এক উপজেলায় পাঁচহাজার প্রতিবন্ধী!
আজ (৩ ডিসেম্বর) আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবস। ঝালকাঠি জেলার রাজাপুর উপজেলায় মানবেতর দিন কাটাচ্ছে ২ হাজার ২৬৬ জন প্রতিবন্ধী।
উপজেলার পালট ও বড়ইয়া গ্রাম দুটি ‘প্রতিবন্ধী গ্রাম’ নামে পরিচিত। এখানকার প্রায় পরিবারেই প্রতিবন্ধী সদস্য রয়েছে। গ্রাম দুটিতে পাঁচ শতাধিক প্রতিবন্ধীর দিন কাটছে অর্ধাহারে-অনাহারে।
জানা যায়, গত ১৫ বছর ধরে গ্রাম দুটিতে প্রতিবন্ধী সন্তান জন্ম নিচ্ছে। অথচ এই দীর্ঘ সময়েও এর কারণ অনুসন্ধানে সরকারি-বেসরকারি কোনো পর্যায় থেকেই কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
উল্লেখিত দুই গ্রাম ছাড়াও রাজাপুর উপজেলার ৬টি ইউনিয়নেই প্রতিবন্ধী রয়েছে। এদের কেউ শারীরিক, কেউবা মানসিক; আবার কেউ কেউ বাক কিংবা শ্রবণ প্রতিবন্ধী।
বড়ইয়া গ্রামের নূরুল ইসলামের ১৫ বছরের মেয়ে কুলসুম। জন্ম থেকেই সে মানসিক ভারসাম্যহীন। এ ছাড়া তার শারীরিক প্রতিবন্ধকতাও রয়েছে।
পাটল গ্রামের মুনসুর আলী হাওলাদারের দুই ছেলে আব্দুল কাদের হাওলাদার ও মনির হাওলাদার সুস্থভাবে জন্মালেও ১২ বছর বয়স হবার পর প্রতিবন্ধী হয়ে যায় তারা।
সমাজসেবা অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী কেবল রাজাপুর উপজেলাতেই রয়েছে ২ হাজার ২৬৬ জন প্রতিবন্ধী। আর বেসরকারি সংস্থাগুলোর জরিপে এ সংখ্যা পাঁচ হাজারের ওপর।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, একটি উপজেলায় এত বিপুল সংখ্যক প্রতিবন্ধী থাকার পরও তাদের জন্য কোনো বিশেষায়িত সুযোগ-সুবিধা নেই। এলাকার শিশু-প্রতিবন্ধীদের জন্য একটি বিশেষায়িত বিদ্যালয় স্থাপনের জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছে তারা।
বড়ইয়া গ্রামের শারীরিক প্রতিবন্ধী মাহতাব জানান, জন্ম থেকেই তিনি প্রতিবন্ধী। তার মত আরো অনেক প্রতিবন্ধী সেখানে রয়েছেন। তারা কেউই কোনো প্রকার ভাতা বা অন্য কোনো সুবিধা পান না।
এ ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা ভবানী শংকর বল জানান, প্রতিবন্ধী জরিপ শেষ হয়েছে। সরকারিভাবে ৩৭১ জন প্রতিবন্ধী ৫০০ টাকা হারে ভাতা পাচ্ছে। তবে প্রতিবন্ধীদের জন্য দেওয়া এই ভাতা অপ্রতুল বলেও স্বীকার করেন তিনি।
মন্তব্য চালু নেই