যেভাবে প্রতিরোধ করবেন জরায়ু ক্যান্সার
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ক্যান্সারে আক্রান্ত বেশিরভাগ মহিলাই ভোগেন জরায়ুমুখের ক্যান্সারে। প্রতি বছর প্রায় ১২ হাজার ৯৩১ জন মহিলার জরায়ুতে ক্যান্সার ধরা পড়ে। এতে মারা যায় প্রায় ৬ হাজার ৬০০জন। সাধারণত ৩৫ থেকে ৫৫ বছর বয়সী নারীরা এ রোগের শিকার হন। বিশ বছরের নিচে এ রোগ হয় না বললেই চলে।
অল্প বয়সে বিয়ে, ঘন ঘন সন্তান নেয়া, অধিক সন্তানের জন্ম দেয়া, ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতার অভাব, পুষ্টিহীনতা, এইচপিভি নামক ভাইরাসের সংক্রামণে এই ক্যান্সার হতে পারে। সচেতনতা, ক্যান্সার নির্ণয় ও চিকিৎসা সুবিধার অভাবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এই রোগে মারাত্মক আকার ধারণ করে। প্রাথমিক পর্যায়ে নির্ণয় করা গেলে যথাযথ চিকিৎসার মাধ্যমে রোগীকে সুস্থ করা সম্ভব।
একদিন বা একমাসে হঠাৎ করে এই ক্যান্সার হয় না। স্বাভাবিক কোষ থেকে জরায়ু মুখের ক্যান্সার হতে প্রায় ১০-১৫ বছর সময় লাগে। প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা পড়লে চিকিৎসার দ্বারা শতভাগ রোগীই ভালো হয়ে যেতে পারে। রোগের শুরুতে উপসর্গ গুলো অল্পমাত্রায় থাকায় কেউ একে গুরুত্ব দিতে চান না। এজন্য রোগীদের পক্ষে প্রাথমিক পর্যায়েই চিকিৎসার আওতায় আসা সম্ভব হয়না। দেরীতে আসায় রোগটি ছড়িয়ে পড়ে। তখন জীবন বাঁচাতে বড় ধরনের অপারেশন এবং বিভিন্ন থেরাপীর প্রয়োজন হয়। কিন্তু তাতেও অনেক সময় পূর্ণ নিরাময় সম্ভব হয় না।
জরায়ুমুখের ক্যান্সার রোগীদের প্রাথমিক পর্যায়ে তেমন কোন উপসর্গ থাকে না। এমনকি রোগটি দ্বিতীয় পর্যায়ে এসে গেলেও তার উপসর্গ টের পাওয়া যায় না। তবে সহবাসের পর নারীদের রক্তের ফোঁটা আসা একটি গুরুত্বপূর্ণ সঙ্কেত। পানির মতো তরল ঘন সাদা বা দুর্গন্ধযুক্ত স্রাব, লাল পানির মত স্রাব ক্ষরণ হওয়াও ক্ষতির লক্ষণ। অনেকের আবার মাসিক শেষ হয়ে যাওয়ার অল্পদিনের মধ্যে আবার মাসিক দেখা দেয়। মাসিকের সময় অস্বাভাবিক রক্তক্ষরণ, তলপেটে এবং কোমরে ব্যথা হয়। প্রসাব-পায়খানা করতে অসুবিধা হওয়া। এ ছাড়াও জ্বর, খাওয়ার রুচি কমে যাওয়া, শারীরিক দুর্বলতা ইত্যাদি সমস্যা হয়।
নিয়মিত পরীক্ষা করানোর মাধ্যমে জরায়ুমুখের ক্যান্সার প্রতিরোধ করা সম্ভব। যে সব মহিলার বয়স ৩০ এর বেশী তাদের প্রতি তিন বছর পর পর স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ বা স্বাস্থ্য কর্মী দ্বারা জরায়ু মুখ পরীক্ষা করানো উচিত। ভায়া -VIA (Visual Inspection of Cervix with Acetic acid), প্যাপ স্মেয়ার (PAP smear) ইত্যাদি পরীক্ষার মাধ্যমে রোগের প্রাথমিক পর্যায়েই রোগটি সনাক্ত করা সম্ভব।যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করলে বেশিরভাগই ভাল হওয়ার সম্ভবনা থাকে।
মন্তব্য চালু নেই