৭০ ভাগ রেল ক্রসিংয়েই জনবল নেই : সুরঞ্জিত
ঝিনাইদহের কালিগঞ্জে রেলক্রসিংয়ে ট্রেনের ধাক্কায় ১১ বরযাত্রী নিহত হওয়ার ঘটনায় আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেছেন, ‘৭০ ভাগ রেল ক্রসিংয়েই জনবল নেই। তাই এই রেল দুর্ঘটনায় দায়সারাভাবে দুয়েকজনকে সাময়িক বরখাস্ত করে কোনো সমাধান হবে না। রেলে জনবল নিয়োগ করে দীর্ঘস্থায়ী সমাধান করতে হবে।’
শনিবার রাজধানীতে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে বঙ্গবন্ধু একাডেমি আয়োজিত চলমান রাজনীতি বিষয়ে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
সুরঞ্জিত বলেন, ‘ঈদে মানুষ নির্বিঘ্নে ও শান্তিতে ঘরে ফিরেছে। এখন আবার মানুষ রাজধানীতে ফিরছে, যা স্বাধীনতার পরবর্তীকালে একটি উদাহরণ। একেই বলে সুশাসন। তাই ভবিষ্যতে আরও সতর্কতার সঙ্গে রেল দুর্ঘটনা এড়াতে হবে। প্রয়োজনে আধুনিক রেল থেকে সরিয়ে এনে সাধারণ রেলে জনবল বাড়াতে হবে।’
আওয়ামী লীগের এই প্রবীণ নেতা বলেন, ‘আগস্ট মাস বাঙালির জন্য শোকের মাস। এই মাস সবচেয়ে বেশি ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তের মাস। বিশ্বের ইতিহাসে এমন কোথায় নেই, যা আগস্ট মাসে বাঙালির জীবনে ঘটেছে। এমনকি পলাশীর যুদ্ধের ঘাতকদেরও হার মানিয়েছে। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী, তা তারা আজও স্বীকার করতে চায় না।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপি বিগত দিনে ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তে সফল হলেও সেই দিন আজকে নেই। এই সরকারের যে অগ্রগতির ধারা অব্যাহত আছে তাতে শুধু পাঁচবছরই নয়, আরও ১৫ বছর ক্ষমতায় থাকতে চাই। কারণ বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে বাঙালির যে সর্বনাশ হয়েছে তা ঘোচাতে আরও সময় প্রয়োজন।’
বিএনপির আন্দোলন সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘একটি নির্বাচিত সরকারকে আন্দোলনের মাধ্যমে উৎখাত করা যায় না। তা সংবিধান পরিপন্থী। সাংবিধানিক সরকাকে উৎখাত করতে হলে নির্বাচন প্রয়োজন। আর আন্দোলন করবেন কাদের নিয়ে? জনগণ বুঝে গেছে আপনাদের দিয়ে আন্দোলন হবে না। আপনারা যতটুকু বলছেন, তা সম্পূর্ণই নেতাকর্মীদের মধ্যে উৎসাহ সৃষ্টির জন্য। আর আন্দোলনের নামে আতঙ্ক ও জঙ্গিবাদ সৃষ্টি করলে বিশ্বের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রগুলো যা করে আমরাও তাই করবো।’
তিনি বলেন, ‘জিয়াউর রহমান একটি অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশকে সম্প্রদায়িক বাংলাদেশে রূপান্তর করেছিলেন। তাই তাদের এই ষড়ডন্ত্র এখনও থেমে নেই। এ জন্য সকলকে ঐক্যবদ্ধ থেকে বঙ্গবন্ধুর অসাম্প্রদায়িক ও সকলের বাংলাদেশ গড়তে হবে।’
আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ফয়েজউদ্দিন মিয়া, রূপালী ব্যাংকের পরিচালক ব্যারিস্টার জাকির আহমেদ, বঙ্গবন্ধু একাডেমির মহাসচিব হুমায়ুন কবির মিজি প্রমুখ। সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের উপদেষ্টা হাজী মো. সেলিম।
উল্লেখ্য, শুক্রবার ভোরে কালীগঞ্জ উপজেলার বারোবাজার নামক স্থানে খুলনাগামী ‘সীমান্ত এক্সপ্রেস’ ট্রেনের ধাক্কায় বরযাত্রীবাহী বাসের শিশু ও নারীসহ ১১ জন নিহত হন। এতে কমপক্ষে অর্ধশত যাত্রী আহত হয়েছেন।
মন্তব্য চালু নেই