স্বাস্থ্যবীমা কার্ড পাচ্ছে ৩০ হাজার পরিবার
‘স্বাস্থ্য সুরক্ষা কর্মসূচি’র নামে স্বাস্থ্যবীমা (হেলথকার্ড) প্রকল্পের আওতায় দেশে প্রথম বারের মতো ৩০ হাজার দরিদ্র পরিবারকে স্মার্ট স্বাস্থ্যবীমা কার্ড প্রদান করবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সার্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা (ইউনিভার্সেল হেলথ কভারেজ) সিদ্ধান্তের আলোকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সকলের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার উদ্যোগের অংশ হিসেবে এ কার্যক্রম চালু হচ্ছে।
আগামী ২৪ মার্চ টাঙ্গাইলের তিন উপজেলায় (মধুপুর, কালিহাতি ও ঘাটাইল) এই প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। ঐদিন দুপুরে কালিহাতি উপজেলায় স্বাস্থ্য কার্ড বিতরণের মধ্য দিয়ে এই কর্মসূচির তিনি উদ্বোধন করবেন।
প্রকল্পের ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠান হিসেবে বীমা সংস্থা গ্রিন ডেল্টা ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিকে নিযুক্ত করা হয়েছে। ২০১৬ সালের ১৯ ডিসেম্বর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সাথে গ্রীন ডেল্টা ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির সঙ্গে এ সংক্রান্ত এক চুক্তি স্বাক্ষর হয়। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে স্বাস্থ্য সুরক্ষা কর্মসূচির অংশ হিসাবে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মাঝে বিনামূল্যে আধুনিক চিকিৎসা সেবা দিতে এই কার্ড প্রদান করা হচ্ছে। ঐ তিন উপজেলায় পরিবার প্রতি একজনকে সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকার চিকিৎসা সুবিধা দিতে স্বাস্থ্য কার্ড বিতরণ করা হবে। এই কার্ডধারী ব্যক্তিগণ পঞ্চাশটি নির্দিষ্ট জটিল রোগের চিকিৎসাসেবা পাবেন উপজেলা ও জেলা পর্যায়ের সরকারি হাসপাতাল থেকে।
স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিটের মহাপরিচালক মো. আসাদুল ইসলাম বাসসকে জানান, স্মার্টকার্ডের আওতায় প্রাথমিক ভাবে ৩০ হাজার পরিবারের সদস্য সাধারণ জ্বর, ঠান্ডা, কাঁশি থেকে শুরু করে হাড় ভাঙ্গা, গল ব্লাডার, এপেনডিসাইটিস, হার্নিয়া, হার্ট, কিডনিজনিত দীর্ঘমেয়াদি জটিলতাসহ ৫০ ধরনের চিকিৎসা বিনামূল্যে পাবেন। তবে এই তিন উপজেলায় প্রায় ১ লাখ পরিবারকে হেলথকার্ড প্রদানের জন্য তালিকা করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে আমরা সবাইকে এই কার্ডের আওতায় নিয়ে আসবো বলেও জানান তিনি।
আসাদুল ইসলাম বলেন, এই কার্ড প্রদানের জন্য ইতোমধ্যে মধুপুর, কালিহাতি ও ঘাটাইল এই তিন উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে আমাদের টিম কাজ করছে। যে সকল পরিবার গুলোকে তালিকা ভুক্ত করা হয়েছে তাদের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ এবং নাম, ঠিকানা রেজিস্ট্রেশন করা হচ্ছে।
জানাগেছে, স্বাস্থ্যবীমা কার্ড যাদের দেয়া হবে তারা সকলেই দারিদ্র সীমার নীচে বসবাস করছেন। মূলত তিনটি শর্তপূরণ সাপেক্ষে দরিদ্র পরিবারের সদস্যদের চিহ্নিত করা হয়। যে সকল পরিবারের বসবাসের ঘরবাড়ি, জমিজমা ও স্থায়ীভাবে উপার্জনের উপায় নেই তারাই এর আওয়াতাভুক্ত।
এ প্রসঙ্গে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেন, জনগণের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এজন্য স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয় নানাবিধ কর্মসূচি গ্রহণ করছে। তারই ধারাবাহিকতায় দেশের তৃণমূল পর্যায়ে ‘স্বাস্থ্য সুরক্ষা কর্মসূচি’র নামে স্বাস্থ্যবীমা (হেলথকার্ড) প্রকল্প গ্রহণ করেছে সরকার।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে অতি দরিদ্র মানুষ যেন বিনামূল্যে জটিল রোগের চিকিৎসা করাতে পারে সেলক্ষ্যে স্বাস্থ্য সুরক্ষা কর্মসূচির কাজ হাতে নেয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য কার্ডধারী ব্যক্তি যেন সহজে চিকিৎসা পেতে পারেন সেজন্যে সংশ্লিষ্টদেরকে সচেতন থাকতে হবে।
বাসস
মন্তব্য চালু নেই