আমি দেশে থাকলেও সহিংসতা ও ভোট জালিয়াতি হতো: সিইসি

উপজেলা নির্বাচনের সময় যে সহিংসতা ও ভোট জালিয়াতি হয়েছে, প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) দেশে থাকলেও তা হতো বলে তিনি মন্তব্য করেছেন। সিইসি কাজী রকিবউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘নির্বাচনে যে সহিংসতা ও ভোট জালিয়াতির ঘটনা ঘটেছে, আমি থাকলেও তা হতো।’ তবে নির্বাচনের সময় প্রাণহানির দায়ভার নির্বাচন কমিশন নেবে বলে জানান তিনি।

বুধবার বিকেলে ষষ্ঠ দফায় ১৪টি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার সময় তিনি এসব কথা বলেন।

তফসিল অনুযায়ী, আগামী ১৯ মে এই ১৪টি উপজেলায় ভোট নেয়া হবে। নির্বাচনে প্রার্থীদের মনোনয়ন দাখিলের শেষ তারিখ ২৪ এপ্রিল, মনোনয়নপত্র বাছাই হবে ২৬ এপ্রিল, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ৩ মে এবং ভোটগ্রহণের তারিখ ১৯ মে।

নিজের ছুটিতে থাকা প্রসঙ্গে সিইসি বলেন ‘ছুটি আমার ব্যক্তিগত ব্যাপার। ছুটির সঙ্গে অফিসের কিছু কাজও ছিল। নির্বাচনের জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা আগেই নেওয়া হয়েছিল। গতানুগতিক নিয়মেই এ নির্বাচন হয়ে থাকে।’

উপজেলা নির্বাচন চলাকালীন সিইসির ছুটি কতটুকু যৌক্তিক ছিল এমন প্রশ্নের জবাবে কাজী রকিবউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘আমি বিদেশে থাকলেও নির্বাচন পরিচালনাকারী প্রতিটি বিভাগের প্রধানদের সঙ্গে আমার সার্বক্ষণিক যোগাযোগ ছিল। উপজেলা নির্বাচনের পরিকল্পনা আমার উপস্থিতিতেই করা- কোথায় কীভাবে নির্বাচন হবে তা আমি আগেই নির্ধারণ করে গেছি। তারপরও যেসব অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে সেগুলো বিচ্ছিন্ন। এগুলো ঘটবেই, আমি উপস্থিত থাকলেও এসব ঘটতো। তবে কেউ অন্যায় করলে তা প্রতিকার করতে হবে। আমরা জেল-জরিমানাও করেছি। সহিংসতা গণতন্ত্রের ভাষা নয়।’

প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচটি ইমাম সিইসি সম্পর্কে ‘তিনি ক্লান্ত, তাই তিনি ছুটিতে গেছেন’ এমন বক্তব্যের জবাবে সিইসি বলেন, ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার কারো কাছে ছুটি নেয় না, তিনি নিজের ছুটি নিজেই নিতে পারেন।’

নির্বাচনে সহিংসতার দায়ভার কমিশন নেবে না দাবি করে সিইসি বলেন, আমরা নির্বাচন সুষ্ঠু করার জন্য সর্ব্বোচ্চ ব্যবস্থা নিয়েছি। আইন শৃঙ্খলায় সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। এখন মানুষ যদি সহিংসতা করে তাহলে আমাদের কি করার আছে। সবার মানসিকতা পরিবর্তন করে গণতন্ত্রের চর্চা না করে হাতে লাঠি তুলে নিলে যিনি সহিংসতা করবেন তিনিই দায়ী হবেন।

ষষ্ঠ দফায় যে ১৪টি উপজেলায় নির্বাচন হবে, সেগুলো হচ্ছে- রংপুরের সদর, কালনি, গঙ্গাচড়া ও পীরগাছা। সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ, বরগুনার তালতলি, পটুয়াখালীর রাঙাবালি, রাজবাড়ির কালুখালি, নারায়ণগঞ্জের বন্দর, গাজীপুর সদর, টাঙ্গাইলের বাসাইল, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর, কুমিল্লা আদর্শ সদর ও সদর দক্ষিণ উপজেলা। এছাড়া ময়মনিসংহ জেলার তারাকান্দা উপজেলায় চেয়ারম্যান পদ শূন্য হওয়ায় সেখানে কেবল চেয়ারম্যান পদে একই দিনে ভোট হবে।

তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনের কোনো সিদ্ধান্তে কোনো প্রার্থী ক্ষুব্ধ হলে তিনি নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে যেতে পারেন। এরপরও উচ্চ আদালত রয়েছে। সুতরাং আইন নিজের হাতে তুলে নেয়ার কোনো মানে হয় না। নির্বাচনে সেনাবাহিনী, র‌্যাব, বিজিবি, পুলিশসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন থাকবে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ।



মন্তব্য করুন