আটক জঙ্গিদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায় এফবিআই

দেশে বিভিন্ন সময়ে গ্রেফতার হওয়া জঙ্গিদের জিজ্ঞাসাবাদ করার আগ্রহ দেখিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান তদন্তকারী সংস্থা ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই)। বাংলাদেশে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া জঙ্গি হামলাগুলোর প্রেক্ষিতে এসব ঘটনার তদন্ত করাসহ আরও বেশি সম্পৃক্ত হয়ে আটক জঙ্গিদের জিজ্ঞাসাবাদের প্রস্তাব দিয়েছে তারা। তবে সরকার এ বিষয়ে এখনও আগ্রহ দেখায়নি। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘তারা (এফবিআই) আমাদেরকে জানিয়েছে এ বিষয়ে তাদের জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা অনেক বেশি। তারা জঙ্গিদের মনস্তাত্ত্বিক বিষয়টি বুঝতে চায়। তবে সরকার এ বিষয়ে এখনও ইতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করেনি।’

এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা জানান, ‘পশ্চিমা বিশ্ব মনে করে বাংলাদেশে সাম্প্রতিক জঙ্গি হামলার পেছনে আইএস বা বিদেশি জঙ্গি সংস্থার সরাসরি হাত রয়েছে। তবে একথা বরাবরই অস্বীকার করেছে সরকার। প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারের সব মন্ত্রী বরাবরই বলে আসছেন, দেশে জঙ্গি হামলার সঙ্গে সম্পৃক্ত সবাই এদেশীয়। এখানে কোনো বিদেশি এসে কোনও জঙ্গি কার্যক্রম চালাচ্ছে না। তবে তাদের সঙ্গে বিদেশিদের যোগাযোগ থাকলেও থাকতে পারে।’

তিনি বলেন, ‘এদের অনেকে বিদেশে অবস্থান করেছে বা বিদেশে পড়াশোনা করেছে এবং সে সময় তারা জঙ্গি কার্যক্রমে জড়িয়ে পড়ে থাকতে পারে। কিন্তু তারা বিদেশি কোনও সন্ত্রাসী সংস্থার কাছ থেকে সরাসরি নির্দেশপ্রাপ্ত হয়ে বাংলাদেশে জঙ্গি কার্যক্রম চালিয়েছে বা চালাচ্ছে এরকম কোনও তথ্য তাদের কাছে নেই।’

তিনি আরও বলেন,‘ সরকার মনে করে এসব জঙ্গির সঙ্গে কোনও বিদেশি সন্ত্রাসী বা জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে ই-মেইল বা অন্য কোনো মাধ্যমে লঘু যোগাযোগ থাকতেও পারে। কিন্তু তারা সরাসরি বিদেশিদের কাছ থেকে নির্দেশ পায় বলে আমাদের জানা নেই।’

তবে পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে দৃষ্টিভঙ্গির পার্থক্য থাকলেও জঙ্গি বিষয়ে পারস্পরিক সহযোগিতা থেমে নেই। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরির সফরের সময়ে নিরাপত্তা বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে এবং আসন্ন বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র নিরাপত্তা সংলাপে এ বিষয়ে আরও বিস্তারিত আলোচনা হবে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আরেক কর্মকর্তা বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের অনেক সহযোগিতার প্রস্তাব বাংলাদেশ বিবেচনা করছে আবার কয়েকটি প্রস্তাবে তারা নেতিবাচক মনোভাবও পোষণ করেছে।

তিনি জানান, ‘সন্ত্রাসবিরোধী সহযোগিতার অংশ হিসেবে মূলত তথ্য আদান-প্রদান, প্রশিক্ষণ বা সক্ষমতা বৃদ্ধি ইত্যাদি বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা নিতে আগ্রহী বাংলাদেশ। তবে এসবের বাইরে জঙ্গিবিরোধী তদন্তেও অধিক মাত্রায় সম্পৃক্ত হওয়ার আগ্রহ দেখিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।’



মন্তব্য চালু নেই