পুলিশ সপ্তাহের প্যারেডে প্রথমবারের মতো নারী অধিনায়ক
প্রথমবারের মতো পুলিশ সপ্তাহের প্যারেডে নেতৃত্ব দেবেন একজন নারী পুলিশ কর্মকর্তা। তার নেতৃত্বেই প্রধানমন্ত্রীকে সালাম জানাবে সহস্রাধিক পুলিশ। এটাকে লিঙ্গ বৈসম্য কমাতে ও নারীর ক্ষমতায়নে একটি নতুন মাইলফলক হিসেবেই মনে করা হচ্ছে।
সোমবার বিকেলে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ তথ্য দেয়া হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘চার দিনব্যাপী (২৬-২৯ জানুয়ারি) পুলিশ সপ্তাহ ২০১৬ শুরু হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সপ্তাহের প্রথম দিন সকালে রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স মাঠে বর্ণাঢ্য পুলিশ প্যারেডের মধ্য দিয়ে পুলিশ সপ্তাহ উদ্বোধন করবেন। তিনি সারাদেশের বিভিন্ন পুলিশ ইউনিটের সমন্বয়ে গঠিত ১৩টি কন্টিনজেন্টের প্যারেড পরিদর্শন ও অভিবাদন গ্রহণ করবেন।’ প্যারেডে নেতৃত্ব দেবেন চাঁদপুর জেলার পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার।
পুলিশ সপ্তাহ উপলক্ষে মহামান্য রাষ্ট্রপতি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এবং ইন্সপেক্টর জেনারেল, বাংলাদেশ পুলিশ পৃথক পৃথক বাণী দিয়েছেন।
রাষ্ট্রপতি তার বাণীতে উল্লেখ করেছেন, ‘দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে নিয়োজিত বাংলাদেশ পুলিশ। শতাব্দীর ঐতিহ্যবাহী এ প্রতিষ্ঠানটি জনগণের জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তা বিধান, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ দমনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে যা সর্বমহলে প্রশংসিত। শৃঙ্খলা-নিরাপত্তা-প্রগতি, এই মূলমন্ত্রে দীক্ষিত হয়ে বাংলাদেশ পুলিশ জনসেবা প্রদান ও জননিরাপত্তা বিধানে আরো পেশাদার এবং আন্তরিক হবে-এ আমার দৃঢ় বিশ্বাস।’
প্রধানমন্ত্রীর বাণীতে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদের আন্তর্জাতিক, আঞ্চলিক ও স্থানীয় চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশ পুলিশের ভূমিকা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছে। দেশের সকল প্রয়োজন ও সঙ্কটকালে বাংলাদেশ পুলিশ জনগণের জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তা বিধানে দেশপ্রেম, নিষ্ঠা ও পেশাদারিত্বের সাথে দায়িত্ব পালন করছে। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনেও পুলিশের সাফল্য ও গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা বাংলাদেশকে বৈশ্বিক পরিমণ্ডলে অনন্য মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করেছে।’
পুলিশ সপ্তাহে ২০১৫ সালে অসীম সাহসিকতা, বীরত্বপূর্ণ কাজ, দক্ষতা, কর্তব্যনিষ্ঠা, সততা ও শৃঙ্খলামূলক আচরণের মাধ্যমে প্রশংসনীয় অবদানের জন্য ১৯ জন পুলিশ সদস্যকে ‘বাংলাদেশ পুলিশ পদক (বিপিএম)’, ২০ জনকে ‘রাষ্ট্রপতি পুলিশ পদক (পিপিএম)’, ২৩ জনকে ‘বাংলাদেশ পুলিশ পদক (বিপিএম)-সেবা’ ও ৪০ জনকে ‘রাষ্ট্রপতি পুলিশ পদক (পিপিএম)-সেবা’ এ চার ধরনের পদক প্রদান করা হবে। প্রধানমন্ত্রী তাদেরকে পদক পরিয়ে দেবেন।
পুলিশ সপ্তাহের অন্যান্য অনুষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে প্রথম দিন মঙ্গলবার ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের সাথে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সম্মেলন, দ্বিতীয় দিন বুধবার ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ, বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সাথে আইজিপির সম্মেলন, বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস এসোসিয়েশনের বার্ষিক সাধারণ সভা, তৃতীয় দিন বৃহস্পতিবার ঊর্ধ্বতন পুলিশ অফিসারদের উদ্দেশে রাষ্ট্রপতির ভাষণ, পুরস্কার বিতরণ (আইজি’জ ব্যাজ, শিল্ড প্যারেড, অস্ত্র বা মাদক উদ্ধার প্রভৃতি), পুলিশ অফিসার্স মেসের বার্ষিক সাধারণ সভা এবং অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসারদের সাথে কর্মরত পুলিশ অফিসারদের পুনর্মিলনী। শেষদিন শুক্রবার আইন-শৃঙ্খলা ও অপরাধ সংক্রান্ত মতবিনিময় সভার মধ্য দিয়ে সমাপ্ত হবে পুলিশ সপ্তাহের নানা আয়োজন ।
পুলিশ সপ্তাহে বিগত এক বছরের কার্যক্রম পর্যালোচনা করা হবে। পরবর্তী বছরের কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণী প্রস্তাবও আসবে এ অনুষ্ঠান মালায়। দিবসটি উপলক্ষে জাতীয় দৈনিকগুলোতে বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ এবং সরকারি-বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলসমূহ পুলিশ সপ্তাহ উপলক্ষে বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচার করবে বলেও বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।
মন্তব্য চালু নেই