হজযাত্রী কমে যাওয়ার শঙ্কা

আগামী বছর বাংলাদেশি হজযাত্রীর সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে কমে যেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। মোয়াল্লেম ফিসহ বিমান ভাড়া জমা দেয়া, অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন এবং মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট বাধ্যতামূলক করায় এ আশঙ্কার সৃষ্টি হয়েছে।

২০১৫ সালের হজ প্যাকেজ অনুযায়ী, আগামী বছর হজ পালনের জন্য এক লাখ এক হাজার ৭৫৮ জন বাংলাদেশি সৌদি আরব যেতে পারবেন। এজন্য আগামী ১৫ জানুয়ারি থেকে ৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে মোয়াল্লেম ফিসহ প্রায় দেড় লাখ টাকা এককালীন জমা দিয়ে অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে।

অন্য বছরের তুলনায় প্রায় তিন মাস আগে শুরু হচ্ছে হজে যাওয়ার প্রক্রিয়া। এই অল্প সময়ের মধ্যে অনেকেই সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন না বলে ধারণা করা হচ্ছে। এত আগেভাগে দেড় লাখ টাকার মতো জমা দেয়া অনেকের পক্ষে সম্ভব হবে না। হজ এজেন্সি মালিকদের আশঙ্কা, স্বল্প সময়ে অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করা, এককালীন এত টাকা জমাদানসহ নানা জটিলতার কারণে এবার হজযাত্রীর সংখ্যা অর্ধেকে নেমে আসতে পারে।

তারা বলছেন, প্রতি বছর জুন-জুলাইয়ের মধ্যে হজযাত্রীরা টাকা জমা দিতেন। কিন্তু এবার গতবারের তুলনায় তিন মাস আগে টাকা জমা দিয়ে অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। সৌদি সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী, হজ ব্যবস্থাপনায় যে পরিবর্তন আনা হয়েছে সেগুলো ভালো উদ্যোগ হলেও হজযাত্রীদের রেজিস্ট্রেশন করতে দেড় লাখ টাকা জমার নিয়ম করা ঠিক হয়নি। কেননা একজন হজযাত্রীর পক্ষে স্বল্প সময়ে এত টাকা জোগাড় করা কষ্টকর। আবার রেজিস্ট্রেশনের সময় মাত্র ২০ দিন। এই সময়ে এত লোকের রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করাও কষ্টকর। গত বছর আড়াই মাসে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করা হয়। তার পরও বারকোড প্রদানকালে অতিরিক্ত চাপের কারণে সার্ভার হ্যাং হয়ে গিয়েছিল। এবার তো সময় আরো কম। কোনো কারণে রেজিস্ট্রেশনে সমস্যা দেখা দিলে হজযাত্রীরা এজেন্সি মালিকের ওপর চড়াও হবেন। তাই হজ ব্যবস্থাপনায় নানা জটিলতার কারণে এবার হজযাত্রী প্রায় ৫০ হাজার কম হতে পারে।

এ বিষয়ে হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) সভাপতি মোহাম্মদ ইব্রাহিম বাহার বলেন, হজ ব্যবস্থাপনা নিয়ে এজেন্সি মালিকরা শঙ্কিত। মোয়াল্লেম ফি গ্রহণের মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশন করার নিয়ম চালু করতে পারত সরকার। তার মতে, বিমান ভাড়ার টাকা লাগবে ছয়-সাত মাস পর। তাহলে এত আগে বিমান ভাড়া নেয়ার প্রয়োজন কী?

জানা গেছে, চলতি বছর (২০১৪ সালে) সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে ৯৮ হাজার ৬০৫ জন বাংলাদেশি হজ পালন করেন। এর মধ্যে বেসরকারি ব্যবস্থাপনার ছিলেন ৯৭ হাজার ৪৮ জন। ৮৩৫টি হজ এজেন্সির মাধ্যমে তারা সৌদি আরবে যান। ২০১৪ সালের হজ প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছিল মার্চে। অন্যদিকে ২০১৫ সালের জন্য দুটি আলাদা হজ প্যাকেজ তিন মাস এগিয়ে এনে গত ৮ ডিসেম্বর অনুমোদন করা হয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে।



মন্তব্য চালু নেই