কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির সামান্য উন্নতি
ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, তিস্তা, দুধকমর, ফুলকমুরসহ কুড়িগ্রামের উপর দিয়ে প্রবাহিত ১৬ টি নদ-নদীর পানি হ্রাস পেতে শুরু করায় কুড়িগ্রাম জেলার বন্যা পরিস্থিতির সামান্য উন্নতি হয়েছে। তবে এখনো বন্যার্তদের ঘরে ফেরার মতো অবস্থা হয়নি। বেশ কয়েকটি পয়েন্টে এখনো বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে পানি। এছাড়া জেলার ৩৯ হাজার হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়ে যাওয়ায় দিশেহারা কৃষকেরা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, চরাঞ্চলসহ নিন্মাঞ্চলের ঘর-বাড়ি থেকে পানি না সরায় বানভাসী মানুষ বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ও উঁচু স্থানে আশ্রয় নিয়ে খোলা আকাশের নীচে মানবেতর জীবন যাপন করছে। পর্যাপ্ত ত্রাণ সামগ্রী না পাওয়ায় বন্যা কবলিতরা খেয়ে না খেয়ে দিন কাটাচ্ছে। দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ খাবার পানির সঙ্কট।
প্রায় ১৮ দিনের বন্যায় জেলার ৯ উপজেলার ৫৮ হাজার পরিবারের প্রায় ৩ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এদের মধ্যে লক্ষাধিক মানুষ ঘর-বাড়ি ছেড়ে উঁচু বাঁধ ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আশ্রয় নিদারুন কষ্টে দিন কাটাচ্ছে। বন্যায় কাচা-পাকা সড়ক ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায় গ্রামাঞ্চলের সড়ক ব্যবস্থা এখনও বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
জেলা কৃষি বিভাগ জানায়, বন্যায় ১ হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকা প্লাবিত হওয়ায় রোপা-আমনসহ ৩৯ হাজার হেক্টর জমির ফসল পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গেছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপপরিচালক প্রতীপ কুমার মন্ডল জানান, বন্যায় আমনসহ প্রায় ৩৯ হাজার হেক্টর জমির ফসল পানির নীচে তলিয়ে আছে। এ অবস্থায় কৃষকদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে বন্যা পরবর্তী ফসল চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হবে।
জেলা প্রশাসক এবিএম আজাদ জানান, এ পর্যন্ত বন্যার্তদের জন্য সাড়ে ৯শ মেট্রিক টন চাউল ও ১২ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
বন্যার্তদের অভিযোগ, সরকারিভাবে যে ত্রাণ বিতরণ হচ্ছে তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম। অপরদিকে বেসরকারিভাবে ত্রাণ তৎপরতা না থাকায় বানভাসীদের দুর্ভোগ বেড়েই চলেছে।
স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-প্রকৌশলী সবিবুর রহমান জানান, গত ২৪ ঘন্টায় চিলমারী পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্রের পানি ২১ সেন্টিমিটার, নুন খাওয়া পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্রের পানি ২৪ সেন্টিমিটার, কাউনিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি ৫ সেন্টিমিটার এবং সেতু পয়েন্টে ধরলার পানি ২২ সেন্টিমিটার হ্রাস পেয়ে বিপদসীমার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
মন্তব্য চালু নেই