ফখরুলের হুমকিতে ফের আন্দোলনে পদবঞ্চিতরা
ছাত্রদলের পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা আন্দোলন-সংগ্রাম থেকে সরে না আসলে তাদেরকে বহিষ্কার করা হবে বলে হুমকি দিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তবে মির্জা ফখরুলের বহিষ্কারকে উপেক্ষা করে এবার কঠোর আন্দোলনে নামার ঘোষণা দিয়েছেন পদবঞ্চিত নেতারা।
মঙ্গলবার সকালে ছাত্রদলের পদবঞ্চিত নেতারা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের কাছে তাদের অভিযোগ জানান। কিন্তু তাদের অভিযোগ শোনার পরিবর্তে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তাদের দল থেকে বাদ দেয়ার হুমকি দেন বলে ঢাকাটাইমস টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন ছাত্রদলের সাবেক সহ- সভাপতি তরিকুল ইসলাম টিটু।
তরিকুল ইসলাম টিটু বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার অবর্তমানে দলের দ্বিতীয় ব্যক্তি হচ্ছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তাই আজ আমরা তার সাথে কথা বলতে গিয়েছিলাম। কিন্তু তিনি আমাদের কথা না শুনেই বলেন, সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, শহীদ উদ্দিন চৌধুরীকে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে না। ছাত্রদলের কমিটিও বাতিল করা হবে না। তবে তোমরা আন্দোলন বন্ধ না করলে তোমাদের দল থেকে বাদ দেয়া হবে।
গত ১৪ অক্টোবর ২০১ সদস্য বিশিষ্ট ছাত্রদলের নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু নতুন এই কমিটিকে টুকু ও এ্যানীর পকেট কমিটি দাবি করে ১৫ অক্টোবর থেকে আন্দোলনে নামেন ছাত্রদলের পদবঞ্চিত নেতারা। এতে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় তালাবদ্ধ, ছাত্রদলের দু’পক্ষে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়াসহ জিয়াউর রহমানের মুরাল ভাঙ্গা হয়। আর এতে বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া ক্ষুদ্ধ হয়ে এর মীমাংসার জন্য দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসসহ শীর্ষস্থানীয় নেতাদের নির্দেশ দিয়েছিলেন বলে ছাত্রদলের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে।
ছাত্রদলের পদবঞ্চিত নেতৃবৃন্দের দাবি, টুকু ও এ্যানীকে দল থেকে বহিষ্কার ও ছাত্রদলের কমিটি বাতিল করে নতুন কমিটি ঘোষণা। কিন্তু তাদের এই দাবি থেকে সরে এসে নতুন কমিটির সাথে কাজ করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন মির্জা আলমগীর।
ব্যর্থ মির্জা আব্বাস
ছাত্রদলের ঝামেলা মেটানোর দায়িত্ব পড়েছিল মির্জা আব্বাসের উপর। আর এর জন্য ছাত্রদলের পদবঞ্চিত নেতাদের সঙ্গে তিনি দু’দফা বৈঠকও করেছেন। কিন্তু সেই বৈঠকে ছাত্রদলের সমস্যার কোন সমাধান হয়নি বলে দাবি করেছেন পবঞ্চিত নেতৃবৃন্দ।
তারা বলেন, ছাত্রদলের সমস্যা সমাধানের জন্য মির্জা আব্বাসকে দায়িত্ব দিয়েছিলেন বেগম খালেদা জিয়া। কিন্তু মির্জা আব্বাস সমস্যা সমাধান করতে পারেনি।
সহিংস আন্দোলনে যাচ্ছেন পদবঞ্চিত নেতারা
আগামী ৮ নভেম্বরের আগে দাবি আদায় না হলে সহিংস আন্দোনে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ছাত্রদলের পদবঞ্চিত নেতারা। টুকু ও এ্যানীকে দল থেকে বহিষ্কারসহ কমিটি বাতিল করে নতুন কমিটি না দেয়া হলে কঠোর আন্দোলনে যাওয়া হবে। পদবঞ্চিত এক নেতা বলেন, ৭ নভেম্বর সিপাহী বিল্পব ও ৮ নভেম্বর বেগম খালেদা জিয়ার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সমাবেশের জন্য ৯ নভেম্বর থেকে আন্দোলনের ডাক দেয়া হবে।
তবে এর আগে ছাত্রদলের পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা বৈঠকের মধ্য দিয়ে কর্মসূচি ঘোষণা করবে। কর্মসূচির মধ্য থাকতে পারে- বিএনপির কার্যালয় ঘেরাওসহ অবরুদ্ধ, ছাত্রদলের নতুন কমিটিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা ও বিক্ষোভ মিছিল।
এই বিষয়ে তরিকুল ইসলাম টিটু বলেন, আমরা দলকে বিশ্বাস করেছিলাম। কিন্তু তারা আমাদের সাথে প্রতারণা করেছেন। তাই তাদেরকে আর কোন সুযোগ দেয়া হবে না। কারণ তারা দলকে ভাঙ্গার ষড়যন্ত্র করছেন। ফলে এবার দাবি আদায় না পর্যন্ত রাজপথ ছাড়া হবে না। আর তারা যদি সমাধানে আসতে চান তাহলে আন্দোলন এবং আলোচনা এক সাথে চলবে।
মন্তব্য চালু নেই