গরু বাঁচাতে কুয়োয় ঝাঁপ
বিশ্বের বৃহৎ গণতান্ত্রিক দেশ ভারতের কথাই বলছি আমরা। এই ভারতেই হাতে গোনা কদিন আগেই ঘরে গরুর মাংস থাকার অভিযোগে আখলাক নামের এক মুসলিমকে হত্যা করা হয়। সাম্প্রতিক সময়ে গরু নিয়ে ভারতে কট্টরপন্থী রাজনৈতিক দলগুলো যে আস্ফালন শুরু করেছে, তার অংশ হিসেবে পরপর বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে যা মূলত ভারতের অসাম্প্রদায়িক চরিত্রকে প্রশ্নিবিদ্ধ করে। অথচ এই দেশেই মোহাম্মদ জাকি নামের এক কিশোর গরুর জীবন বাঁচাতে নিজ প্রাণের ঝুঁকি নেয়।
ঘটনাটি ঘটে লক্ষ্ণৌর এক গ্রামে। জাকির ভাষ্য মতে, ‘আমি দেখছিলাম অনকে মানুষ একটি খোলা কুয়ার চারপাশে ভিড় করে আছে যেখানে একটি গরু পড়ে ছিল। ভিড় করে থাকা জনতা ক্রেনের অপেক্ষা করছিল গরুটিকে উদ্ধারের জন্য।’ ক্রেন আসার পর সেই ক্রেনের চেইনের সঙ্গে নিজেকে শক্ত করে বাঁধেন জাকি, এরপর ৩৫ফুট গভীর কুয়ার ভেতর নামেন। যদিও গ্রামবাসীদের পক্ষ থেকে তাকে না নামার জন্য বলা হচ্ছিল। কিন্তু কোনো কিছুই কুয়াতে নামা থেকে বিরত করতে পারেনি জাকিকে।
‘আমি কুয়াতে নেমেছিলাম কারণ গরুটির জীবন বিপন্ন ছিল। নিচে গরুটির শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছিল এবং ভয় পেয়ে গিয়েছিল। গরুটি তার পা দিয়ে আমাকে বারবার আঘাত করছিল ভয়ে। আমি নীচে নামলে এটি আমাকে আঘাত করে পরে আমি তাকে শান্ত করার চেষ্টা করি। প্রথমে সবাই গরুটিকে একা উপরে পাঠাতে বলে তবে আমি ভাবলাম দুজন একসাথে উপরে গেলে মন্দ হয় না।’-মোহাম্মদ জাকি।
ক্রেনের মালিক প্রেম কুমার বলেন, অনেকেই নামার জন্য প্রস্তুত ছিল তবে জাকি সবার আগে এগিয়ে এসেছে। এই ঘটনায় জাকির বাবা জানায় আমার ছেলে তেমন শিক্ষিত নয় এরপরেও সে গরুটিকে বাঁচাতে দ্বিতীয়বার চিন্তা করেনি। তার মা সালমা জানান, ‘আমি ওকে নিয়ে খুব চিন্তিত ছিলাম, কিন্তু আমি আনন্দিত এই ভেবে যে গরুটির জীবন বাঁচানো গেছে। গত বছর রামলীলা চলাকালীন সময়ে গ্রামের কিছু ঘরে আগুন লেগে গিয়েছিল, তখনও জাকি সবার আগে এগিয়ে গিয়েছিল।’
মন্তব্য চালু নেই