রাণীনগরে ভুট্টা চাষের উজ্জল সম্ভবনা

কাজী আনিছুর রহমান, রাণীনগর (নওগাঁ) : দেশের উত্তর জনপদের খাদ্য ভান্ডার হিসেবে খ্যাত নওগাঁর রাণীনগর উপজেলায় ব্যাপক ধান চাষের পাশাপাশি ভুট্টা চাষের উজ্জল সম্ভবনা দেখা দিয়েছে। স্বল্প খরচে অধিক লাভ অল্প পরিশ্রমের কারণে চাষিরা এই ফসল চাষের দিকে ঝুকে পড়ছে। আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় চলতি রবি মৌসুমে বোরো ধানের পাশাপাশি দিগন্ত জুড়ে ভুট্টা চাষের ডানা মেলছে। কৃষকরা ভাল বাজার দর পেলে এবার ভুট্টা চাষিদের মুখে হাসির ঝিলিক ফুটবে এমনটাই আশা করছেন স্থানীয় কৃষকরা। জেলার অন্যান্য উপজেলার চেয়ে রাণীনগর উপজেলায় এবার ভুট্টা চাষের প্রায় শীর্ষ স্থান দখল করে নিয়েছে।

রাণীনগর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসের হিসাব মতে, মাত্র তিন বছরে উপজেলায় প্রায় ছয়শত হেক্টর ধানী জমিতে কৃষকরা ধান চাষ না করে চলতি রবিশস্য মৌসুমে ভুট্টা চাষ করছে। কৃষি বিভাগের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা সাড়ে চারশত হেক্টর হলেও মাঠ পর্যায়ে ভুট্টা হচ্ছে প্রায় ছয়শত হেক্টর জমিতে। ধান, পাট ও সবজির আবাদ করে কৃষকদের প্রতি মৌসুমে লোকসান হওয়ায় এবং বিগত বছর গুলোতে অনুকুল আবহাওয়া থাকায় ভুট্টার ভাল ফলন ও দাম আসানুরুপ পাওয়ায় এলাকার চাষিরা অন্যান্য ফসলের চেয়ে ভুট্টা চাষের দিকে প্রতি বছরই ঝুকে পড়ছেন কৃষকরা। উপজেলা মিরাট ইউনিয়নের জালালাবাদ গ্রামের মো: গিয়াস, আব্দুস সাত্তার সহ একাধিক ভুট্টা চাষি বলেন, আমরা নিজের সব জমিতেই বোরো ধানের চাষ করতাম। কিন্তু ধানের জমি কিছুটা কমিয়ে ধীরে ধীরে ভুট্টা চাষের দিকে মনোযোগ দিচ্ছি। গত বছর ভুট্টা উঠার সাথে সাথে আধাশুকনা ভুট্টা কাটা মাড়াই সময়ে উঠান থেকেই ভাল দামে বিক্রয় করেছি। বর্তমানে এলাকায় ভুট্টার আবাদ দিনদিন পাচ্ছে তাই বর্তমানে এই এলাকায় সরকারি ভাবে ভুট্টার বাজার দর বেধে দিলে চাষিরা নায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হবে না বলে তারা জানান।

গত বছর গুলোতে চাষিদের উৎপাদিত অন্যান্য কৃষিজাত ফসলে লোকসান হওয়ার কারণে এলাকার চাষিরা কয়েক বছর ধরে ব্যাপক হারে ভুট্টার আবাদ করছে। এবারও ফলন ও দাম ভাল পেলে চাষিদের মুখে হাসির ঝিলিক ফুটবে। ভরা মৌসুমে প্রাকৃতিক কোন রুপ দূর্যোগ দেখা দিলে অন্যান্য ফসলের যেমন ক্ষতি হয় ভুট্টার তেমন একটা ক্ষতি হয় না। প্রতি বিঘায় ২৬ থেকে ২৮ মন পর্যন্ত ভুট্টা উৎপাদন হয়। ধান চাষের পরেই এলাকায় কৃষি ফসলের পাশাপাশি ভুট্টা চাষের উজ্জল সম্ভবনা দেখা দিয়েছে।

উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ এসএম গোলাম সারওয়ার জানান, মাঠ পর্যায়ে চাষিদের ভুট্টা চাষের আগ্রহ বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রান্তিক পর্যায়ের চাষিদের চলতি রবিশস্য মৌসুমে উপজেলার প্রায় দুইশত কৃষককে আগাম জাতের ভুট্টা বীজ দিয়েছি। চাষযোগ্য জমিতে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে উপযুক্ত পরামর্শ দেওয়ার ফলে সঠিক সময়ে বীজ বপন করায় এবং নিবির পরিচর্চার কারণে এবার ভুট্টা চাষের উজ্জল সম্ভবনা দেখা দিয়েছে।



মন্তব্য চালু নেই