট ২’ সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগদান করেন এবং একই সঙ্গে এ বছরের ‘ইমপ্যাক্ট ২ উইমেন অ্যান্টারপ্রেনার অ্যাওয়ার্ড’ অনুষ্ঠানে পুরস্কার বিতরণ করতে প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসকে আমন্ত্রণ জানান। রাজধানীর ইউনূস সেন্টার গতকাল এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়।

সম্মেলনে উদ্বোধনী বক্তব্যে মেয়র হিদালগো প্রফেসর ইউনূসকে সামাজিক ব্যবসার বৈশ্বিক রাজধানী হিসেবে গড়ে তুলতে প্যারিস নগরীর আগ্রহের কথা তুলে ধরেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত প্রায় এক হাজার অভ্যাগতের কাছে তিনি সামাজিক ব্যবসার ধারণাকে ২০২৪ সালের গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিক গেমস অনুষ্ঠানে প্যারিসের প্রতিযোগিতার কেন্দ্রবিন্দু করার বিষয়টিও ব্যাখ্যা করেন।

প্রফেসর ইউনূস তার বক্তব্যে বিশ্বজুড়ে চলমান যাবতীয় নেতিবাচক কর্মকাণ্ডের প্রতি সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন এবং বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক চ্যালেঞ্জের মুখেও সব প্রতিকূলতা অতিক্রম করে নতুন আশার সঞ্চার করার লক্ষ্যে মানুষের অদম্য শক্তিকে পুনঃ প্রজ্বলিত করতে প্যারিসের আকাঙ্ক্ষাকে সাধুবাদ জানান।

অনুষ্ঠানে প্রফেসর ইউনূস বছরের শ্রেষ্ঠ নারী উদ্যোক্তা পুরস্কার বিতরণ করেন। দক্ষিণ আফ্রিকা, বাংলাদেশ, চিলি, লেবানন, মরক্কো, ফ্রান্স, ইতালি, হংকং ও বেলজিয়াম— এই নয়টি দেশ থেকে চূড়ান্তভাবে বাছাইকৃত নয়জন নারী উদ্যোক্তার মধ্য থেকে শ্রেষ্ঠ উদ্যোক্তার হাতে পুরস্কার তুলে দেন প্রফেসর ইউনূস। দক্ষিণ আফ্রিকার উমগিবে প্রকল্পটি চূড়ান্ত বিচারে বিজয়ী হয়।

এ প্রকল্পের উদ্যোক্তা ডারবান শহরের দরিদ্র অধ্যুষিত এলাকার অধিবাসী ননলানলা জোয়ে ছিলেন একজন ক্যান্সার রোগী। যিনি তার অসুস্থতার সময়ে নিজের জন্য স্বাস্থ্যসম্মত খাবার জোগাড় করতে অরগ্যানিক সবজির চাষ শুরু করেন। এই ছোট প্রকল্পটি ক্রমান্বয়ে বড় হতে থাকে এবং একসময় কয়েকশ নারীকে সংগঠিত করে ৩৮টি সমবায় সমিতিতে পরিণত হয়।

বাংলাদেশের উদ্যোক্তা আবিদা সুলতানা বাংলাদেশ থেকে আসা চূড়ান্তভাবে বাছাইকৃত নয়জন নারী উদ্যোক্তার একজন। আবিদা চট্টগ্রামে একটি সামাজিক ব্যবসা ক্যাটারিং সার্ভিস চালান, যা মাত্র ৩৫ টাকায় একবেলার স্বাস্থ্যসম্মত খাবার সরবরাহ করে। প্রতিযোগিতায় আবিদার প্রকল্পটি দ্বিতীয় শ্রেষ্ঠ হিসেবে বিবেচিত হয়। প্রকল্পটি এখন প্রতিদিন ৫০০ মানুষকে খাবার সরবরাহ করছে।



মন্তব্য চালু নেই