বউকে ফোনে আসি আসি বলে নববর্ষ পার করেছি

পুলিশের ডিউটিতে রাত-দিন নেই। নেই ঈদ-পূজা, রোদ-বৃষ্টি, বর্ষবরণ— সব সময় একইরকম। তাদের লক্ষ্য একটাই— জনগণের সেবা নিশ্চিত করা। এবারের পহেলা বৈশাখও জনগণের নিরাপত্তা দিয়ে কেটেছে পুলিশের।

রাজধানীর উত্তরা (পশ্চিম) থানার অপারেশন অফিসার শাহ আলম বর্ষবরণ নিয়ে অনেকটা আক্ষেপের সুরে ওই কথাগুলো বলেন।

পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘বুধবার রাত ২টায় ঘুম থেকে উঠে দুই রাকাত নামাজ পরে রওনা দিই ডিউটিস্থল সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের উদ্দেশে। পৌঁছানোর পর থেকে ডিউটি শুরু।’

দর্শনার্থীদের ঠিকমতো চেক করে উদ্যানের ভেতরে প্রবেশ করানো তার দায়িত্ব। তা ছাড়া, যেকোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে চারপাশ নজরদারি করতে হয় তাকে। এসব করতে করতেই দুপুর ১টা বেজে যায় শাহ আলমের। ডিউটি শেষে থানায় ফেরেন বিকেল ৫টায়।

এখানেই শেষ হয়নি তার ডিউটি। শুরু হয় অন্য স্থানে ডিউটি। পশ্চিম থানাধীন সাতটি অনুষ্ঠানের তদারকি করতে হয় তাকে। তদারকি করতে করতে বেজে যায় রাত ১০টা।

শাহ আলম বলেন, ‘বউ বার বার ফোন দিয়েছে আর তাকে শুধু আসি আসি বলেই দিন পার করেছি। বউ-বাচ্চাকে সঙ্গ দেব— কিন্তু কপালে না থাকলে কী করার!’

এর মধ্যে আবার উত্তরা ১২ নম্বর সেক্টরে এক গৃহবধূ স্বামীর সঙ্গে অভিমান করে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার খবর আসে পুলিশ কর্মকর্তা শাহ আলমের কাছে। ছুটে যেতে হয় তাকে। সেখানে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল শেষে মামলা লিপিবদ্ধ করার পর বেজে যায় রাত ২টা। এর মাঝে স্ত্রী একাধিকবার ফোন দিলেও রিসিভ করতে পারেননি তিনি। শাহ আলমের আক্ষেপ— ‘এভাবেই চলে গেল পহেলা বৈশাখ!’

পুলিশের ভাবমূর্তি অক্ষুণ্ন রাখার জন্য নিরলস পরিশ্রম উল্লেখ করতে হয় জানিয়ে শাহ আলম বলেন, ‘উৎসবে পুলিশের দায়িত্ব বেশি থাকে। এ জন্য আমাদের নিরলস পরিশ্রম করতে হয়, আমরা ট্রেনিং থেকে এ শিক্ষা নিয়েছি।’



মন্তব্য চালু নেই