গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত বমি

গর্ভাবস্থায় বমি হয় অনেকেরই। বিশেষ করে যারা নতুন মা হচ্ছেন তাদের বমি বমি ভাব ও বমি বেশি হতে পারে। কিছুদিন পরে সেরেও যায়। কিন্তু কারো কারো ক্ষেত্রে এই সমস্যাটা খুব তীব্র এবং দীর্ঘস্থায়ী হয়, যা গর্ভবতী মাকে অসুস্থ করে ফেলে। প্রতি ২০০ জন গর্ভবতীর মধ্যে ১ জন নারীর এ রকম সমস্যা হতে পারে। গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত বমি হলে যেসব সমস্যা হতে পারে–

কেটোসিস

অতিরিক্ত বমির কারণে গর্ভবতী মা ঠিকমত ও পরিমানমত শর্করা জাতীয় খাবার খেতে পারে না। এসময় প্রয়োজনীয় শক্তি উৎপাদনের জন্য শরীর দেহের মধ্যে জমাকৃত শর্করা ভাঙা কেটোসিস হতে পারে। এর ফলে রক্তের অম্লতা বেড়ে যায়, শরীরের অম্ল-ক্ষার এর ভারসাম্য নষ্ট হয়। এতে নানা সমস্যা শুরু হয়।

ওজন কমে যাওয়া

বসা থেকে উঠে দাঁড়ালে রক্তচাপ কমে যায়। এছাড়াও গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত বমি হওয়ার কারণে বিষণ্ণতায় ভোগা, শরীরের শক্তি লোপ পাওয়া, কাজে অনীহা বা মনোযোগ নষ্ট হতে পারে। তীব্র বমির কারণে কোনো খাবারই খাওয়া সম্ভব হয় না। অতিরিক্ত বমি করার কারণে শরীর পানিশূন্য হয়ে পড়ে এবং এতেও শরীরের ওজনও কমে যায়।

গভীর শিরায় রক্ত জমাট

অতিরিক্ত বমি থেকে পানিশূন্যতার কারনে শরীরের গভীর শিরাগুলোতে (হৃদপিণ্ড থেকে দূরবর্তী শিরা যেমন, পায়ের শিরা) রক্ত জমাট বেঁধে যেতে পারে। এটা শরীরের জন্য খুবই বিপজ্জনক।

বমির চিকিৎসায়

গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত বমির জন্য বিশেষ চিকিৎসার দরকার হয়। বমির জন্য যদি শরীর অতিরিক্ত পানি শুন্য হয়ে যায়, তাহলে হাসপাতালে ভর্তিরও প্রয়োজন পড়তে পারে। হাসপাতালে ভালোমত পরীক্ষা, নিরীক্ষা করে পানিশূন্যতার মাত্রা দেখা হয়, কেটোসিস হয়েছে কিনা সেটা দেখা হয় এবং সেই অনুযায়ী তাৎক্ষণিক চিকিৎসা দেয়া হয়।

গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত বমির কারণে সাধারণত বাচ্চার কোনো ক্ষতি হয় না। তবে অতিরিক্ত বমির কারণে যদি গর্ভাবস্থায় আপনার ওজন কমে যায়, তাহলে জন্মের সময় বাচ্চা দুর্বল ও ওজন কম হওয়ার একটা ঝুঁকি থাকে। তাই জোর করে হলেও খাবার খাওয়ার চেষ্টা করতে হবে। যে খাবার একটু হলেও ভালো লাগে অনন্ত সেটা বারবার খেতে হবে। বমির কথা বার বার ভাবা যাবে না। মন থেকে বমি নামক শব্দটা ভুলে থাকার চেষ্টা করতে হবে। মুখে একটু আদা চিবোলে বমির ভাব কমতে পারে। লেবুর পাতার গন্ধ নিলেও অনেকটা কাজ হয়। সর্বোপরি চেষ্টা থাকবে সুস্থ সবল থাকার।



মন্তব্য চালু নেই