এ বছরই পৌরসভা নির্বাচন নিয়ে ইসিতে তোড়জোড়

স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে তালিকা পাঠানোর পর চলতি বছরের শেষের দিকে সারাদেশের প্রায় ২৫০টি পৌরসভার নির্বাচন করতে তোড়জোড় শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন।

জুলাইয়ের শেষের স্থানীয় সরকার বিভাগ সারাদেশের নির্বাচন উপযোগী এবং সীমানা ও আইনি জটিলতায় নির্বাচন অনুপযোগী পৌরসভার আলাদা আলাদা তালিকা করে পাঠিয়েছে ইসিতে। এরপর থেকেই পৌরসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি চলছে বেশ জোরেশোরেই।

এর আগে গত ১৭ জুন পৌরসভার তালিকা চেয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয় ইসি। এ পরিপ্রেক্ষিতে স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ সচিব মো. খলিলুর রহমান কমিশন সচিবের কাছে পৌরসভার তালিকা পাঠান।

পাঠানো তালিকায় সর্বশেষ নির্বাচনের তারিখ, প্রথম সভার তারিখ ও মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ দিয়ে দেশের ৩২৩টি পৌরসভার তালিকা দিয়েছে সরকার। এরমধ্যে ২০১১ সালে জানুয়ারিতে ২৪০টি পৌরসভার ভোট হয়েছে। সীমানা ও আদালতের আদেশে ১৩টি পৌরসভার নির্বাচন তখন হতে পারে নি। এবার এসব পৌরসভায় নির্বাচন অনুষ্ঠানে কোনো বাধা নেই বলেও তালিকায় উল্লেখ করা হয়।

এছাড়া এখনো সীমানা নির্ধারণ কার্যক্রম চলমান ও মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া ৩০টি নির্বাচন অনুপযোগী পৌরসভার তালিকাও দিয়েছে স্থানীয় সরকার বিভাগ।

ইসি কর্মকর্তারা জানান, এতদিন স্থানীয় সরকারের তালিকার দিকে ইসি তাকিয়ে ছিল। স্থানীয় সরকারের তালিকা পাওয়ার পর কমিশন বৈঠকে পৌরসভা নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হয়। নির্বাচনের জন্য বাজেট চূড়ান্তকরণের কাজও প্রায় শেষ। কমিশন চলতি বছরের শেষ দিকে ২৫০টি পৌরসভার নির্বাচন করতে ইতিমধ্যে প্রস্তুতি শুরু করেছে। নভেম্বর-ডিসেম্বরের মধ্যে এর তফসিল ঘোষণা হতে পারে।

উল্লেখ্য, সর্বশেষ ২০১১ সালে জানুয়ারি মাসে পাঁচ দফায় ২৫০টির মত পৌরসভায় ভোট হয়। আইন অনুযায়ী, নির্বাচিত পৌরসভার মেয়াদ প্রথম সভা থেকে পরবর্তী পাঁচ বছর। আর নির্বাচন সম্পন্ন করতে হবে মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ থেকে পূর্ববর্তী ৯০ দিনের মধ্যে। অর্থাৎ সে অনুযায়ী ২০১৫ সালের নভেম্বর থেকে ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারির মধ্যেই ওই সব পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠানের বাধ্যবাধকতা আছে।

এ বিষয়ে ইসি সচিব মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার আগেই আমরা যথাসময়ে পৌরসভায় নির্বাচনের ব্যবস্থা নেব। মন্ত্রণালয় থেকে তালিকা পাঠানো হয়েছে। সব কিছু পর্যালোচনা কমিশন সভায় আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’

এদিকে দেশজুড়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। নতুন ভোটার তালিকা দিয়ে সম্ভব হবে না এবার পৌরসভার নির্বাচন। সেক্ষেত্রে বিদ্যমান ভোটার তালিকা দিয়েই করতে হবে ভোট।

এ বিষয়ে কমিশন বৈঠকে নির্বাচন কমিশনার আবদুল মোবারক বলেন, ‘২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে প্রায় ২‘শ অধিক পৌরসভার নির্বাচন করতে হবে। সে হিসাবে ডিসেম্বরের শেষ দিকে এসব পৌরসভার নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করতে হবে।’

তিনি জানান, জানুয়ারিতে খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হলে সে তালিকা দিয়ে নির্বাচন করা সম্ভব নয়। ৩১ জানুয়ারি চূড়ান্ত তালিকা হলেও নতুন ভোটাররা পৌরসভায়ও ভোট দিতে পারবে না।

এ বিষয়ে ইসি সচিব জানান, বিদ্যমান ভোটার তালিকা দিয়েই নির্বাচন করার বিধান রয়েছে। প্রয়োজনে যে এলাকায় নির্বাচন হবে সে এলাকায় হালনাগাদ কার্যক্রম পিছিয়ে দেয়া হতে পারে বলে জানান তিন।

এছাড়া মেয়াদোত্তীর্ণ পৌরসভা বা কিংবা কাছাকাছি সময়ে মেয়াদ শেষ হবে এমন পৌরসভার ভোটগ্রহণ দফায় দফায় না করে এক দিনে করার পরিকল্পনা ইসির আছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়।



মন্তব্য চালু নেই