এক দিনেই মৃত্যু ডেকে আনতে পারে যে ১০ রোগ
বিজ্ঞান এমন একটি চূড়ায় এসে পৌঁছেছে যেখানে সব কিছুর একটা সমাধান পাওয়া যায়।
তা সত্বেও আমাদের চারপাশে এমন কিছু ঘটে যা খুঁজে বের করতে আমরা সমর্থ হই না।
আপনি যদি ধারণা করে থাকেন হার্ট অ্যাটাকের মতো কিছু রোগ শুধু দ্রুত মৃত্যু ঘটায়, তাহলে আরো কিছু রোগ রয়েছে যা আপনাকে চোখ মেলে দেখতে হবে।
এ প্রতিবেদনে জীবননাশক দশটি রোগ উল্লেখ করা হলো, যা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মানুষের মৃত্যু ডেকে আনতে পারে।
ডেঙ্গু জ্বর
সংক্রমিত মশার কামড়ে ডেঙ্গু রোগের বিস্তৃতি ঘটে। উপসর্গ হিসেবে পেশীর ব্যথা, অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ এবং ১০৪ ডিগ্রি ফা’র বেশি মাত্রার জ্বর হতে পারে। দ্রুত চিকিৎসা গ্রহণ না করলে প্লেটলেট ধ্বংস হয়ে শরীরের অভ্যন্তরে রক্তপাতের কারণ হতে পারে।
ইবোলা
এখন পর্য্ন্ত এ রোগের কোনো প্রতিকার পাওয়া যায়নি এবং আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে ৭০ ভাগ মারা যায়। এই রোগে শরীরের শ্বেত রক্ত কণিকা অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণের ফলে বিচ্ছিন্ন হয় এবং নাক, চোখ, মলদ্বার এবং কান দিয়ে রক্তপাত ঘটায়। শেষ পর্যন্ত রোগীর মৃত্যু হয়।
বিউবনিক প্লেগ
এই রোগ শরীরের প্রবেশ করে সংক্রমিত মাছির কামড়ের মাধ্যমে। যা বাবুস নামক উদ্দীপ্ত ফুসকুড়ির বৃদ্ধি ঘটায়। হৃদরোগ এবং রক্ত বমি ছাড়াও আক্রান্ত রোগীর শরীরের কোষ বিনষ্টি ঘটে, ফলে জীবিত রোগীটির অঙ্গপ্রত্যঙ্গ পচন ধরতে শুরু করে। চিকিৎসা গ্রহণ না করলে একই দিনে ৬০ ভাগ রোগী মারা যায়।
এন্টেরোভাইরাস ডি ৬৮
এটি একটি মারাত্মক শ্বাসতন্ত্রের রোগ যা লালার মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে এবং এটি শরীরের শ্বাস এবং মোটর সিস্টেমকে আক্রমন করে। যার ফলে রাতারাতি রোগীর মৃত্যু ঘটে। ফ্লু জনিত এই ভাইরাসের আক্রমনের শিকার শিশুরা বেশি হয়। কোনো প্রতিকার এখনো পাওয়া যায়নি।
কলেরা
এ রোগ মারাত্মক জলবিয়োজন, বমি ও পাতলা পায়খানা ঘটায়। ব্যাকটেরিয়া ক্ষুদ্রান্ত্রে আক্রমনের ফলে ডায়রিয়ার কারণে প্রতি ঘণ্টায় এক লিটার তরল বিয়োজন হয়। এটি রক্ত জমাট বাধার কারণ হয়ে অঙ্গ ব্যর্থতার ফলে মৃত্যুর কারণ হতে পারে।
এমআরএসএ
ওষুধ বা অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী মারাত্মক রোগ। এই জীবাণু থেকে ক্ষত, ফুসফুসের সংক্রমণ, রক্তদূষণ ইত্যাদির মত রোগ ব্যাধি দেখা দেয়। এটা রক্তনালী এবং ফুসফুসের টিস্যু ধ্বংস করে দেয়। আক্রান্ত রোগীর নিউমোনিয়া হয় এবং পরে শ্বাসরোধের ফলে সৃষ্ট অঙ্গ ব্যর্থতায় তার মৃত্যু ঘটে।
সেরিব্রোভাসকুলার রোগ
এ রোগের শিকার ব্যক্তির শরীরে প্রয়োজনীয় পুষ্টি ও অক্সিজেন বিচ্ছিন্ন হবার ফলে রোগী মৃত্যু কিংবা স্থায়ীভাবে নিস্ক্রিয় হয়ে যেতে পারে। ৩-৬ ঘণ্টার মধ্যে চিকিৎসা না করালে মারাত্মক রুপ নিতে পারে। রোগীর মুখে অসাড়তা দেখা যায় এবং মাথা ঘোরে। আক্রান্ত ব্যক্তি সাধারণত অন্ধ হয়ে যায় এবং কথা বলতে পারে না। মস্তিষ্কের ফাংশন অক্ষত থেকে মাথা থেকে অঙ্গুলী পক্ষাঘাত হয়।
চাগাস রোগ
এ রোগবাহী এক ধরনের রক্তচোষা পোকা মানুষের শরীরে কামড় দিলেই জীবাণু সংক্রমিত হয়। এটি শরীরের কার্ডিওভাসকুলার সিস্টেম ধ্বংস করে দেয়। রোগী সাধারণত উপলব্ধি করতে পারেন না, তবে দ্রুত চিকিৎসা না দিলে আকস্মিক মৃত্যু ঘটাতে পারে।
মেনিনজোকোককাল রোগ
এটি ব্যাকটেরিয়াল মেনিনজাইটিসের সবচেয়ে সাধারণ কারণ। এটা ব্লাডস্ট্রিমের মধ্য দিয়ে মস্তিষ্ক ঝিল্লি আক্রমন করে। চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে রোগীর মাথা ব্যাথা, রক্তবর্ন ফুসকুড়ি এবং হালকা বিতৃষ্ণা লাগে। দ্রুত চিকিৎসা না করালে ফুসফুস তরলে পূর্ণ হয় এবং শরীর জুড়ে পচন ধরা সৃষ্টি হয়। প্রতি তিন জনের মধ্যে একজনকে বাঁচানো সম্ভব হয় না।
নেক্রোটাইজিং ফেসসিটিস
এটি একটি আক্রমনকারী ব্যাকটেরিয়া সংক্রমন যা শরীরের টিস্যু আক্রমন করে। এটা সাধারণত একটি খোলা ক্ষত নিয়ে হাসপাতালে রোগীদের মধ্যে পাওয়া যায়। কিন্তু ফেলে দেওয়া ব্যান্ডেজের মাধ্যমেও অন্যান্য মানুষ আক্রান্ত হতে পারে। ক্ষতের ভেতরে ব্যাকটেরিয়ার বিষক্রিয়ায় শরীরের টিস্যুতে পচন ধরে। এ থেকে মুক্তির একমাত্র উপায় অঙ্গচ্ছেদ। এখনো তিনজন রোগীর মধ্যে একজনকে বাচাঁনো যায় না।
মন্তব্য চালু নেই