কোন্দলে শোক দিবসে ঝরল দুই কর্মীর প্রাণ
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪০তম শাহাদতবার্ষিকীতে দলীয় কোন্দলে আওয়ামী লীগের দুই কর্মী নিহত হয়েছেন। জাতীয় শোক দিবসে শনিবার কুষ্টিয়া ও চাঁপাইনবাবগঞ্জে পৃথক ঘটনায় এই দুজন নিহত হন।
আমাদের চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, জেলার শিবগঞ্জ পৌরসভার দুই কাউন্সিলরের দ্বন্দ্বে রবিউল ইসলাম (৩৫) নামে এক যুবক খুন হয়েছেন।
শনিবার বিকাল সাড়ে ৩টায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। নিহত রবিউল ইসলাম শিবগঞ্জ পৌর এলাকার নজরুল ইসলামের ছেলে।
রবিউল ইসলামের স্ত্রী তাজরিন বেগম জানান, শিবগঞ্জ পৌর কাউন্সিলর ছালাম ও শফিকুল ইসলামের মধ্যে প্রভাব বিস্তারকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন ধরে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। শনিবার বেলা ১১টার দিকে উভয়পক্ষের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনাও ঘটে। রবিউল ইসলাম ছিলেন কাউন্সিলর ছালামের সমর্থক।
তাজরিন বেগম জানান, দুপুর ১টার দিকে তিনি রান্নার কাজে ব্যস্ত ছিলেন। এ সময় ঘরের পেছনে মারপিটের শব্দ শুনে তিনি গিয়ে দেখেন রবিউল ইসলাম রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছেন। আর কয়েকজন ব্যক্তি পাশের পাট ক্ষেতের ভেতর দিয়ে পালিয়ে যান। পরে আশেপাশের লোকজন রবিউলকে উদ্ধার করে শিবগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
তবে সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তাকে রামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় রবিউল ইসলাম বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে মারা যান।
এদিকে, আমাদের কুষ্টিয়া প্রতিনিধি জানান, কুষ্টিয়ায় আওয়ামী লীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের মধ্যে সংঘর্ষে সবুজ নামে এক যুবলীগকর্মী নিহত হয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শনিবার বেলা ১১টার দিকে কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগ মোহিনী মিল গেট থেকে জাতীয় শোক দিবসের র্যালি বের হয়। র্যালিটি শহর প্রদক্ষিণ করে মজমপুর গেটে এলাকায় অবস্থিত বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিতে যায়। এসময় শহর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোমিনুর রহমান মোমিজ ও জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন সবুজের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এ সময় কয়েক রাউন্ড গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে।
কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার (এসপি) প্রলয় চিসিম জানান, সংঘর্ষের সময় ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আহত তিনজনকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসাপাতালে ভর্তি করা হয়। এদের মধ্যে দুপুর একটার দিকে সবুজ নামে একজন অপারেশন টেবিলে মারা যান। শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে র্যাব-পুলিশ অবস্থান নিয়েছে।
শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান আতা দাবি করেছেন, নিহত সবুজ যুবলীগের কর্মী ছিলেন।
এ ঘটনার পর শহরে উত্তেজনা বিরাজ করছে। দোকানপাট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে। যেকোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি মোকাবেলায় শহরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
মন্তব্য চালু নেই