ঝুঁকিতে হাজার হাজার যাত্রী
রেলস্টেশন ও স্থলবন্দরে ‘জিকা ভাইরাস’ শনাক্তকরণে নেই কোন ব্যবস্থা
শামীম রেজা, চুয়াডাঙ্গা থেকে: চুয়াডাঙ্গার দর্শনা আর্ন্তজাতিক রেলস্টেশন ও স্থলবন্দর চেকপোস্টে জিকা ভাইরাস শনাক্তকরনে সর্তকতা জারি করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ। ৪ সদস্যের মেডিক্যাল টিম গঠন করে শনিবার থেকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার কাজ শুরু করার কথা বললেও আজ সোমবার পর্যন্ত এর কোন তৎপরতা চোখে পড়েনি।
দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. প্রফুলল কুমার মজুমদারের নের্তৃত্বে এ মেডিক্যাল টিমে রয়েছেন আরএমও ডা. আব্দুল বাতেন, সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক মোঃ শাহ জামাল ও ভ্যাকসিনেটর মহিদুল ইসলাম।
সরেজমিনে আজ সোমবার সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত যে সমস্ত পাসপোর্টধারী যাত্রীরা বিশেষ করে উত্তর আমিরিকাসহ জিকা ভাইরাস আক্রান্ত দেশের নাগরিকরা ভারত থেকে বাংলাদেশে ভ্রমন করছেন তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য কোন তৎপরতা দেখা যায়নি। যাত্রীদের নির্দেশনা দিতে সংশিলষ্ট এলাকায় কোন ব্যানার চোখে পড়েনি। দর্শনা আন্তর্জাতিক রেলস্টেশনে ‘টিকা’ খাওয়ানোর নির্দেশনা দিতে একটি ব্যানার অবশ্য দেখা গেছে। তবে এখন পর্যন্ত জিকা ভাইরাস আক্রান্ত কাউকে পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন সংশিলষ্টরা।
সম্প্রতি উত্তর আমেরিকাসহ বিশ্বের ২০ টি দেশে জিকা ভাইরাসের প্রাদূর্ভাব দেখা দেয়ায় এ নিয়ে সারাবিশ্বে উদ্বিগ্ন সকলেই। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এ ২০টি দেশে রেড এ্যালার্ট জারি করেছে। এরই অংশ হিসেবে সচেতন হয়েছে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য বিভাগও।
দেশের সীমান্তের চেকপোস্ট গুলোতে বিশেষ করে যে সমস্ত চেকপোস্ট দিয়ে জিকা ভাইরাস আক্রান্ত দেশের নাগরিকরা ভ্রমন করেন সে সমস্ত চেকপোস্টে মেডিক্যাল টিম গঠন করে স্বাস্থ্য পরীক্ষার ব্যাপারে তৎপরতা বাড়ানো হচ্ছে।
দর্শনা আর্ন্তজাতিক রেলস্টেশন দিয়ে ভারত বাংলাদেশের একমাত্র যাত্রীবাহী মৈত্রী ট্রেনে প্রতিদিন গড়ে ৪ শতাধিক যাত্রী ভ্রমন করেন। এদের মধ্যে ভারত, বাংলাদেশ ছাড়াও বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নাগরিকরা থাকেন। সোমবার বেলা সাড়ে ১১ টায় এ ট্রেনে ভারত থেকে বাংলাদেশে আসেন ৩২৫ জন যাত্রী। তাদের স্থাস্থ্য পরীক্ষার কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। সেই সঙ্গে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য বিভাগের এই বাড়তি সর্তকতার কোন প্রভাবই চোখে পড়েনি।
চুয়াডাঙ্গার দর্শনা আন্তর্জাতিক রেলস্টেশনে স্বাস্থ্য সেবা দিতে দায়িত্বে আছেন স্বাস্থ্য পরিদর্শক মোঃ শাহ জামাল। তিনি বলেন, ব্যানার টাঙানোর বিষয়ে আমাদের কোন নির্দেশনা আসেনি। তবে আমরা ‘জিকা ভাইরাস’ প্রতিরোধের জন্য সচেতন আছি। কোন যাত্রী যদি শারীরিক সমস্যা মনে করে তাহলে আমাদের কাছে আসলেই আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।
এদিকে দর্শনা স্থলবন্দর চেকপোস্ট স্বাস্থ্য পরীক্ষা করছেন ভ্যাকসিনেটর মহিদুল ইসলাম, তিনি জানান,এ চেকপোস্ট দিয়ে প্রতিদিন সকাল ৭টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত ভারত থেকে বাংলাদেশে ভ্রমনে আসা যাত্রীদের ‘জিকা ভাইরাস’ শনাক্তকরণের কোন ব্যবস্থা নেই। তাছাড়া ‘জিকা ভাইরাস’ তবে এখানে কোন যাত্রী চাইলে আমাদের মাধ্যমে চিকিৎসা নিতে পারে। তিনি বলেন, যাত্রীর তুলনায় এখানে লোকবল কম থাকায় সকল যাত্রীর প্রতি খেয়াল রাখা সম্ভব হচ্ছে না।
চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকলাপনা কর্মকর্তা ডা. প্রফুলল কুমার মজুমদার জানান, ‘জিকা ভাইরাস’ প্রতিরোধে ঢাকা থেকে আমাদের কোন নির্দেশনা আসেনি। সে কারনে এ জাতীয় রোগী সনাক্ত হলে আমাদের করণীয় কি তা আমাদের জানা নেই। তাছাড়া মেডিকেল টিমের কাজ কি হবে তা আমরা বুঝতে না পারায় মেডিকেল টিম গঠন করাও হয়নি। সে ক্ষেত্রে যাত্রীদের ঝুঁকি থাকলেও আমাদের করণীয় নেই।
মন্তব্য চালু নেই