উত্তরার লিফট দুর্ঘটনায় ঝরে গেল আরও এক প্রাণ

চিকিৎসকদের সব চেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়ে অবশেষে না ফেরার দেশে চলে গেছে শিশু মেহনাজ হাসান মাইশা (১০)। শুক্রবার (৮ জুলাই) সকাল ৮টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় সে। রাজধানীর উত্তরার রাজলক্ষ্মী এলাকায় আলাউদ্দীন মার্কেটে লিফট ছিঁড়ে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মারাত্মক দগ্ধ হয় মাইশা। তার দেহের প্রায় ৫০ শতাংশই আগুনে পুড়ে গিয়েছিল।

মাইশা মাইলস্টোন স্কুলের ৪র্থ শ্রেণির ছাত্রী ছিল।

মাইশার মৃত্যুর বিষয়টি ঢামেক হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটের চিকিৎসক ওয়াহেদ মোরশেদ নিশ্চিত করেন।

এ ঘটনায় মাইশার পিতা মাহমুদুল হাসানও (৩৬) অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যান। এছাড়া তার ছোট ভাই মোমতাকিনের (৮ মাস) দেহের ২৩ শতাংশ পুড়ে গেছে। সে এখন ঢামেক হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটে চিকিৎসাধীন। তবে তার অবস্থাও আশংকাজনক বলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।

এদিকে মাইশার মৃত্যুতে অগ্নিদগ্ধের ওই ঘটনায় মৃতের সংখ্যা ৮-এ গিয়ে দাঁড়ালো। এর আগে নিহত ৭ জনের মধ্যে ৬ জনের নাম পরিচয় জানা গেছে। এরা হলেন- রেজাউল করিম রানা (৩২), সালমা আক্তার (৪০), কামরুন্নাহার লতা (৩০), মিজানুর রহমান (৫৩), জসিম উদ্দিন রফিক (৩৫) ও মাহমুদুল হাসান (৩৬)।

২৫ জুন সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিকে আলাউদ্দীন মার্কেটে লিফট ছিঁড়ে নিচে পড়ে যায়। এতে ওই মার্কেটে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। লিফট ছিঁড়ে যাওয়ায় দেয়াল চাপা পড়ে ঘটনাস্থলেই ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হন অর্ধশতাধিক। অগ্নিদগ্ধ হয়ে ঢামেক হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৬ জুন ভোর ৪টার মারা যান মাহমুদুল হাসান (৩৬)।মাহমুদুল হাসানের ৮০ শতাংশই আগুনে পুড়ে গিয়েছিল। তার গ্রামের বাড়ি বগুড়া জেলার সারিয়াকান্দি উপজেলায়।

জানা গেছে,মাহমুদুল হাসান আলাউদ্দিন মার্কেটের বেজমেন্টে অবস্থিত ট্রপিক্যাল হোমস লিমিটেডের ডিজিএম। তার অফিসের কলিগদের পরিবার নিয়ে ইফতার পার্টির আয়োজন করা হয়েছিল। মাহমুদুল ছেলে এবং মেয়েকে নিয়ে আগেই অফিসে চলে আসেন। স্ত্রী মেহবুবা হাসান উত্তরা ১৩নং সেক্টরের ৩নং রোডের বাসা থেকে আসছিলেন। এর মধ্যেই এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার বিষয়ে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স অধিদফতরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এনায়েত হোসেন জানান, ভবনটির লিফট ছিঁড়ে নিচে পড়ে গেলে বেজমেন্টের দেয়াল ভেঙে নিচে চাপা পড়ে তাদের মৃত্যু হয়। লিফট ছিঁড়ে সেখানে আগুনের সূত্রপাত হয়। এর ফলে আহত হন আরও অর্ধশতাধিক। ফায়ার সার্ভিসের ১৩টি ইউনিট প্রায় এক ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।



মন্তব্য চালু নেই