৬ষ্ঠ শ্রেণির বইতে সপ্তমের অধ্যায়, শিক্ষার্থীরা বিপাকে

সবেমাত্র পঞ্চম শ্রেণি পাস করেছে সে। শুরু হলো নতুন বছর। সেই সঙ্গে নতুন স্কুলে ভর্তি হয়েছে। বছরের প্রথম দিনে বই পেয়েছে। নতুন স্কুল, নতুন ক্লাস, সেই সঙ্গে নতুন বই। আনন্দও হয়েছিল তার।

বলছিলাম কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার সদরপুর সিদ্দিকীয়া দাখিল মাদ্রাসার ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী আরিফা খাতুনের কথা।

দাখিল পর্যায়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য বরাদ্দকৃত সকল বই পেয়েছে সে। সব ঠিক থাকলেও ইংরেজি গ্রামারটি পুরোটাই উল্টা-পাল্টা। কারণ শুরুতেই তো ভুল!

বইয়ের মলাটের উপরে লেখা রয়েছে- ‘English Grammar And Composition’ Dakhil, Class Six. লেখাতে কোথাও ভুল নেই। বইয়ের মলাটও বেশ আকর্ষণীয়। তবে মলাট উল্টালেই ‘English Grammar And Composition’ Dakhil, Class 7.

বইটি সম্পাদনা করেছেন মো. জহুরুল ইসলাম। প্রকাশনা জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড। আরিফা খাতুনের মতো হাজারও শিক্ষার্থী এমন বিভ্রান্তির মধ্যে পড়েছে এবার। কেউ পেয়েছে ভুলে ভরা নতুন বই। আবার কারো বইটা উল্টা-পাল্টা।

সদরপুর সিদ্দিকীয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার শেখ মহিউদ্দিন আহম্মেদ জানান, মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধিকাংশ ৬ষ্ঠ শ্রেণির ইংরেজি গ্রামার বইতে ৭ম শ্রেণির অধ্যায়। মলাটে রয়েছে ৬ষ্ঠ শ্রেণির বই কিন্তু ভেতরে সেটা ৭ম শ্রেণির। এ নিয়ে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা পড়েছে বিপাকে।

তিনি জানান, ৬ষ্ঠ শ্রেণির যে সকল শিক্ষার্থীর বইতে এমন ভুল রয়েছে, তারা বই ফেরত দিচ্ছে। তবে পর্যাপ্ত সঠিক বই না থাকায় তাৎক্ষণিক পাল্টে দিতে পারছেন না।

মিরপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জুলফিকার হায়দার বলেন, ‘এ রকম ভুল অনেক রয়েছে। আমাদের কাছে জানালে আমরা তা পরিবর্তন করে সঠিক বই দিয়ে দিচ্ছি।’

কুষ্টিয়া জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এস এম ছায়েদুর রহমান জানান, এ ধরনের ভুলের জন্য দায়ী প্রেসের কর্মচারীরা। সাধারণত তারা বেশিরভাগই কম লেখাপড়া জানা। অল্প সময়ে বেশি বই ডেলিভারি দেওয়ার জন্য তাড়াহুড়ো করায় এ ধরনের ভুল হয়েছে। তাদের দায়িত্ব অবহেলার জন্য শিক্ষার্থীরা বিপাকে পড়ছে।

তিনি বলেন, ‘কোনো শিক্ষার্থী স্কুলে বই ফেরত দিলে তাদের সঠিক বই দেওয়া হবে। যদি স্কুলে বই না থাকে তাহলে প্রতিষ্ঠান থেকে আমাদের জানালে আমরা বই পৌঁছে দেব।’

এ ব্যাপারে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠপুস্তক বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর নারায়ণ চন্দ্র সাহার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তার একান্ত সহকারী মোসাদ্দেক হোসেন বলেন, এগুলো যারা বই মুদ্রণ করে, তাদের অদক্ষতার কারণে হয়েছে। তারা একত্রে একাধিক বই মুদ্রণ করে থাকে, তাই এ ধরনের ভুল হয়েছে। বিষয়টা কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।



মন্তব্য চালু নেই