আলোকিত ৫ ‘জয়িতা’র সাফল্য কথা
মানুষের জন্ম লাভ মানেই সফলতা। প্রকৃতির এক অমোঘ নিয়মে বিস্ময়কর সব ধারাবাহিক কর্মকা- সম্পাদন শেষে মানুষ এই ধরাধামে জন্ম লাভ করে। প্রত্যেক মানুষই সৃষ্টিকর্তার বিশেষ আশির্বাদপ্রাপ্ত হয়ে পৃথিবীতে জন্ম নেয়। আর এ জন্যই প্রত্যেক মানুষের জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত বিশেষ কিছু দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করতে হয়। স্বভাবতই মানুষ সর্বাগ্রে প্রকৃতি থেকে জ্ঞান লাভ করে।
ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ ও দেশ-জাতি তথা বিশ্বকে বদলে দিতে প্রকৃতির এই অর্জিত জ্ঞান কাজে লাগানোই মানুষের অন্যতম কাজ। এ অতি গুরুত্বপূর্ণ কাজকে যে যতটা গুরুত্বসহকারে কাজে লাগায় সে তত বেশি সফল-চুড়ান্ত সফলতার দ্বার উন্মোচন করে সৃষ্টিকর্তার নৈকট্য লাভে ধন্য হয়।
আর এসব সৃষ্টিশীল মানুষ কারো বাহ্বা-হাততালি পাওয়ার জন্য কাজ করেন না। তারা কাজের জন্যই কাজ করেন। ব্যক্তি স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে সমাজ, দেশ-জাতিকে আলোকিত করতে নিরন্তর প্রচেষ্টা চালান তারা। শত বাধা-বিপত্তিকে ডিঙিয়ে এসব আলোকিত মানুষজন কাঙিক্ষত লক্ষ্যে পৌঁছান। কোন রকম সমস্যাই তাদের চলার পথকে রুদ্ধ করতে পারে না। দৃঢ় মনোবল ও ইচ্ছাশক্তিই তাদের চলার কঠিন পথকে সহজ করে দেয়। তেমনি আমাদের কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দির ৫ আলোকিত নারী তাদের কর্মকান্ড দ্বারা প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছেন যে, মানুষ যে কোন অবস্থান থেকেই ইচ্ছা করলে ব্যক্তি, পরিবার ও সমাজ গঠনে অনন্য ভূমিকা রাখতে পারেন।
আজ আমরা নির্ধিদ্বায় গর্ব করে বলতে পারি যে, এই ৫ জয়িতা আমাদের দাউদকান্দির অহংকার-আমাদের গৌরব। এ ৫ আলোকিত নারী ‘জয়িতা’ খেতাব অর্জন করে আমাদের দাউদকান্দিবাসী ধন্য করেছেন। আজকে আমরা ‘দাউদকান্দির আলোকিত ৫ ‘জয়িতা’র সাফল্য কথা’ শিরোনামের এ লেখায় তাদের জীবনের কিছু সংগ্রামের কথা-কিছু গল্প তুলে ধরার চেষ্টা করবো।
‘জয়িতা অন্বেষণে বাংলাদেশ’-২০১৫’র উপজেলা পর্যায়ে চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত হন আমাদের এই ৫ জন নারী।
বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে তাদের নির্বাচিত করা হয়। আমরা নিন্মে তাদের নাম, ঠিকানা ও সৃষ্টিশীল কর্মকা-ের কিছু বিষয় আলোকপাত করছি।
(ক) অর্থনৈতিকভাবে সাফল্য অর্জনকারী নারীঃ
শংকরী রানী সাহা (৫০), স্বামী: মৃত হরিপদ সাহা, গ্রাম: সাহাপাড়া, ডাকঘর: দাউদকান্দি বাজার, উপজেলা: দাউদকান্দি। শিক্ষাগত যোগ্যতা: এসএসসি পাশ। তিনি পেশায় একজন সফল ব্যবসায়ী।
