বিরতিহীন সেই লাল সবুজের ট্রেনে যা যা থাকছে
দীর্ঘ এক যুগ পর বাংলাদেশ রেলওয়ে বহরে যুক্ত হচ্ছে নতুন ট্রেন সোনার বাংলা। শনিবার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এর উদ্বোধন করেছেন। রবিবার থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম-ঢাকা রুটে বিরতিহীনভাবে চলাচল করবে ট্রেনটি।
আধুনিক সুবিধার এই ট্রেনের কোচগুলো আমদানী করা হয়েছে ইন্দোনেশিয়া থেকে। একই দিনে ঢাকা-রাজশাহী-ঢাকা রুটে ভারত থেকে আমদানী করা নতুন কোচ দিয়ে ধুমকেতু ট্রেনটি পরিচালনা করবে রেলওয়ে।
বাংলাদেশ রেলওয়ের ঢাকা বিভাগীয় ব্যবস্থাপক আরিফুজ্জামান বলেন, যাত্রা শুরুর পর থেকে প্রতিদিন সকাল ৭টায় ঢাকার কমলাপুর স্টেশন থেকে ছেড়ে চট্টগ্রাম পৌঁছাবে দুপুর ১২টা ৪০ মিনিটে। একইদিনে বিকেল ৫টায় চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে ঢাকা এসে পৌঁছাবে রাত ১০টা ৪০ মিনিটে। প্রতি শনিবার বন্ধ থাকবে ট্রেনটি।
চট্টগ্রাম রুটে এ নিয়ে মোট ৫টি আধুনিক ট্রেন চলাচল করবে। আগে থেকেই ঐ রুটে মহানগর প্রভাতী, সুবর্ণ, চট্টলা এক্সপ্রেস এবং তূর্ণা-নিশীথা ট্রেনগুলো চলাচল করতো।
রেলওয়ে জানিয়েছেন, আধুনিক সুবিধা সম্বলিত ট্রেনটিতে যাত্রী ধারণ ক্ষমতা ৭৪৬ জন। ১৬ কোচের ট্রেনটিতে তপানুকুল (এসি) চেয়ারে সংখ্যা ২২০টি। এছাড়া শীত বার্থে (এসি কেবিন) আসন সংখ্যা ৬৬টি। ট্রেনটিতে শোভন চেয়ারের সংখ্যা রয়েছে ৪২০টি। এছাড়া দুটি খাবার গাড়িতে মোট ৪০টি শোভন চেয়ার রয়েছে। যা প্রয়োজনে যাত্রী পরিবহনেও ব্যবহার করা হতে পারে।
সোনার বাংলায় ঢাকা-চট্টগ্রাম-ঢাকা রুটে চলাচলকারী যাত্রীদের নূন্যতম ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ৬০০ টাকা। শোভন চেয়ারে ভ্রমণ করলে প্রাপ্ত বয়স্কদের জনপ্রতি ভাড়া হবে এই পরিমাণ। এছাড়া এসি চেয়ার ভ্রমনকারীদের গুনতে হবে ১০০০ টাকা এবং এসি বার্থে সিট প্রতি গুনতে হবে ১১০০ টাকা করে।
এবারই প্রথম বাংলাদেশ রেলওয়েতে ভ্রমণকারীদের টিকিটের সঙ্গে খাবারের দাম পরিশোধ করতে হবে। সোনার বাংলা ট্রেনে খাবার পরিবেশন করবে বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশন। যে কোনো শ্রেণীর টিকেটের সঙ্গে খাবার বাবদ ১৯৫ টাকা পরিশোধ করতে হবে যাত্রীদের। তবে রিফান্ড টিকিট হলে খাবারের দাম ফেরত দেবে রেলওয়ে।
এরই মধ্যে ট্রেনটি চট্টগ্রাম থেকে ঢাকার কমলাপুর স্টেশনে নিয়ে আসা হয়েছে।
ট্রেনটি নিয়ে বেশ উচ্ছসিত বাংলাদেশ রেলওয়ে এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়। ইতিমধ্যে সব ধরনের পরীক্ষা নিরীক্ষাও শেষ করেছে রেলওয়ের ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ।
ট্রেনটি উদ্বোধনের পর থেকে ঢাকা চট্টগ্রাম রুটে চলাচলকারী ব্যবসায়ী এবং সাধারণ মানুষের আসন সংকট খানিকটা সমাধান হবে বলে আশা প্রকাশ করেছে রেলওয়ের মহাপরিচালক আমজাদ হোসেন। তিনি বলেছেন, দীর্ঘ দিন পর হলেও নতুন ট্রেন নতুন করে স্বপ্ন দেখাবে ট্রেনে ভ্রমণকারীদের।
রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক জানান, সোনার বাংলা ট্রেনটি বাংলাদেশ রেলওয়ের উন্নয়নের প্রতীক। আগামী ২০২১ সালে বাংলাদেশ যে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হতে যাচ্ছে সেখানে প্রধান যোগাযোগ মাধ্যম হবে রেলওয়ে।
২০১৭ সালে দেশের সকল প্রধান প্রধান ট্রেন রুটে নতুন করে ট্রেন দেওয়ার ব্যাপারেও আশাবাদী রেলপথমন্ত্রী।
তিনি বলেন, রেলওয়ের উন্নয়নে ২০১১ সালের ৪ ডিসেম্বর আলাদা মন্ত্রণালয় গঠন করে তার সরকার নতুন কোচ, নতুন ট্র্রেন লাইন নির্মান, পুরাতন রেললাইন সংস্কার এবং নতুন নতুন এলাকাকে রেল যোগাযোগ নেটওয়ার্কের আওতায় নিয়ে আসছে।
চলমান প্রকল্পগুলোর কাজ শেষ হলে ২০১৯ সালে বাংলাদেশ রেলওয়ে নতুন দিগন্তে পা রাখবে বলে যোগ করেন রেলপথ মন্ত্রী মুজিবুুল হক।
মন্তব্য চালু নেই