৬ দল নিয়ে ফখরুলের ডিনার : রাজনৈতিক মহলে কৌতূহল

২০ দলীয় জোটের মধ্যে ১২টি দলকে বাদ দিয়ে মাত্র ৬টি দলের নেতাদের সঙ্গে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিশেষ ডিনারে অংশ নিয়েছেন। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ ছবি প্রকাশের পর থেকেই খোদ জোটের অন্যান্য নেতাদের মাঝেও কৌতূহলের সৃষ্টি হয়েছে। অনেকে এ নিয়ে সন্দেহ পোষণ করছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত শুক্রবার (১০ ফেব্রুয়ারি) জোটের মাত্র ৬টি শরিক দলকে নিয়ে হোটেল সোনারগাঁয়ে বিশেষ ডিনার করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। জোটের বাকি শরিকদের না জানিয়ে ফখরুলের এমন ডিনার পার্টি নিয়ে অনেকে এখনও অন্ধকারে রয়েছেন বলে জানিয়েছেন।

বিশেষ এই ডিনারে অংশ না নেয়া জোটের এক শীর্ষ নেতা বলেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের জন্মদিনকে কেন্দ্র করে ডিনার করা হয়েছে বলে শুনেছি। তবে ভেতরে অন্য কোনো কারণ রয়েছে কিনা জানি না।

প্রসঙ্গত, ২৬ জানুয়ারি ছিল বিএনপি মহাসচিবের জন্মদিন। অথচ ১৫ দিন পর জন্মদিন উপলক্ষে ডিনার পার্টি! তাও আবার ১২টি দলকে বাদ দিয়েই! এ নিয়ে মুখরোচক গল্পও ছড়াচ্ছেন কেউ কেউ।

এনপিপি চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদের আয়োজনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুলের ইসলাম ছাড়াও বিশেষ ডিনারে অংশ নিয়েছিলেন, জাতীয় পার্টি (জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, লেবার পার্টি চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, ন্যাপ ভাসানী চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আজহারুল ইসলাম, ডিএল সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন আহমেদ মনি, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক কমরেড সাইদ আহমেদ।

এ বিষয়ে ডিনারে অংশ না নেয়া জোটের আরেক শীর্ষ নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, এ ধরনের সামাজিক অনুষ্ঠান তো হতেই পারে। তবে, জোটের সব দলকে উপস্থিত করা উচিত ছিল। তা না হলে বিএনপি মহাসচিব বিতর্কিত হতে পারেন। কারণ, এখন রাজনীতিতে নানা ধরনের সমালোচনা চলছে। আর উপস্থিত অনেকেই বিতর্কিত। রাতারাতি অন্য দলের সদস্যকে একটি দলের চেয়ারম্যানও বানানো হয়েছে তেমন একজন ছিলেন। আবার জামায়াত সংশ্লিষ্ট দলও ছিল। বিএনপি মহাসচিবের উচিত ছিল সব কিছু নিশ্চিত হয়ে পরে যাওয়া।

আপনি ডিনারে অংশ নিয়েছেন, বিশেষ কোনো উপলক্ষ ছিল কি? জানতে চাইলে ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান এই প্রতিবেদককে বলেন, তা‌তে কী? মানুষের ব্যাক্তিগত জীবন অা‌ছে না। কোনো উপলক্ষ ছিল না।

শেখ শওকত হোসেন নিলু জোট থেকে বের হয়ে গেলে ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদকে চেয়ারম্যান করে এনপিপি একটি অংশ জোটে থেকে যায়। শেখ আনোয়ারুল হকের নেতৃত্বাধীন ন্যাপ ভাসানী জোট থেকে বরে হয়ে গেলে কল্যাণ পার্টির গাইবান্ধা জেলার সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট আজহারুল ইসলামকে চেয়ারম্যান বানিয়ে রাতারাতি ন্যাপ ভাসানীর জন্ম দিয়ে জোটে রাখা হয়। সাম্যবাদী দল ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পর জোটের অন্তর্ভূক্ত হয়। নিজেদের দিলিপ বরুয়ার সাম্যবাদী দলের নেতা দাবি করলেও প্রকৃত অর্থে কমরেড সাইদ আহমেদ সেই দলের কোনো গুরুত্বপূর্ণ নেতা ছিলেন না।

এদিকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে বাদ দিয়েই বিএনপি ও আওয়ামী লীগ সমঝোতা করেছে বলে অভিযোগ করেছেন ন্যাশনালিস্ট ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টে (এনডিএফ) আহ্বায়ক ও ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) চেয়ারম্যান শেখ শওকত হোসেন নিলু।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিষয়টি ভালো করেই জানেন বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। সম্প্রতি জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে এক সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুলের প্রতি এমন সন্দেহ পোষণ করেছিলেন নিলু। এছাড়াও রাজনৈতিক মহলে মির্জা ফখরুল ভদ্রজন হিসেবে একটা শ্রেণির কাছে পরিচিত হলেও সসালোচনাও কম নেই তার বিরুদ্ধে।



মন্তব্য চালু নেই