তার ৩জন সন্তান রয়েছে। ১ ছেলে ও ২ মেয়ে। তার স্বামী ১৯৯৬ সালে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। তার স্বামীর পক্ষে কোন কাজ-কর্ম করা অসম্ভব হয়ে পড়ে। স্বামীর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ‘মুক্তি স্টুডিও’ ও ‘মুক্তি জুয়েলারী’ ব্যবসা প্রায় বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয় তখন। শংকরী রানী সাহা উপায়ন্তর না পেয়ে স্বামীর ব্যবসার হাল ধরেন। ২০০৪ সালে তার স্বামী ঢাকা মেডিকেলে মারা যান। তার হাতে তখন ছিল নগদ মাত্র ১৫ টাকা। তার স্বামীর চিকিৎসায় তাদের ব্যবসার সব টাকা খরচ হয়ে যায়। তখন তারা প্রায় নিঃস্ব হয়ে পড়েন। বড় মেয়ে সবে মাত্র সপ্তম শ্রেণীতে পড়ে। ছেলে পড়ে ষষ্ঠ শ্রেণীতে। ছোট মেয়ে পড়ত ২য় শ্রেণীতে। তারপরেও স্বামীর মৃত্যুর পর তিনি তার সন্তানদের নিয়ে ভেঙ্গে পড়েননি। মনোবল আর সাহস নিয়ে পুরোধমে আবার শুরু করেন ব্যবসা। তিনি মেয়েদের এইচএসসি পাশ করান। ব্যবসায়ও সফলতা আসে তার। অগ্রণী ব্যাংক দাউদকান্দি শাখার একজন সিসি হোল্ডার শংকরী রানী সাহা। বর্তমানে দাউদকান্দি বাজারে ‘সুন্দরী ক্লথ স্টোর’ নামে একটি দোকান রয়েছে। একসময় তিনি বাবুর হাট,পাবনা (করোটিয়া), ইসলামপুর, পল্টন থেকে কাপড়/থ্রি-পিছ, লুঙ্গী, শাড়ী ও গজ কাপড় ক্রয় করে আনেন। পরবর্তীতে এই সব কাপড়ে নকশী, কারচুপি ও এম্ব্রয়ডারী করান। এসব কাপড় বিক্রি করে তার ভাগ্যের চাকা ঘুরে যায়। বর্তমানে তার দাউদকান্দি চৌধুরী সুপার মার্কেট একটি বিশাল দোকান রয়েছে। ওই দোকানে রয়েছে ৪জন কর্মচারী। এছাড়াও আহসান উল্লাহ সুপার মার্কেট চিটাগাং রোড়ে ‘সুন্দরী ক্লথ স্টোর’ নামে আরও একটি দোকান রয়েছে তার। ওই দোকানেও রয়েছে ৪জন কর্মচারী। তিনি বর্তমানে একজন অর্থনৈতিকভাবে সফল নারী। তিনি নিজে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করেন। অনেক সংগ্রামের পর শংকরী রানী আজকের এ অবস্থানে এসেছেন। তিনি বর্তমানে দাউদকান্দি মহিলা আওয়ামীলীগের সেক্রেটারী। একথায় সফল একজন নারী তিনি।
(খ) শিক্ষা ও চাকুরীর ক্ষেত্রে সাফল্য আর্জনকারী নারী:
আলতাফুন্নেসা (৬৯), স্বামী: এম জাকারিয়া, গ্রাম: বারপাড়া, ডাকঘর: গৌরীপুর বাজার, দাউদকান্দি। তার শিক্ষাগত যোগ্যতা: বিএসসি সম্মান, এমএসসি-ভূগোল ও পরিবেশ, ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়। পেশা: শিক্ষকতা ও সমাজসেবা। তিনি ২ সন্তানের জননী। ১ ছেলে ও ১ ময়ে তার। আর্থিক অবস্থা বেশ স্বচ্ছল।
তার কর্ম জীবন শুরু হয় ১৯৬৯ সালে বাবার স্কুলে শিক্ষকতার মধ্য দিয়ে। পরে তিনি ওই স্কুল ছেড়ে ঢাকার ভিকারুন্নেসা স্কুলে ৮ মাস কাজ করেন। পরবর্তিতে পাবলিক সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে পরীক্ষা দিয়ে সরকারি চাকুরি দিয়ে কর্ম জীবন শুরু করেন। একাধারে তিনি ঢাকা কলেজ, কুমুদিনী কলেজ, এসএসটিসি ও গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে বিভিন্ন সম্মানজনক পদে চাকুরি করেন। এছাড়াও তিনি