প্রিন্স মুসাকে দুদকে জিজ্ঞাসাবাদ

আন্তর্জাতিক অস্ত্র ব্যবসায়ী ও ড্যাটকো গ্রুপের চেয়ারম্যান ড. মুসা বিন শমসেরকে (প্রিন্স মুসা) জিজ্ঞাসাবাদ করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

৫১ হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার এবং অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধানে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

দুদকের প্রধান কার্যালয়ে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে তার জিজ্ঞসাবাদ শুরু হয়। দুদকের উপপরিচালক মীর মো. জয়নুল আবেদীন শিবলী তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন।

ফোর্বস ম্যাগাজিন অনুযায়ী মুসা বিন শমসের বাংলাদেশের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি। তার মূল সম্পত্তি প্রায় ১২ বিলিয়ন ইউএস ডলারের ওপরে।

অভিযোগের বিষয়ে দুদক সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর ‘বিজনেস এশিয়া’ ম্যাগাজিন মুসা বিন শমসেরকে নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। যেখানে বলা হয়, বাংলাদেশি এ ধনাঢ্য অস্ত্র ব্যবসায়ী মুসা বিন শমসেরের ৭ বিলিয়ন ডলার আটকে আছে সুইস ব্যাংকে। সুইস ব্যাংকে আটক সেই অর্থ ও তার উৎসের খোঁজে মাঠে নেমেছে দুদক।

দুদকের প্রাথমিক অনুসন্ধানে মুসা বিন শমসেরের বিষয়েও নানা অসঙ্গতি ধরা পড়ে। ২০১১ সালের ২৪ জুন তার ব্যাংক হিসাব তলব করেছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। একই সঙ্গে তার নো ইউর কাস্টমার (কেওয়াইসি) ফর্মের সব তথ্য জানতে চেয়েছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ওই সময় কেন্দ্রীয় ব্যাংক পরবর্তী সাত কার্যদিবসের মধ্যে ড. মুসার সব ব্যাংকের স্থায়ী, চলতি, সঞ্চয়ী, ডিপিএস, এসপিডিএস, এফডিআর বা অন্য কোনো পদ্ধতিতে হিসাব পরিচালিত হয়েছে বা হচ্ছে কি না সে সম্পর্কে তথ্যসহ হিসাব খোলার দিন থেকে হালনাগাদ হিসাব বিবরণী দাখিল করতে তফসিলিভুক্ত ব্যাংকগুলোকে নির্দেশ দিয়েছিল। দুদকের চাহিদার ভিত্তিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এসব হিসাব তলব করলেও পরে রহস্যজনক কারণে এ বিষয়ে কোনো অগ্রগতি হয়নি।

সূত্র আরো জানায়, মুসা বিন শমসের অস্ত্র সরবরাহকারী হিসেবে আন্তর্জাতিকভাবে ব্যাপক পরিচিত। ড. মুসা ১৯৯৭ সালে যুক্তরাজ্যের নির্বাচনে অনুদান দিতে চেয়ে সমালোচনার মুখে পড়েন। লেবার পার্টির টনি ব্লেয়ার নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর জন্য তার পাঁচ মিলিয়ন ডলার অনুদান প্রত্যাখ্যান করেছিলেন।

পদ্মা সেতু নির্মাণ প্রকল্পেও এককভাবে অর্থয়ানের কথা বলে আলোচনায় আসেন তিনি। বিশ্বব্যাংক ঋণ প্রত্যাহার করে নিলে মুসা বিন শমসের এতে ৩ বিলিয়ন ডলার অর্থায়নের কথা বলে। রহস্য-বিবরে ঢাকা মুসা বিন শমসেরকে এবার ফের আলোচনায় আনল দুদক।

এ উপমহাদেশে তিনি শীর্ষস্থানীয় ধনাঢ্য ব্যক্তি যিনি বিলিয়ন পাউন্ড উপার্জন করছেন ট্যাঙ্ক, যুদ্ধবিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র বেচাকেনার ব্যবসা করে।

এর আগে এই অভিযোগটি দুদকের উপপরিচালক শেখ ফাইয়াজ আলম অনুসন্ধান করে আসছিলেন। কমিশন অনুসন্ধানের গতি আনতে কর্মকর্তা পরিবর্তন করার সিদ্ধান্ত নেয় দুদক।



মন্তব্য চালু নেই