বিস্ফোরকের প্রশিক্ষণ জঙ্গিরা কিভাবে পায়?
সিলেটের আতিয়া মহল ঘিরে অভিযান আজ চতুর্থদিনে পদার্পন করল। কিন্তু এখনো অভিযান চলছে বলে জানিয়েছে সেনাবাহিনী। রবিবার আইএসপিআরএর পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্ণেল রাশিদুল হাসান বলছিলেন, এখনও বাইরে থেকে বাড়িটি ঘিরে রেখে অভিযান চালানো হচ্ছে। কারণ ভবনের বিভিন্ন জায়গায় এক্সপ্লোসিভ পেতে রাখা হয়েছে। রবিবার সেনাবাহিনীর বিফ্রিং এ বলা হয়েছে, জঙ্গিরা হাইলি ট্রেইন্ড, বিশেষ করে বোমা বা গ্রেনেড বিষয়ে। এমনকি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের লক্ষ্য করে ছুড়ে মারা গ্রেনেড তারা পাল্টা ছুড়ে মারে বলে ব্রিফিং এ জানান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ফখরুল আহসান।বিবিসি বাংলার প্রতিবেদন
এর আগে শনিবার সিলেটে যে বোমা বিস্ফোরণে পুলিশের দুজন কর্মকর্তাসহ ছয়জন নিহত হয়েছেন, সেটিও আগে থেকে পেতে রাখা ছিল বলে বিবিসিকে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। কিন্তু অস্ত্র ও বিস্ফোরক বিষয়ে তাদের যে পারদর্শিতা, এর প্রশিক্ষণ তারা কিভাবে পায়? বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব পিস এন্ড সিকিউরিটি স্টাডিজ এর প্রেসিডেন্ট মেজর জেনারেল (অব) এএনএম মুনীরুজ্জামান বলছেন, বোমা বা বিস্ফোরক সংক্রান্ত সাধারণ কিছু ফর্মুলা এখন ইন্টারনেটেই পাওয়া যায়। ফলে সেটি খুবই সহজসাধ্য একটি ব্যপার এখন। এছাড়া লোকচক্ষুর আড়ালে তারা শারীরিক প্রশিক্ষণ নেয়। কিন্তু বাংলাদেশের মত জনবহুল দেশে এ ধরণের প্রশিক্ষণের জন্য তুলনামূলক কম লোকালয় আছে, এমন জায়গা বেছ নেয় তারা।
যেমন পার্বত্য চট্টগ্রামের গহীন জঙ্গলে এবং প্রত্যন্ত কিছু চর অঞ্চলে এরকম বেশ কয়েকটি প্রশিক্ষণ ক্যাম্প আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অভিযান চালিয়ে খুঁজে পেয়েছে। এছাড়া সামরিক প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের কেউ দেশের বাইরে থেকেও প্রশিক্ষণ নিতে পারে। কিন্তু এ ধরণের কর্মকাণ্ড চিহ্নিত করার সামর্থ কতটা আছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর? মুনীরুজ্জামান বলছেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তথ্য পেতে বা জঙ্গি কর্মকাণ্ড শনাক্ত করতে সামর্থ্যের ঘাটতি নেই। আধুনিক যেসব অ্যাপ্রোচ আছে, সেগুলো ব্যবহার করলে সমার্থের ঘাটতি থাকার কথা নয়। কেন কমান্ডো অভিযান শেষ হতে সময় লাগছে? বাংলাদেশে হঠাৎ করে জঙ্গি তৎপরতা বেড়ে যাওয়ার কারণ কী?
এছাড়া বিভিন্ন বাহিনীর মধ্যে সমন্বয় আরো বাড়াতে হবে, যাতে এক বাহিনীর সংগৃহীত তথ্য অন্য বাহিনীগুলো ব্যবহার করতে পারে। তবে, মুনীরুজ্জামান স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন, কেবলমাত্র বাহিনী দিয়ে জঙ্গি ভাবাদর্শ দমন সম্ভব হয় না। এজন্য সমাজের ভেতর থেকেই এর বিরুদ্ধে সমন্বিত এক ধরণের প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। সন্দেহভাজন জঙ্গিদের প্রশিক্ষণ বা সংগঠিত হওয়ার তথ্য পেতে জনগণকে সম্পৃক্ত করে কৌশল বানাতে হবে। গোয়েন্দা তৎপরতা বাড়াতে হবে এমনভাবে যেন, তাৎক্ষনিক তথ্য পাওয়া যায়। এর আগে শনিবার সিলেটে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে লক্ষ্য করে ‘বোমা বিস্ফোরণের দায়’ স্বীকার করে কথিত জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট বা আইএস।
মন্তব্য চালু নেই