১৪ ইঞ্চি ‘সরু কোমর’ পেতে পাঁজরের ৬টি হাড় কেটে বাদ দিলেন তরুণী!
দেহে ১৫ সার্জারি। অধিক সার্জারির কারণে তিনি ভারী খাদ্য হজম করতে পারছেন না। খাদ্যাভ্যাস বদলাতে হয়েছে। কিন্তু তাকে কী। তার চায় ‘সরু কোমর, ভারী নিতম্ব আর সুবিশাল বুক’! চায় লাস্যময়ী কার্টুন চরিত্রের মতো চমকদার শরীর। তাই পাঁজর থেকে স্বেচ্ছায় ৬টি হাড় সরিয়ে ফেললেন পিক্সি ফক্স। কোমর ১৪ ইঞ্চি তাকে করতেই হবে। তাই সার্জারিতে খরচা করলেন এক লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার।
তবে এতে কোনো আফশোস নেই আমেরিকা প্রবাসী এই সুইডিশ যুবতির। পিক্সি বলেন, ‘আমার চাই সরু কোমর, ভারী নিতম্ব, বড় চোখযুগল ও সুবিশাল স্তনজোড়া। এর সঙ্গে সুন্দর একটি মুখ আমার স্বপ্ন সার্থক করেছে।’
পিক্সির বয়স মাত্র ২৫। সুইডেনে জন্ম হলেও এখন বাস করেন আমেরিকার নর্থ ক্যারোলিনায়। দেহে-অবয়বে কার্টুন ক্যারেক্টার পেতে তিনি এই মহাকাণ্ড করেন।
অনেকে পিক্সির কাছে আসেন, জানিয়ে দেন এই ভয়ংকর সার্জারির কথা, কিন্তু স্বীকার করতে ভোলেন না- ‘তোমাকে কার্টুনের মতো লাগছে।’ পিক্সিও সাফ জানিয়ে দেন, ‘এটা আমার অর্জন’।
১৯৮৮ সালে মুক্তি পাওয়ার পর রাতারাতি মেগাহিট হয়ে যায় হলিউডের ছবি ‘হু ফ্রেমড রজার র্যাবিট’। তুমুল জনপ্রিয়তা লাভ করে ছবির কার্টুন চরিত্র জেসিকা র্যাবিট। পর্দায় তার ছলা-কলায় উপচে পড়া যৌন আবেদনে মোহিত হন দর্শকমণ্ডলী। জেসিকার সেই লোভনীয় শরীরী জাদু বাস্তব জীবনেও ধরে রাখার চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছেন এবং যাচ্ছেন অনেকে। এদের মধ্যে রয়েছেন বিশ্ববিখ্যাত জার্মান মডেল তথা উদ্যোগপতি হাইডি ক্লুমের মতো মহাতারকা। চলতি বছরের হ্যালোউইন ড্রেস পার্টিতে জেসিকা র্যাবিট সেজে মঞ্চ মাত করেছেন তিনি।
তারকাদের খেয়াল বলে একটা কথা আছে। কিন্তু মোহময়ী জেসিকা র্যাবিট সাজতে এমন ‘দেহত্যাগ’! স্টকহোমের আদি বাসিন্দা তার পেশাদার জীবন শুরু করেছিলেন ইলেকট্রিশিয়ান হিসেবে। রুপোলি পর্দায় জেসিকা র্যাবিটকে দেখে আচমকা তার মতো সুন্দরী হয়ে ওঠার শখ চাপে পিক্সির। কিন্তু বাস্তবে ওই রকম শরীর তৈরি করা কি সম্ভব?
যুবতির মনোবাঞ্ছা পূরণ করতে এগিয়ে আসেন শল্যচিকিত্সকরা। পিক্সিও ছুরির নিচে যান র্যাবিটের অনুপ্রেরণায়। একাধিক জটিল সার্জারির মাধ্যমে পিক্সির পাঁজর থেকে মোট ৬টি হাড় সরিয়ে তৈরি হয়েছে ১৬ ইঞ্চি মাপের কোমর। জেসিকার সঙ্গে খাপ খাইয়ে পিক্সির বর্তমান শরীরী মাপ ৩৮-১৬-৩৯ ইঞ্চি। কিন্তু পিক্সি গোঁ ধরেছেন, ১৪ ইঞ্চি কোমর তার চায়!
ইনস্টাগ্রামে পিক্সি ফক্সের ফলোয়ার ৭০ হাজার আর তাদের রোল মডেল তিনি। নিজের ব্লগে ফক্স বাতলেছেন, ‘আমি নিজেকে মানুষ থেকে জীবন্ত কার্টুনে রূপান্তরিত করছি।’ তিনি বলেন, ‘এই কার্টুন ক্যারেক্টারগুলো নারীদেহের আদর্শ বৈশিষ্ট্য প্রতিনিধিত্ব করে।’
দেহে একাধিক সার্জারির কারণে ইদানিং ভারী খাদ্য হজম করতে পারেন না পিক্সি। খাদ্যতালিকা থেকে বাদ গিয়েছে রুটি, মাংস। বদলে নানা রকম বাদাম, সবজি আর ফল ঠাঁই পেয়েছে খোরাকিতে। সবকিছু মিক্সারে ঘুঁটে নিয়ে সারাদিন নিয়ন্ত্রিত পরিমাণে খেতে পারেন তিনি।
পিক্সি ফক্সকে প্রতিদিন ৫ ঘণ্টা করে জিম করতে হয়। আর এ পরিশ্রম তিনি করছেন তার স্বপ্নের ১৪ ইঞ্চি কোমর নিয়ে বিশ্বমাঝারে আবির্ভূত হতে। কারণ তার চেয়ে সরু কোমর আছে এক আমেরিকানের। ৭৮ বছর বয়সের ক্যাথি জাং, যার কোমর মাত্র ১৫ ইঞ্চি। পিক্সি বলেন, ‘যদি আমি পরিশ্রম করি, বদলে ফেলি লাইফস্টাইল, ১৪ ইঞ্চি কোমর হবেই হবে।’
পিক্সির দুশ্চিন্তা, ‘এটা খুব কঠিন, বিশেষজ্ঞ সার্জন খুঁজে পেতে তা অনেক ক্ষেত্রে অসম্ভবও।’ তবু হাল ছাড়ছেন না তিনি। আগামী বছরই তার নিতম্বসহ বেশ কয়েকটি প্রত্যঙ্গ আবার ছুরির নিচে যাবে। কিন্তু তাতে কী, পিক্সি তার স্বপ্ন পূরণ করবেনই!
মন্তব্য চালু নেই