বাংলাদেশের দেশের প্রথম নিরক্ষরমুক্ত গ্রাম ঠাকুরগাঁওয়ের কচুবাড়ি কৃষ্টপুর গ্রাম

শরিফুল ইসলাম ঠাকুরগাও প্রতিনিধি: আজ ৮ সেপ্টেম্বর, আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস। বাংলাদেশের প্রথম সাক্ষরতা আন্দোলন শুরু হয় ঠাকুরগাঁওয়ে দেশের প্রথম নিরক্ষরমুক্ত ঠাকুরগাঁওয়ের গ্রাম কচুবাড়ি কৃষ্টপুর গ্রাম দেশে সর্বপ্রথম সাক্ষরতা অভিযান শুরু হয় ঠাকুরগাঁওয়ে।

১৯৭২ সালে সাক্ষরতা অভিযানে বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে মোকছেদ আলী ঠাকুরগাঁওয়ের কচুবাড়ি কৃষ্টপুর গ্রামকে দেশের প্রথম নিরক্ষরমুক্ত করে আদর্শ গ্রামে রুপান্তর করেন। রাস্ট্রপতি পদকও পান তিনি। এলাকাবাসী ও মোকছেদ আলীর পরিবারের দাবি মোকছেদ আলীর স্মরণে ওই এলাকায় গড়ে তোলা হোক স্মৃতিফলক, আর অনেকে বিধ্বস্ত বাংলাদেশ গড়ার অংশিদার মোকছেদ আলীর জীবনী ভবিষ্যৎ প্রজ¤েœ কাছে তুলে ধরতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে যথাযথ উদ্যোগ কামনা করেছেন।

১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের পর বিধ্বস্ত বাংলাদেশ। দেশ পুনর্গঠনে ঝাপিয়ে পড়েন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ১৯৭২ সালে জাতিরজনক বঙ্গবন্ধুর সাক্ষরতা অভিযানের ডাকে সাড়া দেন ঠাকুরগাঁওয়ের অজোপাড়ার শিক্ষিত টগবগে যুবক মোকছেদ আলী।

সরকারি সহযোগিতা ছাড়া নিজ উদ্যোগে দিনরাত মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরে প্রাণপণ চেষ্টায় কুচুবাড়ি কৃষ্টপুর গ্রামকে নিরক্ষর মুক্ত করেন।

১৯৭৪ সালে মোকছেদ আলীকে রাষ্ট্রপতিপদকে ভুষিত করা হয়। তৎকালীন রাস্ট্রপতি বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী, শিক্ষামন্ত্রী ইউসুফ আলীসহ বিশিষ্টজনেরা ওই গ্রাম পরিদর্শন করে আদর্শ গ্রাম ঘোষণা করেন।
মকসেদ আলী আমাদেরকে অনেক কিছু দিলেও আমরা তাঁকে কিছুদিতে পারিনি। দীর্ঘ ১৫ বছর অসুস্থ থেকে ২০০৭সালে বিনা চিকিৎসায় মারা যান মোকছেদ আলী। তার মৃত্যুর পর স্ত্রী জহেদা খাতুন তিনসন্তান নিয়ে পড়েন বিপাকে। অর্থের অভাবে শিক্ষিত ছেলে আল আমিন দৈনিক হাজিরার কাজ করে সংসার চালায় কোনমতে। এ পরিবারটি আজো পায়নি সরকারি কোন সহযোগিতা অভিযোগ পরিবারের।

মোকছেদ আলীর মৃত্যুর পর পরবর্তীতে স্থবিরতায় দেশের প্রথম নিরক্ষরমুক্ত সেই কচুবাড়ি কৃষ্টপুর আদর্শ গ্রামে বাড়ে সাক্ষরজ্ঞানহীন মানুষের সংখ্যা। বাবার সম্মান রক্ষায় কচুবাড়ি আদর্শ ক্লাবে মোকছেদ আলীর ছেলে আল আমিন সাক্ষরতা অভিযানে ঝাঁপিয়ে পড়লেও অর্থ ও শিক্ষা উপকরনের অভাবে থেমে যায় চেষ্টা।

সাক্ষরজ্ঞানহীন এ মানুষগুলো চান একটু শিক্ষিত হতে, চায় টিপসই এর পরিবর্তে নিজের নাম লিখতে। আর সেই সময়ে ঘোষিত আদর্শ এই গ্রামে আজো রাস্তাঘাটেরও উন্নয়ন না হওয়ায় ক্ষোভের সঞ্চার হয় এলাকাবাসীর।

স্বাক্ষরতা আন্দোলনের পথিকৃত মোকছেদ আলীর জীবনী ইতিহাস ভবিষ্যত প্রজম্মের কাছে তুলে ধরতে স্মৃতিফলক, পাঠাগার স্থাপনের পাশাপাশি পাঠ্যবইয়ে লেখা অন্তর্ভুক্ত করারও উদ্যোগ নেয়া যেতে পারে বলে মনে করেন ভারপ্রাপ্ত জেলা শিক্ষা অফিসার শিক্ষাবীদ আখতারুজ্জামান।



মন্তব্য চালু নেই