২৮ জানুয়ারি প্রিন্স মুসাকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে দুদক

সুইস ব্যাংকে ‌‌‌অর্থপাচার করেছেন এমন অভিযোগ অনুসন্ধানে মুসা বিন শমসেরকে আগামী ২৮ জানুয়ারি জিজ্ঞাসাবাদ করবে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এর আগে তাকে আজ বুধবার তলব করেছিল দুদক। তবে অসুস্থতার কথা বলে মুসা বিন শমসের দুদকের কাছে সময় চান। এরপরই তাকে সময় বাড়িয়ে আগামী ২৮ জানুয়ারি হাজির হতে বলা হয়।

মুসা বিন শমসেরকে ২৮ জানুয়ারি দুদক কার্যালয়ে উপস্থিত হতে বলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদকের কমিশনার শাহাবুদ্দিন চুপ্পু।

মঙ্গলবার দুপুরে দুদকের চেয়ারম্যান বরাবর এক লিখিত আবেদনপত্র পাঠান মুসা বিন শমসের। সেখানে দুদকের হাজির হওয়ার জন্য সময় বৃদ্ধির আবেদন করেন মুসা।

সুইস ব্যাংকে ‌‌‌অর্থ আছে কি না তা যাচাই করতে চলতি মাসের ৪ জানুয়ারি ব্যবসায়ী মুসা বিন শমসেরকে পুনরায় তলব করে দুদক। এর আগে ২০১৪ সালের ১৮ ডিসেম্বর মুসাকে প্রথমবার জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরিচালক মীর জয়নুল আবেদীন শিবলী স্বাক্ষরিত এক নোটিশে তাকে ১৩ জানুয়ারি সকাল ১১টায় সংস্থার প্রধান কার্যালয়ে হাজির হতে বলা হয়। ওই নোটিশের পরিপ্রেক্ষিতে অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে তিনি সময়ের আবেদন করেন।

দুদকে জমা দেওয়া সম্পদ বিবরণীতে সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকে যে ১২ বিলিয়ন ডলার বা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৯৪ হাজার কোটি টাকা হিসাব দিয়েছেন, সে বিষয়ে প্রকৃত তথ্য উদঘাটনেই দ্বিতীয়বারের মতো তলব করা হয়েছিল।

এর আগে ২০১৫ সালের ৭ জুন সম্পদ বিবরণী দাখিল করেন তিনি। ওই বছরের ১৯ মে সম্পদের হিসাব চেয়ে নোটিশ পাঠায় দুদক। সম্পদ বিবরণীতে প্রিন্স মুসার মোট ১২ বিলিয়ন ডলার সুইস ব্যাংকে আটক রয়েছে, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ৯৩ হাজার ৬০০ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ৭৮ টাকা হিসেবে)। যা নিয়ে মুসা আইনি লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন বলে দুদককে জানিয়েছেন। তবে আইনগত বাধা-নিষেধের অজুহাতে ওই যৌথ অ্যাকাউন্ট সংক্রান্ত সুনির্দিষ্ট তথ্য দুদককে দেননি মুসা।

ওই তথ্যের সূত্র ধরে গেল বছরের শেষ দিকে মুসার ওই সম্পদের অনুসন্ধান করতে বাংলাদেশ ব্যাংক সুইজারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুইস ন্যাশনাল ব্যাংকের কাছে চিঠি দেয়। শুধু মুসা বিন শমসেরের নামে দেওয়া চিঠির উত্তরে সুইস কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছে, তাদের কোনো ব্যাংকে ওই নামে কোনো হিসাব নেই। ফলে ওই ব্যক্তির নামে কোনো সম্পদও নেই। ওই জবাবের পরিপ্রেক্ষিতে মুসার স্ত্রী, সন্তানদের নামে কোনো হিসাব আছে কিনা তা জানতে আবারো চিঠি পাঠায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

প্রিন্স মুসার বিরুদ্ধে ২০১১ সালে অবৈধ সম্পদের অভিযোগ অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। তিন বছর পর ২০১৪ সালের শেষের দিকে ‘বিজনেস এশিয়া’ ম্যাগাজিনের প্রতিবেদন বিবেচনায় নিয়ে আবারও নতুন করে মুসার সম্পদের অনুসন্ধানে নামে দুদক।

এরপর ২০১৪ সালের ৩ নভেম্বর দুদকের জ্যেষ্ঠ উপ-পরিচালক (বর্তমানে পরিচালক) মীর মো. জয়নুল আবেদীন শিবলীকে অনুসন্ধানের দায়িত্ব দেওয়া হয়।

২০১১ সালের ২৪ জুন মুসার যাবতীয় ব্যাংক হিসাব তলব করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। দুদকের চাহিদার ভিত্তিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক মুসার ব্যাংক হিসাব তলব করলেও রহস্যজনক কারণে এর কোনো অগ্রগতি হয়নি।

২০১৪ সালে ‘বিজনেস এশিয়া’ ম্যাগাজিন মুসা বিন শমসেরকে নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। যেখানে মুসা বিন শমসেরের সাত বিলিয়ন ডলার আটকে থাকার কথা বলা হয়েছিল।



মন্তব্য চালু নেই