৬ জঙ্গিকে হন্যে হয়ে খুঁজছে পুলিশ
আলোচিত গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় হামলায় জড়িত ছয় জঙ্গিকে হন্যে হয়ে খুঁজছে পুলিশ। এদের সবাই দেশ-বিদেশে পালিয়ে আছে। তবে তাদের শিগগিরই আইনের আওতায় আনতে আশাবাদী পুলিশ।
গুলশানের হলি আর্টিজানে হামলার পর জঙ্গি উত্থান ঠেকাতে জিরো টলারেন্স অবস্থান নিয়েছিল পুলিশ। আর এতে সফল বাহিনীটি। ওই হামলার পর পুলিশ যেসব জঙ্গিকে চিহ্নিত করেছিল তাদের অনেকেই বিভিন্ন অভিযানে নিহত ও গ্রেপ্তার হয়েছে।
জানা গেছে, চিহ্নিত ছয় জঙ্গি পলাতক রয়েছেন। এদের মধ্যে কেউ কেউ দেশের বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপন করেছে। আবার কেউ বিদেশে পালিয়ে গেছে। দেশে আত্মগোপনরত জঙ্গিদের ইতোমধ্যে খোঁজা শুরু করেছে পুলিশ। আর বিদেশে অবস্থানরত জঙ্গিদের ওপর নজরদারি করা হচ্ছে। এ জন্য যেসব আন্তর্জাতিক গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে বাংলাদেশের সুসম্পর্ক রয়েছে সেসব সংস্থার সহযোগিতা নেওয়া হচ্ছে।
কাউন্টার টেররিজম সূত্রে জানা গেছে, রাশেদ ওরফে র্যাশ, ছোট মিজান, বাশারুজ্জামান ওরফে চকলেট বাশার, সোহেল মাহফুজ ওরফে হাতকাটা মাহফুজ, মাইনুল ইসলাম মুসা ও সিরিয়ায় অবস্থানরত ডাক্তার রোকন উদ্দীন খন্দকার রোকন- এই ছয় জঙ্গি এখনও পলাতক। তাদের কারো কারো অবস্থান জানা গেলেও তারা প্রতিনিয়ত জায়গা বদল করছে। আর বিদেশে যে আছে তার ওপর আন্তর্জাতিক গোয়েন্দা সংস্থা নজরদারি করছে।
পুলিশের বিশেষ ইউনিট কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম বলেন, গুলশান হামলার প্রাথমিক অনুসন্ধানে আমরা জড়িত সন্দেহে ২০ থেকে ২২ জনকে সন্দেহ করেছিলাম। পরে তদন্তে আরো কয়েকজনের নাম যুক্ত হয়েছে। ২৫ জঙ্গি এ ঘটনায় প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত আছে বলে আমাদের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে। এদের মধ্যে পাঁচজন গুলশান হামলার দিনই নিহত হয়েছে। পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন অভিযানে আটজন নিহত হয়েছে। ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
তিনি বলেন, এ ঘটনায় ছয়জন পলাতক রয়েছে। তবে আশা করছি দ্রুত তাদের আমরা আইনের আওতায় আনতে পারব।
মনিরুল ইসলাম জানান, যারা পলাতক রয়েছে গুলশান হামলায় তাদের প্রত্যেকেরই ভূমিকা রয়েছে। এদের মধ্যে চকলেট বাশার ওই বাসায় যাতায়াত করত এবং সব অস্ত্র তার দ্বারা সংগ্রহ করা হয়েছে। পাশাপাশি সে ওই হামলার অন্যতম পরিকল্পনাকারী। সেহেল মাহফুজ হামলার বিস্ফোরক তৈরি করে দিয়েছিল। চকলেট জঙ্গি অর্থায়নে দুবাই থেকে আসা ১৪ লাখ টাকা সংগ্রহ করেছিল। মুছা গুলশান হামলার আগে জঙ্গিদের সাথে বসুন্ধরার অপারেশনাল হাউজে ছিল। ছোট মিজান হামলার অন্যতম অর্থ সরবরাহকারী।
অপরদিকে গুলশানে হামলা হওয়ার আগে নব্য জেএমবির তহবিলে টাকা দেয় ডা. রোকন। পরে তিনি স্বপরিবারে সিরিয়া পালিয়ে যান।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কাউন্টার টেররিজমের এক কর্মকর্তা জানান, আমরা যাদের গ্রেপ্তার করেছি তারা জিজ্ঞাসাবাদে অনেকেরই নাম নিয়েছে। গুলশান হামলায় জড়িত সন্দেহে আমরা এখন পর্যন্ত ২৩ থেকে ২৫ জনের তালিকা তৈরি করেছি। তবে এ তালিকা আরো বড় হতে পারে। জঙ্গিদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যগুলো আমরা যাচাই করছি। এ সময় ওই হামলায় জড়িতের সংখ্যা বাড়তে পারে।
মন্তব্য চালু নেই