৬ মাসে সড়ক দুর্ঘটনা ৩ হাজারেরও অধিক
চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন মাস পর্যন্ত সড়ক দুর্ঘটনা হয়েছে ৩ হাজার ২৫৬টি। এতে ১৪ হাজার ৩১ জন যাত্রী, চালক ও পরিবহন শ্রমিক দুর্ঘটনার শিকার হন। যেখানে নিহত হয়েছেন ৩ হাজার ৭৭০ জন। আহত হয়েছেন ১০ হাজার ২৭৮ জন। এর মধ্যে হাত-পা বা অন্য কোনো অঙ্গ হারিয়ে চিরতরে পঙ্গু হয়েছেন ৯২৩ জন।
শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির এক মত বিনিময় সভায় এ প্রতিবেদন প্রকাশ করে সংগঠনটি।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, গত ছয় মাসে সড়ক দুর্ঘটনায় ৮১২টি বাস, ১ হাজার ২২টি ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান, ৩৪২টি হিউম্যান হলার দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। এছাড়া ১৩৫টি কার-জিপ-মাইক্রোবাস, ৫১৪টি অটোরিকশা, ৮৪৯টি মোটরসাইকেল, ৩১৫টি ব্যাটারি চালিত রিকশা, ৫১৩টি নসিমন-করিমন দুর্ঘটনার কবলে পরে। আর এতে দুর্ঘটনার শিকার হন ৩৬১ জন ছাত্র, ৭০ জন শিক্ষক, ২৬ জন সাংবাদিক, ২৭ জন ডাক্তার, ১৭ জন আইনজীবী, ১৭ জন ইঞ্জিনিয়ার, ১৪৮ জন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এছাড়া ১০৮ জন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, ৭৭ জন সরকারি কর্মকর্তা, ১ হাজার ১৫৯ জন নারী ও ৬৯৮টি শিশু।
প্রতিবেদনে জানানো হয়, এসব দুর্ঘটনায় বেশিরভাগ পরিবারই একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে একেবারে নিঃস্ব হয়ে গেছে। আর এ দুর্ঘটনায় মামলা হয়েছে
এক হাজারটি। কিন্তু মামলায় উল্লেখ করা হয়, ১ হাজার ২০ জন নিহত, ৬৮৯ জন আহত এবং ৪৭ জন পঙ্গুত্ব বরণ করেছে।
প্রতিবেদনে কী কারণে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে তা উল্লেখ করেছে সংগঠনটি। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- ফুটপাত দখল, ওভারটেকিং-ওভার স্পিড-ওভারলোড, হেলপার দিয়ে গাড়ি চালানো, রাস্তা-ঘাটের ত্রুটি, গাড়ির ত্রুটি, যাত্রীদের অসতর্কতা, চালকের অদক্ষতা, মোবাইলে কথা বলে ড্রাইভিং করা, ত্রুটিপূর্ণ ট্রাফিক আইন, গুরুত্বপূর্ণ সড়কের ক্রসিংয়ে জেব্রা ক্রসিং না থাকা এবং তা না মানা ইত্যাদি।
সড়ক দুর্ঘটনারোধে কিছু পরামর্শ তুলে ধরা হয়েছে প্রতিবেদনে।
তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে: ট্রাফিক আইন ও মোটরযান আইন সম্পর্কে স্কুল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের, মসজিদ-মন্দির-গির্জায় প্রচার-প্রচারণা করতে হবে। টিভি চ্যানেল ও সংবাদপত্রে প্রচার- প্রচারণা। জাতীয় ও আঞ্চলিক মহা সড়কের পাশে হাট-বাজার অপসারণ করা ও ফুটপাত দখলমুক্ত করা। ট্রাফিক চিহ্ন স্থাপন করা। চালকদের প্রফেশনাল ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করা ইত্যাদি।
সংগঠনটি এ প্রতিবেদন তুলে ধরেছে দেশের জাতীয়-স্থানীয় দৈনিক সংবাদপত্র ও টেলিভিশন চ্যানেলে প্রচারিত সড়ক দুর্ঘটনার সংবাদ মনিটরিং করে।
মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন- সংগঠনের মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী, অর্থ সম্পাদক কাজী মাহমুদুল হাসান, সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন রুমি, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ড. শামীমুজ্জামান, নিরাপদ নৌপথ বাস্তবায়ন আন্দোলনের আহ্বায়ক আমিনুর রসুল বাবুল প্রমুখ।
মন্তব্য চালু নেই