দাউদকান্দির বারপাড়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ট্রাস্টি ও সমন্বয়ক এবং জাতীয় সিলেবাস তৈরীতে এসএসসি ও এইচএসসি পর্যায়ে ভূগোল বিষয় নিয়ে কাজ করেন। তিনি এসএসসির ভূগোল বই ইংরেজী করণ ও এইচএসসি পর্যায়ে বাণিজ্যিক ভূগোল ইংরেজী করণে কাজ করেন। শুধু তাই নয়, তিনি সিলেবাস অনুযায়ী শিক্ষকদের পাঠদান পদ্ধতির নির্দেশিকা তৈরী করে প্রশংসনীয় ভূমিকাও রাখেন। এছাড়া কুমুদিনী কলেজে ভূগোল বিভাগ খোলা, ঢাকা কলেজে সম্মান ও মাস্টার্স শ্রেণী খোলা ও পদ সৃষ্টিতে কাজ করার জন্য বিশেষভাবে সম্মাননা প্রাপ্ত হন।
(গ) সফল জননী নারী:
রওশন আরা বেগম (৬৩), স্বামী: মরহুম মোঃ আব্দুল হাই (এক সময় স্যানেটারী ইন্সপেক্টর ছিলেন)। গ্রাম: ভাগলপুর (রওশন ভিলা), ডাকঘর: চাঁদগাঁও (মদিনা কমপ্লেক্স) উপজেলা: দাউদকান্দি। তার শিক্ষাগত যোগ্যতা: এসএসসি পাশ। পেশা: অবসরপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষক। তিনি ৬ সন্তানের ভাগ্যবান জননী। তার ৩ মেয়ে ও ৩ ছেলে সবাই উচ্চ শিক্ষিত। তার ১ম সন্তান উম্মে সাইফুন লাকী। লাকী ঢাকা কলেজ থেকে ইসলামী ইতিহাসের উপর এমএ পাশ করেন। পরে তিনি ঢাকা সিদ্বেশ^রীর প্রস্তুতি প্রিপারেটরী স্কুলে শিক্ষকতার মাধ্যমে কর্ম জীবন শুরু করেন।
রওশন আরা বেগমের ২য় সন্তান ড. মোঃ আবু বিন হাসান (সুসান)। সুসান ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় থেকে রসায়নে বিএসসি অনার্স ও এমএসসি এবং পরে জাপানের ন্যাশনাল ইকোহামা বিশ্ববিদ্যালয় হতে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। কর্ম জীবনে সুসান ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ে রয়াসন বিভাগে প্রফেসর পদে চাকুরি করছেন।
তার ৩য় সন্তান উম্মে সালিমা (মিতু)। মিতু কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ থেকে ইতিহাস বিভাগে এমএ পাশ করেন। কর্ম জীবনে কুমিল্লা লিটল ফ্লাওয়ার ন্যাশনাল ক্যাডেট কলেজে চাকুরি করছেন।
এই ভাগ্যবান নারীর ৪র্থ সন্তান উম্মে সাবিনা (মুন্নি) দাউদকান্দির গৌরীপুর মুন্সী সরকারি কলেজ থেকে বিএ পাশ করেন। মুন্নি পেশায় একজন গৃহিণী। ৫ম সন্তান ড. আবু বিন ইমরান (ইমন)। ইমন সিলেট শাহাজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয় থেকে রয়াসনে বিএসসি অনার্স ও এমএস করেন। পরে তিনি জাপানের নাগোয়া বিশ^বিদ্যালয় হতে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন।
রওশন আরা বেগমের ৬ষ্ঠ সন্তান ড. আবু বিন ইহসান (লিংকন)। খুলনা বিশ^বিদ্যালয় থেকে বিএসসি, ঢাকা টঙউঅ থেকে এমএসসি ও জাপানের হোক্কাইডো বিশ^বিদ্যালয় হতে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। কর্ম জীবনে তিনি সহকারী অধ্যাপক, রসায়ন বিভাগ বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয় (বুয়েট)-এ চাকুরি করেন। বর্তমানে লিংকন জাপান স্যাপপোরো হোক্কাইডো বিশ^বিদ্যালয় ও ওই বিশ^বিদ্যালয় পোস্ট ডক্টোরাল রিসার্স ফেলোতে কর্মরত আছেন।
