কোহলিদের মোকাবেলার বিষয়ে গ্যারান্টি দিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যমকে যা বললেন সাহসী মুশফিক
ভারতের মাটিতে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। প্রতিপক্ষ দেশ ভারত টেস্ট র্যাংকিংয়ের এক নম্বর দল হলেও হাল ছাড়তে নারাজ সফরকারীরা। এক ম্যাচের টেস্ট খেলতে ভারতে পৌঁছেই বাংলাদেশের অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম জানিয়ে দিলেন সাহসী বাক্য।
ভারতীয় গণমাধ্যমে সমান তালে লড়াই করার ঘোষণা দিয়ে মুশফিক বলেন, ‘গ্যারান্টি দিচ্ছি, আমরা নম্রভাবে আত্মসমর্পণ করবো না’। আগামী নয় ফেব্রুয়ারি হায়দ্রাবাদের রাজিব গান্ধী স্টেডিয়ামে শুরু হবে দু’দলের মধ্যকার ‘ঐতিহাসিক’ টেস্ট ম্যাচ।
ভারতের বিপক্ষে আটটি টেস্ট খেলে এর আগে ছয়টিতে হেরেছে বাংলাদেশে। ড্র করেছে দু’টিতে। আর এই সবগুলোই অনুষ্ঠিত হয় বাংলাদেশের মাটিতে। ২০১০ সালের নভেম্বরে অভিষেক টেস্টেও বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ ছিল ভারত। তারপরও এবারই প্রথমবারের মত ভারতের মাটিতে টেস্ট খেলার সুযোগ পাচ্ছে বাংলাদেশ। সেদিক থেকে ঘটনাটা ঐতিহাসিক।
টেস্ট ম্যাচটিকে সামনে রেখে মুশফিক বলেন, ‘প্রথমবারের মত আমরা ভারতের মাটিতে টেস্ট খেলতে যাচ্ছি। বড় ফরম্যাটে যে আমরা ভাল দল হয়ে উঠছি সেটাই এখানে আমাদের প্রমাণ করতে হবে।’
বিরাট কোহলির ভারতীয় টানা পাঁচটি টেস্ট সিরিজ জিতে রীতিমত আকাশে উড়ছে। ২০১৬ সালে তাঁরা টানা সিরিজ জেতে শ্রীলঙ্কা, দক্ষিণ আফ্রিকা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, নিউজিল্যান্ড ও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। মুশফিক বলেন, ‘বিরাটের অধীনে ভারত দারুণ খেলছে এখন। স্বাভাবিক ভাবেই সিরিজটা আমাদের জন্য খুবই কঠিন হতে যাচ্ছে।’
ভারতীয় ব্যাটিং অর্ডারে নি:সন্দেহে বাংলাদেশের বড় প্রতিপক্ষ খোদ বিরাট কোহলি। তবে, মুশফিক পুরো ভারতীয় ব্যাটিং লাইনআপকেই গুরুত্বের চোখে দেখছেন। তিনি বলেন, ‘বিরাটকে বাদ দিলেও পুরো ভারতীয় ব্যাটিং লাইনআপটাই বেশ শক্ত। ওদের বিপক্ষে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিতে হলে ওদের বিপক্ষে আমাদের খুব ভাল বোলিংয়ের কোনো বিকল্প নেই।’
টেস্টে বাংলাদেশকে রবীন্দ্র জাদেজা ও রবীচন্দ্রন অশ্চিন – এই বিশ্বমানের দুই স্পিনারের ভেলকির মুখে পড়তে হবে। মাঠে নামার আগে মুশফিক অবশ্য এই দু’জনকে বিশ্বসেরা বলে রায় দিয়ে দিলেন, ‘এই দু’জন (অশ্বিন-জাদেজা) এই মুহূর্তে বিশ্বের সেরা দুই স্পিনার। এই কন্ডিশনে ওদের মোকাবেলা করা খুবই চ্যালেঞ্জিং হবে আমাদের জন্য। তবে, ভারতের জন্যও কাজটা সহজ হবে না খুব। কারণ, আমাদেরও তামিম, সাকিব, ইমরুল, মাহমুদউল্লাহ আছে। এর আগেও তারা স্পিনারদের বিপক্ষে নিজেদের সামর্থ্য প্রমাণ করেছেন।’
সর্বশেষ নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশে সিরিজটা ভাল যায়নি। ব্ল্যাক ক্যাপদের মাটিতে তিন ফরম্যাট মিলে মোট আটটা ম্যাচে হেরেছে বাংলাদেশ। মুশফিক বলেন, ‘ওটা আমাদের শেখার একটা সফর ছিল। আর এখানে মাত্র একটাই টেস্ট ম্যাচ। একবার ছিটকে গেলে ফেরার আর কোনো সুযোগ নেই। ফলে টেস্টের প্রতিটা সেশনই গুরুত্বের সাথে দেখতে হবে।’
ভারতীয় কন্ডিশনের সহায়তা নিতে মুখিয়ে আছেন বাংলাদেশের স্পিনাররাও। চার টেস্টে ২৩ উইকেট পাওয়া মিরাজকে ঘিরেই বাংলাদেশ আশা বুনছে। এই ১৯ বছর বয়সী স্পিনারের সৌজন্যেই গত অক্টোবরে মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ইংল্যান্ডকে টেস্টে হারিয়ে দিয়েছিল বাংলাদেশ।
মিরাজের ব্যাপারে মুশফিকের অভিমত, ‘ও নিজেকে দলের জন্য একটা সম্পদে পরিণত করেছে। বাংলাদেশ আর ভারতের কন্ডিশনের মধ্যে খুব একটা পার্থক্য নেই। আশা করি মিরাজ এখানে ভাল কিছু করতে পারবে।’
মূল টেস্টে মাঠে নামার আগে আগামী পাঁচ তারিখ ভারতীয় ‘এ’ দলের বিপক্ষে একটা প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। দু’দিনের এই ম্যাচটা অনুষ্ঠিত হবে হায়দ্রাবাদের জিমখানা মাঠে।
মন্তব্য চালু নেই