জাতীয় পরিচয়পত্রে আঙুলের ছাপ না থাকলে যা করবেন

সারা দেশে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে মোবাইল সিম নিবন্ধন করতে নাগরিকদের কাছ থেকে আঙুলের ছাপ নেওয়া হচ্ছে। আঙুলের এই ছাপ মিলিয়ে দেখা হচ্ছে জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) সঙ্গে। কিন্তু যাঁদের এনআইডিতে আঙুলের ছাপ নেই বা যাঁরা এখনো এনআইডি কার্ড পাননি, তাঁদেরকে মোবাইল সিমকার্ড নিবন্ধন করতে গিয়ে ব্যাপক ঝামেলা পোহাতে হচ্ছে।

এই পরিপ্রেক্ষিতে এনআইডি নিবন্ধন অনুবিভাগের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, নাগরিকদের এ নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার মতো কিছু নেই। যাঁদের এনআইডিতে আঙুলের ছাপ নেই, তাঁদের উপজেলা নির্বাচন কার্যালয়ে গিয়ে যোগাযোগ করতে হবে। সেখানেই তাদের আঙুলের ছাপ নিয়ে নেওয়া হবে।

জানা গেছে, দেশে বর্তমানে ভোটার সংখ্যা প্রায় ১০ কোটি। এদের মধ্যে এখনো এনআইডি হাতে পায়নি প্রায় এক কোটি নাগরিক। আবার যারা এটা হাতে পেয়েছে তাদের অনেকের এনআইডিতেই রয়েছে নানা ভুল। আর এগুলো সংশোধন করতে গিয়ে তাদের পোহাতে হচ্ছে চরম ভোগান্তি।

এরই মধ্যে এখন আবার মোবাইল সিম নিবন্ধন করতে নাগরিকদের বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে আঙুলের ছাপ দিতে হচ্ছে। এ নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে আরেক ভোগান্তি। কারণ সেখানে গিয়ে দেখা যাচ্ছে, অনেক এনআইডি কার্ডধারী নাগরিকেরই সেখানে আঙুলের ছাপ নেই। এ জন্য অনেকেই মনে প্রশ্ন তাহলে কি তার এনআইডি কার্ড বাতিল?

বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিমকার্ড নিবন্ধন করতে গিয়ে এ রকম ভোগান্তির শিকার হয়েছেন শিখা বেগম (ছদ্মনাম)। তিনি জানান, মোবাইল সিম নিবন্ধন করতে গিয়ে তিনি জানতে পারেন তাঁর এনআইডি কার্ডে আঙুলের ছাপ নেই, তাই এটা চলবে না। তাঁর আঙুলের ছাপ দেওয়ার জায়গায় আইডি কার্ডে লাল কালি দিয়ে লেখা রয়েছে ‘আঙুলের ছাপ নাই’।

শিখা বেগম জানান, তিনি এনআইডির জন্য আঙুলের ছাপ দিয়েছিলেন। কিন্তু এখন সেখানে তাঁর আঙুলের ছাপ নেই।

শিখার প্রশ্ন, তাহলে কি তাঁর আইডি কার্ড বাতিল? এতদিন যে তিনি এটা বহন করলেন! এই প্রশ্ন শুধু শিখার একার নয়। ভোগান্তিতে পড়া দেশের লাখো নাগরিকের মনে রয়েছে এই প্রশ্ন।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সুলতানুজ্জামান মো. সালেহ উদ্দিন জানান, মোবাইল কোম্পানি ও বাংলাদেশ টেলি কমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশনকে (বিটিআরসি) বলা আছে, যদি কোনো নাগরিকের আঙুলের ছাপ নিয়ে কোনো সমস্যা দেখা দেয় তাহলে তিনি যেন উপজেলা নির্বাচন কার্যালয়ে যোগাযোগ করেন। নাগরিকের এনআইডিতে আঙুলের ছাপ আছে কি না, সেটি মোবাইল কোম্পানিগুলো পরীক্ষা করছে ঠিকই কিন্তু অনেক সময় তাদের ডিভাইসে হয়তো কাজ করে না বা অনেক নাগরিকের আঙুলের ছাপ অস্পষ্ট বা বুঝা যায় না বা অনেকের নাও থাকতে পারে। যদি কোনো নাগরিক এ রকম সমস্যায় পড়েন, তবে তিনি যেন তাঁর নিজ উপজেলায় বা থানা কার্যালয়ে যোগাযোগ করেন।

জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক আরো বলেন, এটা নিয়ে নাগরিকদের বেশি চিন্তা করার কিছু নেই। কোনো এনআইডি কার্ডধারী নাগরিকের আঙুলের ছাপ দেওয়া আছে কি না সেটি তিনি নিজ উপজেলা বা থানা নির্বাচন কার্যালয়ে গেলেই পরীক্ষা করে জানতে পারবেন। প্রত্যেক উপজেলা/থানা নির্বাচন কার্যালয়কে এ রকম নির্দেশনা দেওয়া আছে। যদি সেখানে পরীক্ষা করে দেখা যায় যে কারো আঙুলের ছাপে সমস্যা রয়েছে বা ছাপ নেই, তাহলে তখনই তিনি সেখানে আঙুলের ছাপ দিতে পারবেন।



মন্তব্য চালু নেই