মাথাব্যথার অস্বাভাবিক কিছু কারণ এবং প্রতিকারের উপায়
মাথাব্যথা খুবই সাধারণ একটি সমস্যা। বেশিরভাগ মানুষই মাথাব্যথা সারানোর জন্য যা করে তা হল – ব্যথার ঔষধ খায়, বেশি করে পানি খায়, বিশ্রাম নেয় অথবা মাথা ব্যথা চলে যাওয়ার জন্য অপেক্ষা করে। মাথাব্যথা হলে স্বাভাবিক ভাবে কোন কাজ করা যায়না। প্রতিটা মানুষই জীবনের কোন না কোন সময়ে মাথা ব্যথায় ভোগেন। বেশিরভাগ মাথাব্যথাই মারাত্মক কোন অসুখের কারণে হয়না। মাথাব্যথা যদি তীব্র হয়, খুব ঘন ঘন হয় এবং অস্বাভাবিক মনে হয় তাহলে যে কেউ চিন্তিত হয়ে ওঠেন। এসব ক্ষেত্রে সবচেয়ে সাধারণ যে চিন্তাটা মাথায় আসে তা হল ব্রেইন টিউমার। আপনার মাথাব্যথার ধরনটি নিয়ে ডাক্তারের সাথে কথা বললে তিনি পরীক্ষা নিরীক্ষার মাধ্যমে সেটির কারণ বের করতে পারবেন। তাঁর পরামর্শে আপনি সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন কীভাবে ব্যথা কমানো যায় বা সম্পূর্ণ রুপে ব্যথা কীভাবে দূর করা যায়। এটা হতে পারে যখন ব্যথা শুরু হবে তখন ঔষধ সেবন করে বা নিয়মিত ঔষধ সেবন করে বা আপনি যে ঔষধ খাচ্ছেন তা বন্ধ করার মাধ্যমে। তাই মাথাব্যথার অন্তর্নিহিত কারণ জানাটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আসুন তাহলে মাথাব্যথার কিছু কারণ সম্পর্কে জেনে নিই।
১। কোষ্ঠকাঠিন্য বা বিরক্তিকর পেটের সমস্যা
অনেক গবেষণায় পাওয়া গেছে যে, মাথাব্যথার সাথে কোষ্ঠকাঠিন্য বা বিরক্তিকর পেটের সমস্যার সম্পর্ক আছে। অনেক রোগীর ক্ষেত্রেই দেখা গেছে যে কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময়ের সাথে সাথে মাথাব্যথা ভালো হয়েছে। তাই যদি আপনার এই ধরণের কোন সমস্যা থাকে তাহলে আগে এগুলো নিরাময়ের চেষ্টা করুন।
২। অতিরিক্ত ঔষধ সেবন
মাথাব্যথা রোগের খুবই সাধারণ একটি কারণ হচ্ছে মাত্রাতিরিক্ত ঔষধ সেবন। গবেষকেরা হিসাব করে দেখেছেন যে বিশ্বব্যাপী এর প্রাদুর্ভাব ১-২%। পরিহাসের বিষয় হল, চিকিৎসকেরা দেখেছেন যে মাথাব্যথা ও অ্যালার্জির ঔষধের অনুপযুক্ত ব্যবহার মাথাব্যথা বৃদ্ধি করে থাকে। যখন নিয়মিত মাথাব্যথার ঔষধ খাওয়া হয় তখন মাথায় অনেক বেশি ব্যথার সেন্সর তৈরি হয়। মাথায় এই সেন্সর গুলো অনেক বেশি পরিমাণে থাকে এবং মাথা অনেক বেশি স্পর্শকাতর। তাই মাথাব্যথাও যায় না। তাই যদি আপনার মাথাব্যথা বা মাইগ্রেশন থাকে এবং ঔষধ সেবনের পরেও যদি উপসর্গ গুলো না যায় তাহলে আপনার চিকিৎসকের সাথে কথা বলুন।
৩। আবহাওয়ার পরিবর্তন
গবেষণায় পাওয়া গেছে যে, জলবায়ুর পরিবর্তনের ফলে যেমন-ঠান্ডা অথবা গরমের কারণে ২০%-৩০% মানুষের মধ্যে মাইগ্রেনের সমস্যা সৃষ্টি হয়। এর কারণ হচ্ছে, হঠাৎ করে আবহাওয়ায় পরিবর্তন হলে মস্তিষ্ক সেরেটোনিন নামের স্ট্রেস হরমোন নিঃসরণ করে যার ফলে মাথাব্যথা হতে পারে।
৪। পানিশূন্যতা
যদি আপনার নিয়মিত মাথাব্যথা হয় এবং এর সাথে বমিবমি ভাব ও শরীরে ব্যথা থাকে তাহলে বুঝতে হবে যে আপনি পানিশূন্যতায় ভুগছেন। এই অনবরত মাথাব্যথা থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য যথেষ্ট পরিমাণে পানি পান করুন।
৫। কম্পিউটারের স্ক্রিন
আপনি যদি সারাদিন কম্পিউটারে কাজ করেন তাহলে তা আপনার চোখের উপর প্রচুর পরিমাণে চাপ পরে। কম্পিউটারের উজ্জ্বল আলো চোখের রেটিনাকে এবং চোখের পেছনের স্নায়ুকে সক্রিয় করে। যার ফলে মাথাব্যথা হতে পারে। তাই প্রতি এক ঘন্টা পর পর দশ মিনিট করে বিরতি নিন এবং কলিগের সাথে কথা বলুন বা হেঁটে আসুন অথবা পেপার পড়ুন। তারপরও যদি মাথব্যথা থাকে তাহলে কম্পিউটার স্ক্রিনের উপর অ্যান্টি গ্লেয়ার শিল্ড লাগিয়ে নিন এবং কাজ করার সময় সোজা হয়ে বসুন।
৬। অনেক বেশি ক্যাফেইন গ্রহণ
চিকিৎসকদের মতে ঘন ঘন মাথাব্যথা হওয়ার আরেকটি সাধারণ কারণ হচ্ছে ক্যাফেইনের উপর নির্ভরশীলতা। আসলে ১০০ গ্রাম ক্যাফেইন মাথা ব্যথার কারণ হতে পারে। যদি মাথাব্যথা থেকে মুক্তি পেতে চান তাহলে ক্যাফেইন গ্রহণের পরিমাণ কমিয়ে দিন।
তাছাড়া অনেক শক্ত করে চুল বাঁধলেও মাথাব্যথা হতে পারে, পেট্রল, তামাক ও সুগন্ধির কারণেও অনেকের মাথাব্যথা হতে পারে, সম্পর্কের স্ট্রেসের কারণেও মাথাব্যথা হতে পারে।
মন্তব্য চালু নেই