৭৪ জনের মধ্যে ৭২ জনই ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা!
মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাইয়ে ৭৪ জনের মধ্যে ৭২ জনকেই ভুয়া হিসেবে শনাক্ত করেছে কমিটি। বাকি দুইজনও মুক্তিযোদ্ধা কি না তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে তাদেরকে আরও প্রমাণ উপস্থাপনের সুযোগ দেয়া হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে কয়েকজন রাজাকারও সুযোগ-সুবিধা নিচ্ছেন বলে বাছাইয়ে উঠে এসেছে।
ঘটনাটি ঘটেছে হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে। মঙ্গলবার উপজেলা পরিষদ হলরুমে নতুন প্রার্থীদের যাচাই-বাছাই কার্যক্রম সম্পন্ন হয়।
সূত্র জানায়, মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হওয়ার জন্য উপজেলায় ১১৪ জন অনলাইনে আবেদন করেন। এর মধ্যে উপজেলার মাকালকান্দির শহীদ রয়েছেন ৪০ জন। শহীদদের বাছাই পরবর্তী সম্পন্ন করা হবে। মঙ্গলবার ৭৪ জনের আবেদন যাচাই-বাছাই করা হয়। বাছাইয়ে ৭২ জনই ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা বলে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হয়েছেন বাছাই কমিটির নেতারা। আর দুইজনের আবেদন দেখে তাদের বলা হয়েছে, পরবর্তী সময়ে উপযুক্ত কাগজপত্র নিয়ে আসার জন্য। উপযুক্ত কাগজপত্র নিয়ে আসতে পারলে তাদের বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।
এছাড়া পুরাতন ১৩ মুক্তিযোদ্ধার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। তারা মুক্তিযোদ্ধা না হয়েও সব ধরনের সুযোগ সুবিধা নিচ্ছেন। বাছাইয়ে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তালিকাভুক্ত না হতে পারলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
হবিগঞ্জ জেলা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিট কমান্ডার অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আলী পাঠান এসব তথ্য নিশ্চিত করে জানান, বানিয়াচংয়ে যে ১৩ জন মুক্তিযোদ্ধার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে তারা বাছাইয়ে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে প্রমাণিত না হলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। ওই ১৩ জনের মধ্যে ২/১ জন রাজাকারও রয়েছেন বলে জানান তিনি।
মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোহাম্মদ আলী পাঠান আরও জানান, নবীগঞ্জ উপজেলার মুক্তিযোদ্ধাদের যাচাই-বাছাই ছিল। এ হিসেবে উপজেলা পরিষদের আড়াইশ থেকে তিনশ মুক্তিযোদ্ধা উপস্থিত হন। কিন্তু উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার নুর উদ্দিন বীরপ্রতীকের অসহযোগিতার কারণে যাচাই-বাছাই সম্পন্ন হয়নি। মুক্তিযোদ্ধারা সারাদিন অপেক্ষা করে বাড়িতে চলে যান।
বানিয়াচঙ্গে বাছাইকালে উপস্থিত ছিলেন এমপি আব্দুল মজিদ খান, উপজেলা চেয়ারম্যান শেখ বশির আহমেদ, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সন্দ্বীপ কুমার সিংহ, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কমিটির সভাপতি আমীর হোসেন মাস্টার, জেলা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিটের ডেপুটি কমান্ডার গৌর প্রসাদ রায়, সহকারী কমান্ডার শফিকুর রহমান, আব্দুল খালেক, সুকেন্দ্র দাশ, আব্দুল আলী, বানিয়াচঙ্গ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আব্দুল খালেক মাস্টার প্রমুখ।
বর্তমান সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাইয়ের উদ্যোগ নেয়া হয়। মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞা নির্ধারণ না করার বিষয়ে আদালতে রিট হলে যাচাই-বাছাই কার্যক্রম ঝুলে যায়। গত বছরের ৮ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টে ওই রিট নিষ্পত্তি হওয়ার পর মন্ত্রণালয় আর অপেক্ষা না করে দ্রুত গেজেটভুক্তির আবেদন যাচাই-বাছাই কার্যক্রম শুরু করতে উদ্যোগ গ্রহণ করে। গত ২১ জানুয়ারি থেকে শুরু হয়েছে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কার্যক্রম।
মন্তব্য চালু নেই