(ঘ) নির্যাতনের বিভীষিকা মুছে ফেলে নতুন উদ্যমে জীবন শুরু করেছেন যে নারী
বেগম রেহেনা ইয়াছমিন (৫০), পিতা: মো: শহিদুল্লাহ, গ্রাম: চশই, ডাকঘর: চশই, উপজেলা: দাউদকান্দি। শিক্ষাগত যোগ্যতা: এসএসসি পাশ। তিনি বর্তমানে একজন ইউপি সদস্য। তার একটি কন্যা সন্তান রয়েছে।
তিনি ১৯৯৬ সালের ৮ মে ঢাকা ডেমরা সারুলিয়ার আঃ মান্নান-এর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। বিবাহের পর পরেই তিনি বুঝতে পারেন যে, তার স্বামী একজন দুশ্চরিত্রের মানুষ। সে বিভিন্ন বিভিন্ন রকম অপকর্ম করে বেড়াত। এক পর্যায়ে তার অপকর্মে ইয়াছমিন বাধা প্রদান করলে তার উপর নির্যাতন শুরু হয়। সীমাহীন কষ্ট সহ্য করেন তিনি। তারপরেও তিনি মেয়েকে নিয়ে ৫ বছর সংসার করেছেন। এক সময় স্বামী, শ্বাশুড়ী, দেবর ও ননদের অত্যাচারে মানসিক রোগী হয়ে যান ইয়াছমিন। তখন তার বাবা ২০০৪ সালে তাকে স্বামীর বাড়ী থেকে নিয়ে আসেন। ওই সময় তার বাবার আর্থিক অবস্থা ভাল ছিল না। বাবার এ অবস্থা দেখে দিগি¦দিগ হারিয়ে ফেলেন তিনি। এক পর্যায়ে ভিজিডির কার্ডধারী হতে বাধ্য হন ইয়াছমিন। পরে গ্রাম পুলিশের চাকুরি নেন। সেই চাকুরিতে থেকেই তিনি এবং তার সন্তান নিয়ে বাবার বাড়িতে বেশ সুনামের সঙ্গে বসবাস শুরু করেন। দীর্ঘ ৮ বছর চাকুরি করার পর জনগণের পরামর্শ নিয়ে নিজের চেষ্টায় ইউপি সদস্য হিসেবে নির্বাচন করেন এবং তিনি জয়ী হন। বর্তমানে তিনি মারুকা ইউপির মহিলা সংরক্ষিত আসনের ৭,৮.৯ নং ওয়ার্ডের মহিলা সদস্য। তার মেয়ে ১০ম শ্রেণীতে পড়ে। ইয়াছমিন বর্তমানে অনেক ভালো আছেন এবং নিজেকে নিয়ে বেশ গর্ব বোধ করেন। তিনি দাউদকান্দি উপজেলা নারী উন্নয়ন ফোরামে নির্বাহী পরিষদের সহ-সভাপতি। নারী উন্নয়নে তার ভূমিকা অতি প্রশংসনীয়। পারিবারিক বিরোধ নিরোসন, নারী ও শিশু কল্যাণ কমিটির সভাপতি (এনজিও উদ্দিপন), চশই উচ্চ বিদ্যালয়-এর ম্যানেজিং কমিটির সদস্য; খামারপাড়া কমিউনিটি ক্লিনিক মারুকা-এর সভাপতি এবং খামারপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মারুকা এর সভাপতিও তিনি।
(ঙ) সমাজ উন্নয়নে অসামান্য অবদান রেখেছেন যে নারী ।
রূপজান বিবি (৫৫), স্বামী: আব্দুল কাদির, গ্রাম: নোয়াদ্দা, ডাকঘর নৈয়াইর, উপজেলা: দাউদকান্দি। শিক্ষাগত যোগ্যতা: অষ্টম শ্রেণী পাশ, পেশায় তিনি ্ওকজন গৃহিণী। তিনি ৫ সন্তানের জননী। ৩ ছেলে ও ২ মেয়ে তার। আর্থিক অবস্থা তেমন একটা ভাল না হলেও রূপজান বিবি মহৎ উদ্দেশ্য নিয়ে এক সময় বড় একটি কাজ সম্পাদন করে সকলকে তাক লাগিয়ে দেন। সমাজে শিক্ষার প্রয়োজন বোধ করে তিনি নোয়াদ্দা গ্রামে কোমলমতি ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার জন্য একটি স্কুল প্রতিষ্ঠার চিন্তা করেন এবং ৩৩ শতাংশ সম্পত্তি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা সচিবের নামে দান করে দেন। যে প্রতিষ্ঠানটি নোয়াদ্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নামে প্রতিষ্ঠিা লাভ করে। এই প্রতিষ্ঠিানের প্রতিষ্ঠাতা রূপজান বিবি এবং তাহার স্বামী আঃ কাদির। বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই অর্থসহ নানা রকম সাহায্য-সহযোগিতা করে আসছেন রূপজান বিবি। তিনি নোয়াদ্দা জামে মসজিদের জন্যও জমি দান করেছেন। এক কথায়, তিনি একজন উন্নত চিন্তার দানশীল ব্যক্তিত্বের অধিকারী নারী।
এই ৫ জয়িতাকে নিয়ে দাউদকান্দি প্রশাসন মহান বিজয়ের মাসে এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে গত ৯ ডিসেম্বর। আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ ও বেগম রোকেয়া দিবস উপলক্ষে ‘জয়িতা অন্বেষণে বাংলাদেশ’-২০১৫’র উপজেলা পর্যায়ে চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত ৫ জনকে কেস্ট ও সম্মাননা প্রদান করা হয় এ অনুষ্ঠানে। দাউদকান্দি উপজেলা মিলনায়তনে উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা শামীমা সুলতানার সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন, দাউদকান্দি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আসাদুজ্জামান। বিশেষ অতিথি ছিলেন, দাউদকান্দি উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মোসাঃ রোজিনা আক্তার, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মোঃ শিবলী জামান, দাউদকান্দি মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোঃ খোরশেদ আলম, উপজেলা মহিলালীগের সভাপতি মোসাঃ জেবুন নেছা জেবু। এসময় উপস্থিত ছিলেন, দাউদকান্দি উপজেলা ইভটিজিং, বাল্যবিবাহ ও যৌতুক প্রতিরোধ কমিটির আহ্বায়ক কবি-কলামিস্ট আলী আশরাফ খান, ইছাপুর উদ্দিপনের (এনজিও) আবু রায়হান, মোসাঃ নাসরিন আক্তার প্রমুখ। উপরোল্লেখিত ৫জন জয়ীতার মধ্যে যথাক্রমে শংকরী রানী সাহা, রওশন আরা বেগম ও বেগম রেহেনা ইয়াছমিন উপজেলা পর্যায়ে এবং আলতাফুন্নেসা ও রূপজান বিবিকে জেলা পর্যায়ে জয়িতা নির্বাচিত করা হয়। তাদের প্রত্যেককে ‘জয়িতা পদক-’১৫ ও সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়।
পরিশেষে আমরা এই ৫ সফল নারীকে নিয়ে একটি কথাই বলবো, আমাদের এই ৫ জয়িতা তাদের কর্মকা- দিয়ে প্রমাণ করেছেন যে, মানুষ ইচ্ছে করলে যে কোন অবস্থান থেকে ব্যক্তি-পরিবার, সমাজ, জাতি তথা বিশ্ব বদলে ভূমিকা রেখে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারে। আমরা আশা করবো, আমাদের এই ৫ গর্বীত নারীর মত সমাজের অন্য নারীরাও সমাজ উন্নয়নে স্ব-স্ব অবস্থান থেকে আলোক উজ্জ্বল ভ’মিকা রেখে বিশ্বকে বদলে দেবেন। সমাজ পাবে নারীদের কাছ থেকে আলোর দিশা।
লেখক: মো. আলী আশরাফ খান
মন্তব্য চালু নেই