রাজধানীতে থানার পাশেই মাদকের আখড়া, চলছে বছরের পর বছর
পুলিশের বাড়ির পাশেই যেন চোরের আখড়া। ব্যাপারটা এমনই দাঁড়িয়ে গেছে। রাজধানীর বেশির ভাগ থানার আশপাশেই রয়েছে মাদক স্পট। বছরের পর বছর ধরে এ স্পটগুলো টিকে আছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কিছু অসাধু কর্মকর্তার মদদে।
সূত্রে জানা যায়, রাজধানীর যেসব থানার পাশেই মাদকস্পট তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে ভাসানটেক, পল্লবী, রূপনগর, শাহ আলী, তেজগাঁও, ধানমণ্ডি, শেরে বাংলানগর, শাহবাগ, নিউ মার্কেট, রমনা, মতিঝিল, লালবাগ, চকবাজার, কামরাঙ্গীরচর, হাজারীবাগ, খিলগাঁও ও সবুজবাগ।
রূপনগর থানার ২০ গজের মধ্যেই রয়েছে মিরপুরের সবচেয়ে বড় মাদকস্পট ৬ নম্বর ঝিলপাড় বস্তি। পল্লবী থানার পাশেই রয়েছে বিহারি ক্যাম্প মাদকস্পট। মিরপুরের আরেক আলোচিত মাদকস্পট শাহ আলী থানা ও শাহ আলী পুলিশ ফাঁড়ির মাঝখানে অবস্থিত। শেরে বাংলানগর থানার ১০০ গজের মধ্যেই বিএনপি বস্তির মাদকস্পট। তেজকুনিপাড়ার সনি, হিরা, নাসিমা নামের তিন মাদক ব্যবসায়ীর সঙ্গে পুলিশের কিছু কর্মকর্তার যোগাযোগ রয়েছে বলে জানা যায়। রাজধানীর শাহবাগ থানার দেয়াল ঘেঁষেই গড়ে উঠেছে মাদক ব্যবসায়ীদের শক্তিশালী সিন্ডিকেট। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত প্রকাশ্যেই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে চলে মাদকের জমজমাট ব্যবসা।
এ ছাড়া সেক্রেটারিয়েট রোডের আনন্দবাজার বস্তি, ওসমানী উদ্যান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল চত্বর, তিন নেতার মাজার, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের আশপাশ এলাকা, কাঁটাবন এলাকায় আছে ভাসমান বিক্রয় স্পট।
রমনা মডেল থানা এলাকার মাদকস্পটগুলো হচ্ছে দিলু রোডের পশ্চিম মাথা, মগবাজার রেলক্রসিং-সংলগ্ন কাঁচাবাজার, আমবাগান চল্লিশঘর বস্তি, পেয়ারাবাগ বস্তি, মধুবাগ ঝিলপাড়, মালিবাগ রেলক্রসিং থেকে মগবাজার রেলক্রসিং পর্যন্ত এলাকা। লালবাগের শহীদনগর ১ থেকে ৬ নম্বর গলি, মৌলভীবাজার কাঁচাবাজার ও বলিয়াদী হাউস এলাকায় মাদক বিক্রি হয় প্রকাশ্যে। অথচ থানা থেকে হেঁটে এসব স্থানে যেতে সময় লাগে কয়েক মিনিট।
এ ছাড়া বালুরঘাট বেড়িবাঁধ, ঢাকেশ্বরী মন্দিরসংলগ্ন পিয়ারী বেগমের বাড়ি, শহীদনগর পাইপ কারখানা, নবাবগঞ্জ পার্ক, রসুলবাগ পার্ক, আজিমপুর কবরস্থানের আশপাশ এলাকা, আজিমপুর মেটার্নিটি হাসপাতালসংলগ্ন এলাকায়ও মাদক মেলে হাত বাড়ালে।
কোতোয়ালি থানা এলাকার মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে এবং কর্মচারীদের স্টাফ কোয়াার্টারের আশপাশ এলাকা, সামসাবাদ এলাকার জুম্মন কমিউনিটি সেন্টারের আশপাশ, কসাইটুলী কমিউনিটি সেন্টারের আশপাশ, বাবুবাজার ব্রিজের ঢালে, বুড়ির বাগান, স্টার সিনেমা হলের সামনে, নয়াবাজার ব্রিজের ঢালে, নয়াবাজার ইউসুফ মার্কেট, চানখাঁরপুল ট্রাকস্ট্যান্ড, নিমতলী মোড়, আরমানিটোলা স্কুলের আশপাশসহ ২০টি স্পটে মাদক বিক্রি হয়। এর বেশির ভাগ স্পটই থানা কমপ্লেক্সের কাছে।
মোহাম্মদপুর থানা এলাকায় জজ মিয়ার বস্তি সবচেয়ে বড় মাদকস্পট। কামরাঙ্গীরচর থানা এলাকার ট্যানারি পুকুরপাড় পাকা পোল, কয়লাঘাট বেড়িবাঁধসহ ১৮টি স্পটে মাদক বিক্রি হচ্ছে। অভিযোগ আছে, থানা পুলিশের ছত্রচ্ছায়ায় একটি চক্র এ ব্যবসা করে যাচ্ছে।
মন্তব্য চালু নেই