৫ ফেব্রুয়ারি থেকে টানা অবস্থান করবে গণজাগরণ মঞ্চ
সহিংসতার প্রতিবাদে আগামী ৫ ফেব্রুয়ারি থেকে টানা অবস্থানের ঘোষণা দিয়েছেন গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ডা. ইমরান এইচ সরকার।
এ ছাড়া আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি দেশব্যাপী ‘মুক্তির অভিযাত্রা’ কর্মসূচি পালনেরও ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার বিকেলে শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে ‘সন্ত্রাস বিরোধী গণ অবস্থান ও সমাবেশ’ কর্মসূচি পালনকালে এ ঘোষণা দেন তিনি।
ইমরান এইচ সরকার বলেন, আগামী শুক্রবার মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সকল শক্তিকে নিয়ে প্রতিবাদী কর্মসূচি পালন করবেন। সবাইকে সন্ত্রাসীদের থাবা থেকে রক্ষার জন্য এ কর্মসূচী পালন করা হবে। আন্দোলনের নামে যে সহিংসতা চলছে তা কোন আন্দোলন হতে পারে না। এটি গণতন্ত্রের ভাষা নয়। রাজনীতি এবং গণতন্ত্রের নামে দেশে অপরাজনীতি চলছে।
তিনি বলেন, গণজাগরণ মঞ্চের ছয় দফার মধ্যে অন্যতম প্রধান একটি দাবি ইতোমধ্যে পূরণ হয়েছে। অবিলম্বে কামরুজ্জামানের ফাঁসির রায় কার্যকরসহ জামায়াতের রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি জানান তিনি।
সিপিবির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, বলা হয়েছে সাত দিনের মধ্যে সব সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে। অথচ একের পর এক দিন অতিবাহিত হচ্ছে কিন্তু কোন সমাধানতো দেখছিই না বরং দিনে দিনে বাড়ছে মৃত্যুর মিছিল। এসবের মূল কারিগর জামায়াত শিবিরের ক্যাডাররা। আজকে দেশের আগুন নেভানো সম্ভব না। আগুন নেভাতে জামায়াত শিবির নামের সংগঠনকে আগুনে পুড়ে ফেলতে হবে।
তিনি বলেন, জামায়াত শিবিরের এসব অপকর্মের নেতৃত্ব দিচ্ছে বিএনপি। তারা জামায়াত শিবিরসহ দেশের নিষিদ্ধ সকল সংগঠনগুলোকে নিয়ে জোট বেধেছে এবং আন্দোলনের নামে মানুষ পুড়ে মারছে। এসবের বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।
অর্থনীতিবীদ আবুল বারকাত বলেন, শিগগির জামায়াত-শিবিরের অর্থনীতির উৎস তুলে ধরে ইসলামী ব্যাংকসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠান বন্ধ করতে হবে। সময়ক্ষেপণ না করে অতিদ্রুতই এবং ২৬ মার্চের আগে সব যুদ্ধাপরাধীর রায় কার্যকর করতে হবে।
জামায়াত-শিবিরের রাজনীতিসহ ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ, জঙ্গীবাদের অর্থায়নের কঠোর আঘাত, গ্রাম-পাড়া-মহল্লার মুক্তিযুদ্ধেও স্বপক্ষের শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করার দাবি জানান। এছাড়াও তিনি দেশের মন্ত্রী-এমপিদের বিদেশ ভ্রমণ বাদ দিয়ে নিজ নিজ এলাকায় গিয়ে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন করতে নির্দেশ দেওয়ার পরামর্শ দেন।’
মানবাধিকার কর্মী খুশী কবির বলেন, দেশে আজ রাজনীতির নামে মানুষ হত্যা চলছে। এ ধরনের রাজনীতিকে ধিক্কার জানাই। ঘৃণা জানাই। আমরা ধ্বংসের রাজনীতি বুঝি না। দেশের সব স্তরের মানুষকে এ রাজনীতির প্রতিবাদ জানাতে হবে।’
সাংবাদিক আবু সাঈদ খান বলেন, দেশে একটি যুদ্ধ চলছে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও জাতীয়তাবাদী বিএনপি। আওয়ামী লীগ নিজেকে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি দাবি করছে। এ সংক্রান্ত কিছু কাজও করেছেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কার্য শুরু করেছে। এটিকে স্বাগত জানাই।
কিন্তু যুদ্ধাপরাধীদের সংগঠন জামায়াতকে নিষিদ্ধ করছে না। ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য যতটুকু করা দরকার ততটুকুই করছে সরকার। এসব বাদ দিয়ে দেশের প্রতি আন্তরিক হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন, সাংবাদিক অজয় দাস গুপ্ত, ভাস্কর রাশা, অধ্যাপক মেসবাহ কামাল, মানবাধিকার সংগঠক রোকেয়া কবির। এসময় গণজাগরণ মঞ্চের কয়েক’শ নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
সমাবেশে ছাত্র ইউনিয়ন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, মুক্তিযোদ্ধা সাংস্কৃতিক সংসদ, কর্মজীবী নারী, আদিবাসী ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ সংহতি জানান।
মন্তব্য চালু নেই