মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হয়েও মুক্তিযোদ্ধার লিস্টে নাম নেই, পাননি সার্টিফিকেট, পাননি ভাতাও
আব্দুল মজিদ। বোকা আব্দুল। বড়ই বোকা সে। আরও ভাল করে বললে বলতে হয় বেকুব!! অর্থ টাকা পয়সা, সোনাদানা, কামাই লোভ লালসা ছাড়াই ঢুকে পড়েছিল দলে। সেই সময় কাজ করছিল ক্ষেতে, দিনমজুর সে।
পাশ দিয়ে অপারেশনে যাচ্ছিল মুক্তিযোদ্ধার একটি দল। সামনে যেয়ে পথ আগলে দাঁড়ায় বেকুব আব্দুল!! তাকেও নিতে হবে দলে। যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করবে সে।
কোন ট্রেনিং নেই। বেকে বসে কমান্ডার। কিছুতেই নেবে না তাকে কমান্ডার। এভাবে একজনকে নিশ্চিত মরণের দিকে ঠেলে দিতে পারে না সে।
কামান্ডারকে জড়িয়ে ধরে দাঁড়িয়ে থাকে আব্দুল। যাবেই সে। চোখে জলন্ত আগুন। হেরে যায় কমান্ডার। একটি থ্রি নট থ্রি রাইফেল হাতে ধরিয়ে দিয়ে শিখিয়ে দেয় কিভাবে ট্রিগার টানতে হয়।
এরপর আক্রমণ। যুদ্ধে জিতে বয়ে যায় আনন্দের ফোয়ারা। জয়বাংলা ধ্বনিতে কেপে ওঠে চারিদিক। সবাই ফিরে আসে, আসে না বেকুব! আব্দুল। মাটি আঁকড়ে পড়ে থাকে আব্দুল মজিদের লাশ। শহীদ আব্দুল মজিদ। যাদের জন্য পেয়েছি এই স্বাধীনতা।
জমি থেকে উঠে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল বলে মুক্তিযোদ্ধার কোন লিস্টে তার নাম নেই। পায়নি কোন সার্টিফিকেট। পায়নি ভাতা। স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু তার পরিবারকে দিয়েছিলেন এককালিন কিছু টাকা।
নিরবে আড়ালে শুয়ে আছে আব্দুল মজিদ। বড়ই বেকুব ছিল সে!! কেনাবেচা ছাড়াই জীবন দিয়েছিল।
ভন্ড আর বেঈমানের মাঝে বেমানান আব্দুল সে!!
শহীদ আব্দুল মজিদ প্রধান
গ্রাম: তালুক ইশাদ
পাড়া : মাইটাল
ইউনিয়ন : পীরগাছা সদর
উপজিলা: পীরগাছা
রংপুর।
তিনি শাহীদ হবার কয়েকমাস আগে তার স্ত্রী মারা গিয়েছিলেন।
[ যুগ্ম সচিব মাহবুব কবির মিলনের ফেসবুক স্ট্যাটাস থেকে ]
মন্তব্য চালু নেই