ঠাকুরগাঁওয়ে সুগারমিলে আখ সরবরাহে ভোগান্তি চাষিদের
শরিফুল ইসলাম, ঠাকুরগাঁও থেকে: সরকার সুগারমিল কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে ঠাকুরগাঁওয়ের আখ চাষিদের সার, বীজ, কীটনাশক ও ঋণ সহায়তা প্রদান করলেও দিন দিন আখের আবাদ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন চাষিরা। ফলে জেলার একমাত্র সুগারমিল আগামী মৌসুমে আখ সংকটে পড়বে বলে আশংকা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
ঠাকুরগাঁও সুগারমিল চিনি উত্পাদনের মাধ্যমে সারাদেশের চাহিদা পূরণে ব্যাপক ভূমিকা রাখছে। এ জেলায় দিন দিন আখের আবাদ কমে যাওয়ায় প্রতিবছর মিল চালুর করার পর আখ সংকটের কারণে অল্প দিনের মধ্যেই তা বন্ধ হয়ে যায়।
এছাড়া পুরাতন যন্ত্রপাতির কারণে অনেক সময় মিল দুই তিন দিন বন্ধ থাকে। তখন আখ সরবরাহের ক্ষেত্রে চাষিরা ভোগান্তি ও হয়রানির পাশাপাশি লোকসানের শিকার হচ্ছে। আবার দেখা যায় সুগারমিলের যে ফার্ম আছে সেখানে সুগারমিল আখ চাষ করে না। সেগুলো লিজ দেয়া হচ্ছে।
আখের পরিবর্তে আবাদ করা হচ্ছে অন্য ফসল। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন মিলটিকে আধুনিকায়ন ও আখ চাষে সার্বিক সুবিধাসহ চাষিদের উদ্বুদ্ধ করা না হলে বিপাকে পড়তে হবে মিল কর্তৃপক্ষকে। দিন দিন কমবে আখ চাষ।
আকচা গ্রামের শামসুল আলম জানান, ভালোভাবে আখ চাষ করতে প্রতি একরে সময় লাগে ১৮ মাস পর্যন্ত। আর খরচ হয় ৩৫-৪০ হাজার টাকা। কিন্তু আখ চাষে দীর্ঘ সময়ের কারণে হারাতে হয় ৩টি রবিশস্য ও এক মৌসুমের আমন চাষ। আবার হয়রানির শিকার হতে হয় মিলে আখ সরবরাহ করতে গিয়ে।
এ অবস্থায় আখ চাষ করে লোকসান গুণতে হয়। এ বিষয়ে জেলা আখ চাষি সমিতির সভাপতি রুহুল আমিন জানান, আমরা আশা করছি মিলটি দ্রুত আধুনিকায়ন করা হলে চাষিরা লাভবান হবে। চাষাবাদও বাড়বে।
জেলা কৃষি বিভাগের উপ-পরিচালক আরশেদ আলী জানান, গেল মৌসুমে ৬ হাজার ৫শ একর জমিতে আখ চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও চাষ হয়েছে ৫ হাজার ৫ একর জমিতে। আর চলতি মৌসুমে ৭ হাজার ৮০ একর জমিতে আখ চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
আর এর মধ্যে অর্জিত হয়েছে ৩ হাজার একর জমির আখ চাষ। তবে চাষিদের উদ্বুদ্ধ ও আখ সরবরাহে হয়রানি না হলে আখ চাষ বৃদ্ধি পাবে বলে মনে করেন এই উপ-পরিচালক।
এ বিষয়ে সুগারমিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী এনায়েতুল্লাহ খাঁন জানান, সরকারের প্রচেষ্টায় আমরা চেষ্টা করছি দ্রুত মিলটিকে আধুনিকায়ন করার জন্য। আর মিলটি আধুনিকায়ন করা গেলে এসব সমস্যা থাকবে না। তারপরও আমরা চাষিদের সাথে সমন্বয় করছি যেন আখ চাষ বৃদ্ধি পায়।
মন্তব্য চালু নেই