ছিলেন মাদকাসক্ত, এখন আলোর ফেরিওয়ালা
সিলেটের কুশিঘাট এলাকার বাসিন্দা ইমতিয়াজ রহমান ইনু একসময় ছিলেন মাদকাসক্ত৷ এখন তিনি সুস্থ হয়ে মাদকাসক্তদের সুস্থ জীবনে ফিরিয়ে আনার কাজ করছেন৷
যেভাবে মাদকাসক্ত হয়েছিলেন
সিলেটের কুশিঘাট এলাকার বাসিন্দা ইমতিয়াজ রহমান ইনু৷ ইভটিজিং-এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় ২০০০ সালে তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা চুরির অভিযোগ আনা হয়৷ সেই হতাশা কাটাতে এক বন্ধুর পরামর্শে প্রথমে সিগারেট, তারপর মাদকের সংস্পর্শে এসেছিলেন তিনি৷ পরে চিকিৎসা নিয়ে মাদকের আসক্তি থেকে মুক্ত হন৷
মাদকাসক্তদের সঙ্গে আলোচনা
চিকিৎসায় ভালো হয়ে সিলেটে ফেরার পর ইনুকে এড়িয়ে চলতো তাঁর আশেপাশের মানুষজন৷ তবে ইনু তাতে হতাশ না হয়ে মাদকাসক্তদের মাদকের ভয়াল থাবা সম্পর্কে সচেতন করার কাজ শুরু করেন৷ ছবিতে সিলেটের ঐতিহ্যবাহী ক্বীন ব্রিজের নীচে মাদকাসক্তদের আলোর পথে ফিরে আসার আহ্বান জানাচ্ছেন ইনু৷ এভাবে এখন পর্যন্ত ১৬ জনকে সুস্থ হতে সহায়তা করেছেন বলে জানান তিনি৷
শিশুদের জন্য স্কুল
মাদকাসক্তি কাটিয়ে ওঠার পরের সময়টাকে ‘বোনাস’ জীবন হিসাবে দেখছেন ইনু৷ এই জীবনে মানুষের জন্য কিছু করার তাড়না থেকে তিনি এখন নিজেকে সমাজসেবামূলক কাজে নিয়োজিত রেখেছেন৷ মাদকাসক্তদের আলোর পথে ফিরিয়ে আনার পাশাপাশি দরিদ্র শিশুদের জন্য একটি স্কুল চালু করেছেন৷ ২০০৭ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত তিনি নিজের টাকা খরচ করে এলাকার শিশুদের শিক্ষা দিয়েছেন৷ উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া জমিতে গড়ে তুলেছেন ‘ইনুর ইশকুল’৷
শিশুদের ইতিহাস শেখানো
ছবির এই জিনিসগুলো ইনু নিজেই কাগজ দিয়ে তৈরি করেছেন৷ এভাবে তিনি শিক্ষার্থীদের দেশের বিভিন্ন ইতিহাস, ঐতিহ্য সম্পর্কে ধারনা দেন৷
নারীদের জন্য সেলাই প্রশিক্ষণ
শিশুদের পাশাপাশি এলাকার দরিদ্র নারীদের কথাও ভেবেছেন ইনু৷ তাই তাদের সেলাই প্রশিক্ষণ দিতে দুটি সেলাই মেশিন কিনেছেন৷
পরিবারের সদস্যদের দায়িত্ব
ইনু বলেন, ‘‘মাদকাসক্ত কেউ আসক্তি কাটিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এলে তাকে সঠিক পথে রাখার জন্য পরিবারকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে৷ এছাড়া তার কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করাও জরুরি৷ না হলে আবারও একই অবস্থা হবার আশঙ্কা থাকে৷’’ ইনু জানালেন, তাঁর মা তাঁকেও ভালো পথে স্থায়ী হতে সহায়তা করেন৷ ‘সুস্থ’ হয়ে ফেরাদের জন্য কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে প্রবাসীদের প্রতিও আহ্বান জানান তিনি৷
মন্তব্য চালু নেই