পালাতক রাগীব আলী ভারতে আটক

ভারতে পালিয়ে থাকা সিলেটের শিল্পপতি রাগীব আলী ভারতে আটক হয়েছেন। বৃহস্পতিবার সকালে ভারতের করিমগঞ্জের ইমিগ্রেশন পুলিশ তাকে আটক করে।

সিলেটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুজ্ঞান চাকমা রাগীব আলীকে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় করিমগঞ্জের ইমিগ্রেশন পুলিশ রাগীব আলীকে আটক করেছে। তাকে বাংলাদেশ পুলিশের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ২০০৫ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর সংসদীয় স্থায়ী কমিটির নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে মামলাটি দায়ের করা হয়েছিল। প্রথম দফায় পুলিশ তদন্ত করে মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়ে নিষ্পত্তি করে। গত ১৯ জানুয়ারি সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ তারাপুর চা-বাগান পুনরুদ্ধারের রায় দেন।

উচ্চ আদালতের ওই রায়ে ১৭টি নির্দেশনার মধ্যে এ মামলাটি আবার তদন্ত করার নির্দেশ দেয়া হয় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) সিলেটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সারোয়ার জাহানকে। পুনরায় তদন্ত করে ভূমি মন্ত্রণালয়ের স্মারক (চিঠি) জালিয়াতি মামলায় রাগীব আলী ও ছেলে আবদুল হাইকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়।

এছাড়া হাজার কোটি টাকার তারাপুর চা-বাগান অবৈধভাবে দখলের মামলায় রাগীব আলী, রাগীব আলীর আত্মীয় মৌলভীবাজারের রাজনগরের বাসিন্দা দেওয়ান মোস্তাক মজিদ, রাগীব আলীর ছেলে আবদুল হাই, জামাতা আবদুল কাদির ও মেয়ে রুজিনা কাদিরকে অভিযুক্ত করে অপর চার্জশিট আদালতে দাখিল করে।

গত ১০ আগস্ট এই দুই মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হলে ওই দিনই রাগীব আলী ও আবদুর হাই সপরিবারে পালিয়ে ভারতে চলে যান। তিন মাস চার দিনের মাথায় রাগীব আলীকে গ্রেফতার করা হয়।

এর আগে ১২ নভেম্বর রাগীব আলীর ছেলে আবদুল হাই ভারতের করিমগঞ্জ থেকে সিলেটের জকিগঞ্জ হয়ে ফিরলে জকিগঞ্জ ইমিগ্রেশন পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। ওই দিন বিকেলে তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলে পাঠানো হয়।

বর্তমানে রাগিব আলীর জামাতা আবদুল কাদির ও মেয়ে রুজিনা কাদির ওই মামলায় ভারতে পালিয়ে রয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধেও গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি রয়েছে।

উল্লেখ্য, ৪২২ দশমিক ৯৬ একর জায়গায় গড়ে ওঠা তারাপুর চা-বাগান পুরোটাই দেবোত্তর সম্পত্তি। ১৯৯০ সালে ভুয়া সেবায়েত সাজিয়ে বাগানটির দখল নেন রাগীব আলী।

চলতি বছরের গত ১৯ জানুয়ারি প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে হাইকোর্টের আপিল বিভাগের এক বেঞ্চ তারাপুর চা-বাগান দখল করে গড়ে ওঠা সব স্থাপনা ছয় মাসের মধ্যে সরিয়ে নেয়ার নির্দেশ দেন। রায় বাস্তবায়ন করতে সিলেটের জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দেয়া হয়।

গত ১৫ মে চা বাগানের বিভিন্ন স্থাপনা ছাড়া ৩২৩ একর ভূমি সেবায়েত পঙ্কজকুমার গুপ্তকে বুঝিয়ে দেয় জেলা প্রশাসন।



মন্তব্য চালু নেই