মৃত্যুর আগে ডায়েরীতে যা লিখে গেছেন নাজিম
গত বুধবার রাতে রাজধানীর সূত্রাপুরে খুন হওয়ার বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী নাজিমুদ্দিন সামাদের ব্যক্তিগত ডায়েরি উদ্ধার করেছে পুলিশ। ডায়েরির পাতায় উঠে এসেছে তার ভাবনা, শেষ ইচ্ছা, বান্ধবীর সঙ্গে আনন্দময় সময় কাটানো, সেই সময় ইসলামী ঐক্যজোটের নেতা মুফতি আমিনী, কৃষি ও শিক্ষায় দেশের এগিয়ে যাওয়া এবং একই সঙ্গে নকল রোধে চার দলীয় জোট সরকারের শিক্ষাপ্রতিমন্ত্রী এহসানুল হক মিলন ও বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের প্রতি কৃতজ্ঞা। বিশেষ করে বান্ধবীর সঙ্গে তার আবেগময় মুহূর্তের অংশটুকু তুলে ধরা হলো :
(এটি লেখা হয় ১৭-০৫-২০১১ তারিখে) আজ শুত্রুবার। সকাল ১১টা ৩০ মিনিটে ঘুম থেকে উঠলাম। ঘুম থেকে উঠেই রুমির ফোন। সে আমার জন্য রান্না করে বসে আছে। কখন গিয়ে নিয়ে আসবো। তার জন্য অপেক্ষা করছে। রুমি আমার ভার্সিটি ফ্রেন্ড। খুব ঘনিষ্ট মানুষ। রান্নার হাত মুটামুটি খারাপ না। তবে মামার রান্নার চেয়ে অনেক ভালো। গত রোজার মাসটা আমার ভালোই কেটেছে। প্রতিদিন অন্তত একবেলা সে আমাকে পেটপুরে খাইয়েছে।
এই একটি মেয়ে পেলাম যে আমার নাস্তিক্যবাদ জেনেও ঘৃণা করেনি। আমাকে ছেড়ে যায়নি। আমি এই বন্ধুটির কাছে খুবই কৃতজ্ঞ। দিনে অন্তত ৬/৭ বার সে আমার খুঁজ নেয়। রুমি একটু আবেগী তবে বন্ধু হিসেবে সে খুব ভালো। কোনো বিষয় নিয়ে টানা-হেঁচড়া করে না। ওর সাথে আমার পরিচয় শ্রীমঙ্গলে পিকনিকে। ফটো তুলতে গিয়ে। লাল পিপড়ার কামড়ে ওর নাচ মনে হলে এখনো হাসি পায়।যাই হোক ২টার সময় গিয়ে খাবারটা নিয়ে আসলাম। হিদল শুটকি ভর্তা, হিদল আলু রান্না আর কালোজিরা চাউলের ভাত। খুব স্বাদ পেলাম। মোহনও শরীক হলো। তবে ঝালের চোটে দুজনই একটু নাচলাম।
মেসের একটা ছোট্ট সমস্যা। রেজা আর জসিম টাকা দেয়া নিয়ে সমস্যা করছে। আমি গতমাস থেকে ম্যানেজার হয়েছি। এই কাজীটুলা মেসে আজ ৭ মাস। মেসের সব নিয়ম হ-য-ব-র-ল। এবার সুযোগটা পেয়েছি লাইনে আনার। নোটিশ টানিয়ে দিয়েছি। আজকে কেউ টাকা জমা না দিলে কাল থেকে তার মিল বন্ধ। রেজা বাড়াবাড়ি করছে। আগের মেস থাকে ঘাড় ধরে বের করে দিয়েছে।
রকি আর জসিমকে আমার রুমে জায়গা দিয়েছি। চারজনের গাদাগাদি রুম। কষ্ট হলেও কিছু বলিনি। কিন্তু সে ইদানিং আমার আর রুনি সম্পর্কে আজেবাজে বলছে।
মন্তব্য চালু নেই