৬০ বছর পর হিজড়া থেকে নারী!

অবশেষে ৬০ বছর বয়সে এসে নিজের পুরুষ লিঙ্গ পরিচয় ত্যাগ করে নারীতে রুপান্তরিত হলেন সাবেক মার্কিন অলিম্পিক জিমন্যাস্ট ব্রুস জেনার। সোমবার ব্রুস কেইটলিন জেনার নামে নারী হিসাবে আত্মপ্রকাশ করেন ব্রুস। এ উপলক্ষে বিখ্যাত ভ্যানিটি ফেয়ার ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদ পাতায় হলিউড নায়িকাদের মতো পোজে তার একটি ছবি ছাপা হয় যা বিশ্বব্যাপী ব্যাপক সাড়া ফেলে।

ভ্যানিটি ফেয়ার গত সোমবার কেটলিন জেনারের ছবি সম্বলিত প্রচ্ছদটি টুইটারে পোস্ট করার পর এ নিয়ে প্রায় পুরো ওয়েব দুনিয়া মেতে ওঠে। কেটলিন জেনার তার টুইটার অ্যাকাউন্ট ওপেন করে প্রথম টুইটটি করার পর মাত্র ৪ ঘন্টায় তার ফলোয়ার সংখ্যা ১০ লাখে পৌঁছায়। এর মধ্য দিয়ে তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার রেকর্ডটিও ভঙ্গ করেন। টুইটারে ১০ লাখ ফলোয়ার পেতে ওবামার সময় লেগেছিল ৫ ঘন্টা।

ওবামাও এক টুইটার বার্তায় কেটলিনকে তার ব্যাতিক্রমী জীবন সংগ্রামের গল্প বিশ্বের সবার সঙ্গে শেয়ার করার মতো সাহস দেখানোয় অভিনন্দন জানান।

টুইটার কর্তৃপক্ষও বিশ্বের এলজিবিটি সম্প্রদায়ের (সমকামি, উভলিঙ্গ ও হিজড়া সম্প্রদায়) সকল সদস্যকে তাদের জীবন সংগ্রামের গল্প বিশ্বের কাছে তুলে ধরার আবেদন জানিয়েছে।হিজড়া থেকে নারী: জনপ্রিয়তায় ওবামাকেও ছাড়িয়ে!

ওবামার সিনিয়র উপদেষ্টা ভ্যালেরি জ্যারেটও কেইটলিনকে অভিনন্দন জানান। অথচ হোয়াইট হাউজের কাউন্সিল অন ওমেন অ্যান্ড গার্লস এর সভাপতি এই ভ্যালেরি জ্যারেটই আগে সমকামি, উভলিঙ্গ ও হিজড়াদের সার্জারির মাধ্যমে লিঙ্গ পরিবর্তনের ঘোর বিরোধী ছিলেন।
মাত্র একমাস আগে হোয়াইট হাউজ থেকে প্রকাশিত জ্যারেট স্বাক্ষরিত একটি বিবৃতিতে বলা হয়, ‘অসংখ্য বৈজ্ঞানিক তথ্য-উপাত্ত থেকে এটা এখন প্রমাণিত যে, সার্জারির মাধ্যমে লিঙ্গ পরিবর্তন চিকিৎসাগত ও নৈতিক কোনোভাবেই যথাযথ নয়।

আর বিশেষ করে বয়সে তরুণদের উপর এর মারাত্মক ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে। বিবৃতিতে সার্জারির মাধ্যমে লিঙ্গ পরিবর্তন বন্ধে ওবামা প্রশাসনের পুর্ণ সমর্থন রয়েছে বলেও জানানো হয়।

ফলে ব্রুস জেনার যা করে দেখালেন তা খুবই গুরুত্বপুর্ণ ঐতিহাসিক ঘটনা। তার এই পদক্ষেপের ফলে বহুকাল ধরে মানব সম্প্রদায়ের চরম অবহেলিত একটি গোষ্ঠী এখন পুরো বিশ্ববাসীর মনোযোগ কাড়তে সক্ষম হল। তাও সম্ভব হয়েছে ব্রুস জেনার আগে থেকে জনপ্রিয় ছিলেন বলেই। এ থেকে অবহেলিত সম্প্রদায়ের দুঃখ-কষ্ট ও জীবন সংগ্রামের কথা শোনার ক্ষেত্রে আমাদের ব্যর্থতাও ফুটে ওঠে। কারণ তাদের সম্প্রদায়েরই একজনকে বিশ্ববাসীর কাছে নিজেদের জীবন সংগ্রাম ও দুঃখ কষ্টের কথা তুলে ধরতে হল।

সূত্র:আইটি ওয়ার্ল্ড



মন্তব্য চালু নেই