বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থা ৯টি প্রধান চ্যালেঞ্জের মুখে

অদক্ষ শিক্ষক ও নিম্নমানের শিক্ষাপদ্ধতিসহ বাংলাদেশের শিক্ষার মানোন্নয়নের অন্তরায় হিসেবে ৯টি প্রধান চ্যালেঞ্জ রয়েছে। সম্প্রতি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর এবং বিশ্বব্যাংক মিশনের বাংলাদেশে শিক্ষা সমীক্ষায় এসব তথ্য প্রকাশ করা হয়।

সমীক্ষার প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, এদেশে অদক্ষ শিক্ষক, নিম্নমানের শিক্ষণপদ্ধতি, ত্রুটিপূর্ণ পরীক্ষা পদ্ধতি, শিক্ষায় অপ্রতুল বাজেট, শিক্ষার্থী উদ্বাস্তু হওয়া, স্কুলের অপ্রতুলতা, ধনী-দরিদ্র বৈষম্য, শিক্ষার গুণগতমানের ঘাটতি ও দরিদ্রতার কারণে বাংলাদেশের শিাব্যবস্থা চ্যালেঞ্জের মুখে আছে। শিাব্যবস্থায় এসব কারণের প্রায় সবই দীর্ঘস্থায়ী প্রকৃতির। সে জন্য দু’দশক ধরে চলমান ‘উপবৃত্তি’ কর্মসূচিও এই বাধা পেরিয়ে সুফল আনতে পারেনি। যে কারণে স্কুলে ভর্তি বাড়লেও ঝরে পড়ার হার কমছে না। একইভাবে শিার মানেও পড়ছে নেতিবাচক প্রভাব।

জানা যায়, দারিদ্র্যের কারণে এখনও প্রায় ৫০ লাখের বেশি শিশু স্কুলের বাইরে থেকে গেছে। তাদের একটি বড় অংশ শহরের বস্তিতে অথবা প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে বাস করে। যেসব শিশুর পরিবার সদ্য বস্তিতে এসে উঠেছে তাদের মধ্যে ঝরে পড়ার ঝুঁকি বেশি। এসব শিশুকে চাহিদাকেন্দ্রিক (দারিদ্র্য ও শিখনের অসুবিধা) সমস্যার পাশাপাশি সরবরাহকেন্দ্রিক (ধারে কাছে পর্যাপ্ত স্কুলের অভাব) সীমাবদ্ধতার মোকাবিলা করতে হচ্ছে। স্কুলের বাইরে থাকা এবং ভর্তি হতে না পারার ঝুঁকিতে থাকা শিশুদের শিাব্যবস্থা করা বাংলাদেশের পক্ষে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।

আশার কথা হলো প্রাক-প্রাথমিক স্তরে শিশুদের সংখ্যা বাড়ছে, তবে এটা মাত্র ২৩ ভাগ। কাঙ্খিত দক্ষতা অর্জন না করায় এখনও প্রথম শ্রেণিতে ৭ এবং পঞ্চম শ্রেণিতে ১০ ভাগ শিার্থী পুনরাবৃত্তির শিকার হয়ে থাকে। ২৪ ভাগ শিার্থী পঞ্চম শ্রেণি পাসের পর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি হয় না। প্রতি ১০ জন প্রাথমিক শিার্থীর মধ্যে ৭-৮ জন পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত যেতে পারে, ৬ থেকে ৭ জন ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত আর ৫ জন দশম শ্রেণির কোটায় পৌঁছতে পারে এবং মাত্র ৩ থেকে ৪ জন কোনও শ্রেণিতে পুনরাবৃত্তি না করে উচ্চমাধ্যমিক শ্রেণির গন্ডি পেরিয়ে যেতে পারে।

প্রতিবেদনে শিক্ষা ক্ষেত্রে বাজেট প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, দেশে শিক্ষা খাতে বিগত ৪ বছরে বাজেট বরাদ্দ ক্রমাগত কমছে। উন্নয়ন ও অনুন্নয়ন মিলিয়ে ২০১০-১১ অর্থবছরে বাজেটের মোট ব্যয়ের ১৩ দশমিক ৯ শতাংশই বরাদ্দ ছিল শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতে। ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ১১ দশমিক ৭ শতাংশে নেমে এসেছে। কিন্তু আগামী ১০ বছরে উদীয়মান অর্থনীতিতে পরিণত হতে হলে বাংলাদেশকে মাধ্যমিক, কারিগরি, বৃত্তিমূলক, উচ্চশিায় বিনিয়োগ বাড়াতে হবে।



মন্তব্য চালু নেই