সাবধান! যে ১০ অভ্যাস থাকলে হয়ে যাবে আপনার কিডনির দফারফা

কিডনি আমাদের শরীরে কতটা গুরুতবপূর্ণ অঙ্গ তা আলাদ করে বলার কিছু নেই। এক কথায় আমাদের শরীরকে নোংরামুক্ত করে কিডনি। খাওয়া-দাওয়া বা দূষণ থেকে শরীরে জমা হওয়া নানা টক্সিন শরীর থেকে বার করে, রক্ত পরিষ্কার করে, নানা হরমোন ক্ষরণ করে এবং গুরুত্বপূর্ণ মিনারেল শরীরে শোষণ করে। বুঝতেই পারছেন, এটা ছাড়া আমাদের শরীর একটা আস্তকুড়ে পরিণত হবে। তবে দৈনন্দিন জীবনে আমরা ক্রমাগত এমন কিছু ভুল করে চলেছি যাতে কিডনি ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

দীর্ঘ দিন ধরে এটা চলতে থাকলেও বিশেষ একটা কিছু বোঝা যায় না। নিদেন পক্ষে ২০ শতাংশ ঠিকঠাক থাকলেও কিডনি তার কাজ করেই চলে। তবে যখন বোঝা যায়, তখন বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অনেক দেরি হয়ে যায়। তাই সময় থাকতে সজাগ হোন আর এই ১০ বদ অভ্যাস থাকতে তা অবিলম্বে ত্যাগ করুন।

১) জল কম খাওয়া: কিডনির কাজ শরীরকে পরিষ্কার রাখা। তার জন্য পরিমিত জলের প্রয়োজন। শরীরে জমা হওয়া টক্সিন এবং ক্ষতিকারক বর্জ্য জলের সাহায্যে ধুয়ে বের করে কিডনি। যদি জল কম খাওয়া হয়, তবে সেই টক্সিন জমা হতে থাকে কিডনিতে। যেটা একেবারেই কাম্য নয়।

২) খাবারে লবন বেশি খাওয়া: প্রত্যহ শরীর চালনার জন্য সোডিয়াম দরকার। তবে অনেকেরই লবন বেশি খাওয়ার অভ্যাস রয়েছে। যা রক্তচাপ বাড়িয়ে কিডনিতে চাপ ফেলে। দিনে ৫ গ্রামের বেশি লবন মানেই সেই চাপ আপনি ডেকে আনছেন।

৩) দীর্ঘ ক্ষণ মূত্রের বেগ চেপে রাখা: রাস্তায় ঘুরতে বেরিয়ে বা বাইরে কোথাও পর্যটনে গেলে পাবলিক টয়লেট ব্যবহারে অনেকেরই আপত্তি থাকে। তাই জল কম খেয়ে বা প্রচণ্ড বেগ চেপে রেখে হোটেলে বা বাড়িতে ফিরেই বাথরুমে যান। নিজের অজান্তেই কিডনির বড় ক্ষতি করে ফেলছেন। এর ফলে কিডনিতে পাথর তো হয়ই, সঙ্গে কিডনি বিকলও হতে পারে।

৪) চিনি বেশি খাওয়া: গবেষণায় দেখা গিয়েছে, দিনে ২ বারের বেশি চিনিযুক্ত পানীয় শরীরে গেলে মূত্রের সঙ্গে প্রয়োজনীয় প্রোটিন বেরিয়ে আসে। এটা কিডনি খারাপ হওয়ার প্রাথমিক লক্ষ্মণ।

৫) সুষম আহার না করা: ভিটামিন বা মিনারেলযুক্ত খাবার বা এক কথায় বলতে গেলে প্রচুর শাকসব্জি এবং ফল খাওয়ার ব্যাপারে অনেকের অনীহা থাকে। এটা কিডনিতে পাথর হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটা বাড়িয়ে দেয়।

৬) রেড মিটের ভক্ত: মাংস বলতেই বোঝেন লাল জাতিয় মাংস। এমন লোকের অভাব নেই। কিন্তু জানেন কি রেড মিট বেশি খেলে কিডনিতে মেটাবলিক লোড বেশি পড়ে। কারণ প্রচুর প্রোটিনযুক্ত খাবার শরীরে প্রচুর টক্সিনের জন্ম দেয়। যা পরিষ্কার করতে কিডনিকে নিরন্তর কাজ করে যেতে হয়। যাতে পরবর্তীকালে কিডনি ভয়ানক ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

৭) কম ঘুমোনো: ক্রমাগত যদি ঘুম কম হয়, তবে শরীরে নানা রোগে বাসা বাঁদে। কিডনি জমিত সমস্যাও এর মধ্যে রয়েছে। সারা দিন কাজ করার পর রাতে ঘুমোনোর সময় আপনার কিডনি তার ক্ষতি হওয়া টিস্যুগুলোকে মেরামত করে। ফলে রাতে ভালো ঘুমোন এবং কিডনিকেও বিশ্রাম নিতে দিন।

৮) অতিরিক্ত কফি: নুনের মতোই ক্যাফেনও রক্তচাপ বাড়িয়ে দেয়। সঙ্গে কিডনির চাপও বাড়ায়। দিনে বার বার কফি খাওয়ার অভ্যাস থাকলে এখনই তা ত্যাগ করুন।

৯) কথায় কথায় পেইন কিলার: সামান্য ব্যাথা পেলেন কি মাথাব্যাথা হল, সঙ্গে সঙ্গে পেইন কিলার চালান করলেন পেটে। অতিরিক্ত পেইন কিলার পরবর্তীকালে লিভার এবং কিডনি দুই শেষ করে।

১০) অতিরিক্ত মদ্যপান: কদাচিত বন্ধুদের আড্ডায় সামান্য মদ্যপান, বা মাসে ২ দিন ওয়াইন শরীরের ক্ষতি করে না। কিন্তু সেটাই যখন সপ্তাহে সপ্তাহে ফিরে আসে, তখনই তা চিন্তার বিষয়। কারণ অ্যালকোহল বা মদ্যপান শরীরে সরাসরি টক্সিনের প্রবেশ করায়। যা লিভার এবং কিডনির পক্ষে অত্যন্ত খারাপ।



মন্তব্য চালু নেই