আরেকটি ‘ধাক্কা’ দিলেই সরকারের পতন: ফখরুল
আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া হয়ে পড়েছে দাবি করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আরেকটি ধাক্কা দিলেই এই সরকারের পতন ঘটবে।
সেই ‘ধাক্কা’ দিতে সবাইকে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিতেও আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
নির্দলীয় সরকারের অধীনে মধ্যবর্তী নির্বাচনের জন্য বিএনপির দাবিতে সরকারের গা না করার মধ্যে বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় এই আহ্বান জানান ফখরুল।
তিনি বলেন, “সরকারের পায়ের নিচে মাটি নেই। তারা গণবিচ্ছিন্ন হয়ে রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া হয়ে গেছে। এখন শুধু তাদের ক্ষমতা থেকে সরাতে আরেকটি ধাক্কা মারতে হবে।”
সরকার বিরোধী দল দমনে নির্যাতনের পাশাপাশি মামলা দিয়ে হয়রানি চালাচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন বিএনপির মুখপাত্র।
খালেদা জিয়াকে নির্বাচনের বাইরে রাখার উদ্দেশ্যে ‘দ্রুত’ সাজা দিতে বিচারকাজে ‘তাড়াহুড়া’ করা হচ্ছে বলেও দাবি করেন তিনি।
“হাজার হাজার মামলা ঝুলে আছে। ওই সব মামলার বিচার হচ্ছে না। অথচ তিন বারের প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মামলা অস্থায়ী আদালতে নিয়ে তড়িঘড়ি বিচার করা হচ্ছে।”
বিচার বিভাগে সরকারের হস্তক্ষেপের অভিযোগ তুলে ফখরুল বলেন, “নিম্ন আদালতগুলোতে বিরোধী দলের নেতা-কর্মীরা জামিন পায় না। সেখানকার বিচারকদের ওপরের নির্দেশ নিয়ে কাজ করতে হচ্ছে। সুবিচার পাওয়ার জন্য আমরা যখন উচ্চ আদালতে যাই, সেখানেও আমরা হতাশ হই।”
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের দুর্নীতির ধারণা সূচকে বাংলাদেশের যে অবস্থান দেখানো হয়েছে, তা যথার্থ বলে মনে করে বিএনপি।
দুর্নীতি দমন কমিশনের সমালোচনা করে ফখরুল বলেন, “ক্ষমতাসীন মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে নানা দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পর দুর্নীতি দমন কমিশন তাদের দায়মুক্তি দিচ্ছে। অন্যদিকে বিরোধী দলের নেতাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা যা হাই কোর্ট খারিজ করে দিয়েছিল, ওই সব মামলা আপিল বিভাগে নিয়ে আবার বহাল করা হচ্ছে।”
আওয়ামী লীগ একদলীয় শাসন চালোচ্ছে দাবি করে এর সপক্ষে ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রাষ্ট্রদূত উইলিয়াম বি মাইলামের সাম্প্রতিক এক মন্তব্য উদ্ধৃত করেন বিএনপির মুখপাত্র।
“যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক এক রাষ্ট্রদূত উইলিয়াম মাইলাম বলেছেন, বাংলাদেশে আবার একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম হতে যাচ্ছে।”
যুক্তরাষ্ট্রের মন্ত্রীকে নিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় সরকারমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের মন্তব্যে দুই দেশের সম্পর্কের অবনতিদ ঘটবে বলেও মন্তব্য করেন ফখরুল।
“সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম সাহেব বাংলাদেশ সফর করে যাওয়া যুক্তরাষ্ট্রের নিশাই দেশাই বিসওয়ালকে দুই আনার মন্ত্রীর বলে সম্বোধন করেছেন। সে দেশের অ্যাম্বাসেডরকে কাজের মেয়ে মজীনা বলেছেন। এতে যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ সম্পর্ক আরও ক্ষতিগ্রস্ত হল বলে আমরা মনে করি।”
সরকারের আচরণের কারণে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বন্ধু হারাচ্ছে বলেও দাবি করেন সাবেক প্রতিমন্ত্রী ফখরুল।
কল্যাণ পার্টির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দলটির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিমের সভাপতিত্বে এই আলোচনা সভায় বিএনপি নেতা আমানউল্লাহ আমান, হাবিব উন নবী খান সোহেল, ইশতিয়াক আজিজ উলফাত, ডিএল সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন আহমেদ মনি, ন্যাপের মহাসচিব গোলাম মোস্তফা ভুঁইয়া, এলডিপির যুগ্ম মহাসচিব সাহাদাত হোসেন সেলিম, স্বাধীনতা ফোরামের সভাপতি আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, কল্যাণ পার্টির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব এম এম আমিনুর রহমান বক্তব্য রাখেন।
মন্তব্য চালু নেই